রংপুরে সরকার নির্ধারিত দামে ডিম বিক্রি শুরু, কমেনি খুচরায়

প্রকাশিত: ৫:৫৩ অপরাহ্ণ, অক্টোবর ২০, ২০২৪

রংপুর প্রতিনিধি:

রংপুরে সরকার নির্ধারিত দামে ডিম বিক্রি শুরু হয়েছে। রোববার (২০ অক্টোবর) দুপুরে রংপুর জেলা প্রশাসন ও মেট্রোপলিটন পুলিশের যৌথ উদ্যোগে এই ডিম বিক্রি কার্যক্রমের উদ্বোধন করেন জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ রবিউল ফয়সাল।
রংপুর জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর, জেলা প্রাণিসম্পদ দপ্তর, রংপুর কৃষি বিপণন অধিদপ্তর এবং রংপুর সিভিল সার্জন কার্যালয়ের সহযোগিতায় প্রতিদিন দুপুর ২টা থেকে বিকেল ৫টা পর্যন্ত রংপুর সিভিল সার্জনের কার্যালয়ের গেট সংলগ্ন-অস্থায়ী ডিম বিক্রয়কেন্দ্রে সরকার নির্ধারিত ১১ টাকা ৮৭ পয়সা মূল্যে প্রতিটি ডিম বিক্রি করা হবে।

ডিমের দাম স্বাভাবিক না হওয়া পর্যন্ত শুক্রবার ছাড়া সপ্তাহে ছয়দিন এই বিক্রি কার্যক্রম অব্যাহত থাকবে বলে জানিয়েছে জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ রবিউল ফয়সাল। এই কার্যক্রমের আওতায় প্রতিদিন ১০ হাজার ডিম বিক্রি করা হবে।
এদিকে, প্রশাসনের উদ্যোগে সরকার নির্ধারিত দামে ডিম বিক্রি শুরু হলেও বাজারে ও পাড়া-মহল্লার দোকানগুলোতে এখনো দাম কমেনি ডিমের। এখনো কোথাও কোথাও পাইকারি বাজারে ৫২ থেকে ৫৪ টাকা আর খুচরা বাজারে হালিতে ৬০ টাকা দরে ডিমি বিক্রি করা হচ্ছে।

নগরীর শাপলা চত্বরে খান বহুমুখী মার্কেটে দেখা গেছে, খুচরায় একেকটি ডিম ১৫ টাকা দরে বিক্রি করছেন বিক্রেতারা। একই চিত্র রংপুর নগরীর অলিগলিতে থাকা দোকানগুলোতে।
সিটি বাজোরে কামরুল হাসান নামে ক্রেতার সঙ্গে কথা হলে তিনি বলেন, অতি দ্রুত সরকার পদক্ষেপ গ্রহণ না করলে ডিমের দাম আরও বাড়ছে। কারণ বর্তমান অন্তর্র্বতী সরকার বিগত সরকারের রেখে যাওয়া সিন্ডিকেট ভাঙতে পারছেন না। এ কারণে ব্যবসায়ীরা তাদের নিয়ন্ত্রণে বাজার সিন্ডিকেট অব্যাহত রেখেছে। এভাবে চলতে থাকলে মধ্যবিত্ত ও নিম্ন আয়ের মানুষদের নাভিশ্বাস অবস্থা চলতেই থাকবে।

সাধারণ ক্রেতাদের প্রত্যাশা ছিল আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর পণ্যের লাগামছাড়া দাম কমবে। কিন্তু অন্তর্র্বতী সরকার ক্ষমতায় আসার দুই মাস পেরিয়ে গেলেও বাজারে সব পণ্যের দাম আকাশচুম্বী। বিশেষ করে ডিমের বাজারে যেন আগুন। কোনোভাবে ডিমের দাম নিয়ন্ত্রণে আসছে না। যদিও এরই মধ্যে বিদেশ থেকে ডিম আমদানির অনুমতি দেওয়া হয়েছে। শুল্ক প্রত্যাহারেরও প্রক্রিয়াও চলমান রয়েছে।

রংপুর সিটি বাজারের এক ব্যবসায়ী জানান, ডিমের সরবরাহে ঘাটতি রয়েছে। তাই বেশি দামে কিনে তারা বেশি দামে বিক্রি করতে বাধ্য হচ্ছেন। মূলত এ কারণেই দাম বেড়েছে। আবার বাজারে ৫-৬ বার ডিম হাতবদলও হচ্ছে। এটাও দাম বাড়ার কারণ।

অন্যদিকে উৎপাদক এবং পাইকারি ব্যবসায়ীদের সঙ্গে আলোচনা করে ডিমের বাজার দর নিয়ন্ত্রণে পাইকারি ১১ টাকা এক পয়সা আর খুচরা মূল্য প্রতি পিস ১১ টাকা ৮৭ পয়সা নির্ধারণ করে সরকার। তবে সেই দামে বিক্রি হচ্ছে না ডিম।

এর কারণ হিসেবে ডিমের বাজারে সংকটের দিকে তীর ছুড়ছেন ব্যবসায়ীরা। তাদের দাবি, ডিমের উৎপাদন চাহিদার চেয়ে কম। যদিও সরকার বলছে, উদ্বৃত্ত রয়েছে। এ অবস্থায় বাজার বিশ্লেষকরা মনে করেন, চাহিদা ও উৎপাদনের তথ্যে এমন অসামঞ্জস্যতা এ সংকটের একটি বড় কারণ।