আমিনুল ইসলাম বাবু:
রাজধানীর সবুজবাগে স্বামীর বাসা থেকে ফাতেমা কানিজ (৪২) নামে এক গৃহবধূর রক্তাক্ত লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। ময়নাতদন্তের জন্য পুলিশ তার লাশ মর্গে পাঠিয়েছে। অভিযোগ উঠেছে, দাম্পত্য কলহের জের ধরে পাষণ্ড স্বামী তাকে ধারালো অস্ত্রের আঘাতে হত্যার পর ঘটনা ভিন্ন খাতে নেওয়ার অপচেষ্টায় রক্তাক্ত মরদেহ কাঁথা দিয়ে মোড়ায়ে রাখা হয়। এ ঘটনায় জড়িত সন্দেহে নিহতের স্বামী আলামিনকে আটক করেছে পুলিশ।
জানা গেছে, নিহত গৃহবধূ ছিলেন কুমিল্লার বাংগড়া উপজেলার মোসলে উদ্দিন আহামেদ, মা আয়েশা খাতুন দম্পতির মেয়ে। বর্তমানে সবুজবাগ থানার পূর্ব রাজাবাজার স্বামীর বাসায় থাকতো। চার ভাই এক বোনের মধ্যে সে ছিল বড়। দুই ছেলের জননী ছিলেন তিনি।
নিহতের ছোট ভাই মনিরুজ্জামান বলেন, ভাগ্নেরা সকালে ফোন করে সংবাদ পাঠান, তাদের রুম বাহির থেকে লক করা। সেই সংবাদ পেয়ে ভগ্নিপতির বাসায় ছোট ভাই কামরুজ্জামান ছুটে যায়। সেখানে গিয়ে জানতে পারে, ভাগিনাদের রুমে বাহির থেকে দরজা লক করা। তা খোলা হয়। এবং বোন ও ভগ্নিপতির রুমের দরজা ভিতর থেকে লক করা। অনেক ডাকাডাকি করে কোন সাড়াশব্দ না পেয়ে দরজা ভেঙ্গে ভিতরে দেখতে পান, বিছানার মধ্যে বোন ফাতেমা কানিজ কাঁথা মোড়ানো রক্তাক্ত অবস্থায় পড়ে আছে, পাশে ভগ্নিপতি আলামিন শুয়ে আছেন।
তিনি আরও বলেন, কিছু দিন আগে তারা ওমরা হজ পালন করে দেশে আসেন। সেই থেকে ফাতেমা তার বাবার বাড়ি বাসাবো কদমতলা থাকতেন। এর আগ থেকেই পারিবারিক বিষয় নিয়ে তাদের স্বামী-স্ত্রী’র মধ্যে দাম্পত্য কলহ চলছিল। আলামিন তার স্ত্রীকে সন্দেহ করতেন। বাবার বাড়ি বাসাবোতে বেড়ানো শেষে কয়েকদিন আগে স্বামীর বাসায় আসেন। গত রাত থেকে সকাল নয় টার মধ্যে যে কোন সময়ে তার স্বামী আলামিন তার স্ত্রী ফাতেমাকে গলায় রক্তাক্ত জখমের মাধ্যমে হত্যা করে ঘটনা ভিন্ন খাতে নেওয়ার অপচেষ্টায় তার রক্তাক্ত লাশ কাঁথা দিয়ে পেঁচিয়ে রেখেছিল। পরে বিষয়টি সন্দেহ হলে তাৎক্ষণিক নিহতের স্বামী আলামিনকে আটক করে থানায় সোপর্দ করা হয়েছে।
বিষয়টির সত্যতা নিশ্চিত করেছেন সবুজবাগ থানার উপ-পুলিশ পরিদর্শক (এসআই) রুবিনা আউয়াল।
তিনি বলেন, রোববার (১৫ অক্টোবর) বেলা ১১ টার দিকে ওই বাসার বিছানা থেকে তার রক্তাক্ত মৃতদেহ উদ্ধার করা হয়। পরে আইনি প্রক্রিয়ায় সুরতহাল প্রতিবেদন তৈরির পর ময়নাতদন্তের জন্য মরদেটি বিকেলে ঢামেক মর্গে পাঠিয়েছি।
এসআই রুবিনা আউয়াল বলেন, নিহতের গলার নিচে ৪/৫ টি কাটা ও ছিদ্র রক্তাক্ত জখম রয়েছে। এছাড়াও কয়েক স্থানে আচড়ের চিহ্ন রয়েছে। তবে ময়নাতদন্ত রিপোর্ট পেলে তার মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করে বলা যাবে। এ ঘটনায় ইতোমধ্যেই নিহতের স্বামী আলামিনকে আটক করা হয়েছে। এ ঘটনায় আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে বলেও জানান পুলিশের এই কর্মকর্তা।