রমজানে ওমরা করলে হজের সওয়াব পাওয়া যায় কি

প্রকাশিত: ১২:০৬ অপরাহ্ণ, মার্চ ১, ২০২৫


নিজেস্ব প্রতিবেদক:

 

আরবি বর্ষপঞ্জির নবম মাস রমজান মুসলমানদের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এটি গুনাহ মাফ, তাকওয়া অর্জন এবং অফুরন্ত সওয়াব লাভের মাস। এই পবিত্র মাসেই মহান আল্লাহ মানবজাতির পথনির্দেশক গ্রন্থ আল-কুরআন নাজিল করেছেন।

পবিত্র কুরআনে ইরশাদ হয়েছে— ‘রমজান মাস, যার মধ্যে কুরআন নাজিল করা হয়েছে, যা মানুষের জন্য হেদায়াত এবং সত্য-মিথ্যার পার্থক্যকারী নির্দেশনা। সুতরাং তোমাদের মধ্যে যে এ মাস পাবে, সে যেন রোজা রাখে। আর যে অসুস্থ কিংবা সফরে থাকবে, সে অন্য সময়ে এ রোজা পূরণ করবে। (সূরা আল-বাকারা: ১৮৫)

হাদিস অনুযায়ী, এই মাসে জান্নাতের দরজা খুলে দেওয়া হয় এবং জাহান্নামের দরজা বন্ধ করে দেওয়া হয়। আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত এক হাদিসে রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন— ‘যখন রমজান আসে, তখন আকাশের দরজাগুলো খুলে দেওয়া হয়, জাহান্নামের দরজাগুলো বন্ধ করে দেওয়া হয় এবং শয়তানদের শৃঙ্খলিত করা হয়।’ (সহিহ বুখারি: ১৭৭৮)

রমজানের রোজা পালন করলে জান্নাত লাভেরও সুসংবাদ রয়েছে। এক সাহাবী রাসুলুল্লাহ (সা.)-এর কাছে এসে জানতে চাইলেন, কী করলে জান্নাতে প্রবেশ করা যাবে। উত্তরে নবীজি বললেন— ‘তুমি আল্লাহর ইবাদত করবে, তার সঙ্গে কোনো কিছু শরিক করবে না, পাঁচ ওয়াক্ত ফরজ নামাজ আদায় করবে, ফরজ যাকাত দেবে এবং রমজানের রোজা রাখবে।’ (সহিহ বুখারি: ১৩১৫)

অনেকেই বলে থাকেন, রমজানে ওমরা করলে হজের সওয়াব পাওয়া যায়। এটি কতটা সত্য?

এ বিষয়ে রাসুলুল্লাহ (সা.)-এর একটি হাদিস পাওয়া যায়। ইবনু আব্বাস (রা.) বর্ণনা করেন, এক আনসারী নারী রাসুল (সা.)-কে জানালেন যে, তিনি হজে যেতে পারেননি, কারণ তার পরিবারের সব সদস্য প্রয়োজনীয় উট নিয়ে গিয়েছেন। এতে রাসুলুল্লাহ (সা.) তাকে বললেন— ‘রমজানে ওমরা করো, কারণ রমজানের একটি ওমরা একটি হজের সমতুল্য।’ (সহিহ বুখারি: ১৬৬৭)

এই হাদিস থেকে বোঝা যায়, রমজানে ওমরা করলে হজের সমান সওয়াব পাওয়া যায়। তবে এটি হজের বিকল্প নয়। হজ একটি নির্দিষ্ট ফরজ ইবাদত, যা নির্ধারিত সময়ে সম্পন্ন করতে হয়। তাই রমজানে ওমরা করলেও মূল হজ আদায় করতে হবে।

রমজান মাসে করা আমল সাধারণ সময়ের তুলনায় বহুগুণ বেশি সওয়াব অর্জনের সুযোগ করে দেয়। বিশেষ করে, ওমরা পালন করা অত্যন্ত ফজিলতপূর্ণ। তবে এটি হজের বিকল্প নয়, বরং হজের সওয়াব লাভের একটি বিশেষ সুযোগ মাত্র। আল্লাহ তায়ালা যেন আমাদের সবাইকে রমজানের বরকত লাভ এবং তাঁর সন্তুষ্টি অর্জনের তৌফিক দেন।