যৌতুকে জন্য শিকলে বাঁধা সেই তানিয়ার স্বামীসহ ৩ জনের বিরুদ্ধে মামলা
ঝিনাইদহ প্রতিনিধি:
ঝিনাইদহের কালীগঞ্জে যৌতুকের দাবিতে স্ত্রীকে দুই দিন ধরে শিকলে বেঁধে ঘরে বন্দি করে নির্যাতন চালানোর অভিযোগে স্বামীসহ তিনজনের বিরুদ্ধে থানায় মামলা হয়েছে।
অভিযুক্ত সোহেল রানা (৩০) পেশায় ট্রাক চালক। তার মা মাহমুদা বেগম এবং বোন রুমি বেগমকেও মামলায় আসামি করা হয়েছে।
সোহেল রানার আট বছরের সংসারে দুই মেয়ে রয়েছে। তাদের একজনের বয়স পাঁচ বছর ও অন্যজনের বয়স তিন মাস।
নির্যাতিত গৃহবধূ কালীগঞ্জের বড়োদিহী গ্রামের সোহেল রানার স্ত্রী। মঙ্গলবার রাতে অভিযোগ পেয়ে গৃহবধূ ও তার বাবাকে উদ্ধার করে যশোর জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করেছে পুলিশ।
তানিয়ার বাবা রিপন গাজি জানান, তানিয়ার তিন মাসের শিশুসহ দুইটি কন্যা সন্তান রয়েছে। বিয়ের পর থেকে সোহেল তার মেয়েকে প্রায়ই যৌতুকের জন্য মারধর করতো। যে কারণে মেয়ের ভালো চেয়ে কয়েক দফায় বেশ কিছু টাকাও দেওয়া হয়েছে।
কিন্তু যৌতুক লোভী জামাই ও তার পরিবারের লোকজনের আচরণের কোনো পরিবর্তন হয়নি। বরং তানিয়াকে আবার টাকা আনতে বলে। এতে তানিয়া রাজি না হওয়ায় সোমবার সকালে তাকে মারধর করে পায়ে শিকল দিয়ে তালাবদ্ধ করে রাখে। খবর পেয়ে পরের দিন সকালে জামাই বাড়ি গেলে তাকেও (গাজি) মারধর করে জামাইসহ বাড়ির লোকজন।
তানিয়া খাতুন বলেন, ‘বিয়ের পর থেকেই যৌতুকের জন্য স্বামীসহ তার পরিবারের লোকজন আমার ওপর নির্যাতন চালিয়ে আসছে। বাবা গরীব মানুষ হলেও মেয়ের সুখের জন্য কয়েক দফা টাকা দিয়েছেন। তারপরও টাকার জন্য নির্যাতন বন্ধ করেনি তারা। সোমবার আমার শাশুড়ি, স্বামী ও ননদ মিলে মারধর করে পায়ে শিকল দিয়ে বেঁধে রাখে। আমার বাবা এসে নির্যাতনের কারণ জানতে চাইলে তাকেও মারধর করে।’
কালীগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শহিদুল ইসলাম কালের কণ্ঠকে বলেন, ওই গৃহবধূর পায়ে শিকল বেঁধে আটকে রাখার খবর শুনে ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠিয়ে তাদের অসুস্থ অবস্থায় উদ্ধার করে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। অভিযুক্তদের আটকের জন্য অভিযান চলছে।