সাজ্জাদ হোসেন
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে দুইজন পোস্ট-ডক্টরাল ফেলো নির্বাচনের জন্য দেশি/বিদেশি পিএইচডি ডিগ্রিধারীদের কাছ থেকে আবেদন চেয়েছে বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিবেশবিজ্ঞান ইনস্টিটিউট। তবে আবেদনকারীকে আবেদনের সঙ্গে গুনতে হবে তিন হাজার টাকা। যা বিশ্ববিদ্যালয়ের ওই ইনস্টিউেটের সঞ্চয়ী হিসাবে জমা দিতে হবে। ফির বিষয়টি অদ্ভুত বলছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের সিনিয়র শিক্ষকরা। তবে ভিন্ন কথা বলছেন ইনস্টিটিউটির পরিচালক।
সিনিয়র শিক্ষকরা বলছেন, পোস্ট-ডক্টরাল ফেলোর জন্য আবেদন ফি নেওয়ার নজির বিদেশে বা দেশের বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে নেই। শুধু মাস্টার্সের ক্ষেত্রে কিছুটা আবেদন ফি নিতে দেখা যায় সেইসব বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে।
বিষয়টি জানতে কথা হয় বিশ্ববিদ্যালয়ের পদার্থবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক ড. সালেহ হাসান নকিবের সঙ্গে। তিনি ঢাকা পোস্টকে বলেন, আবেদন ফি নেওয়ার নজির সারা পৃথিবীতে আছে। কিন্তু পোস্ট-ডক্টরাল ফেলো নির্বাচনের জন্য দেশি/বিদেশি পিএইচডি ডিগ্রিধারীদের কাছ থেকে আবেদন ফি নেওয়ার নজির আমার জানা মতে নেই। গ্র্যাজুয়েশন সম্পন্ন করা শিক্ষার্থীদের ক্ষেত্রে দেশের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয় ফি নেয়। কারণ তাদের অনেক প্রসেসের মধ্যে দিয়ে যেতে হয়। যেমন আমেরিকান অনেক বিশ্ববিদ্যালয়ে গ্র্যাজুয়েট শিক্ষার্থীদের জন্য একটা অ্যাপ্লিকেশন ফি দিতে হয়। কিন্তু আমি কখনো দেখিনি যে পোস্ট-ডক্টরাল ফেলোর জন্য কোনো ইনস্টিটিউটকে এমন ফি নির্ধারণ করে। আমি মনে করি একটা দেশের আর্থ-সামাজিক অবস্থা বিবেচনা করেই চার্জ করা উচিত। একটা আমেরিকান ছাত্র বা একটা ব্রিটিশ ছাত্রের ফি দেওয়া যে রকম ব্যাপার, আমাদের দেশে একটা ছাত্রের তিন হাজার টাকা ফি দেওয়া সমতুল্য না। কাজে আমার কাছে বিষয়টি খুব অদ্ভুত বলেই মনে হচ্ছে।
এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের অধ্যাপক ড. ফরিদ উদ্দিন খান ঢাকা পোস্টকে বলেন, বিষয়টি এক প্রকার অযৌক্তিক। বিদেশের এক্সপেরিয়েন্সে এমন কোনো ফি মূলত লাগে না। পোস্ট-ডক্টরাল সাধারণ একটি চাকরির মতো। কোনো একটা অধ্যাপকের অধীনে গবেষণা করতে হয়। ফরমাল কোনো স্টুডেন্টশিপ না এটা বা এটা কোনো ফরমাল ডিগ্রিও না যে বিশ্ববিদ্যালয়কে তাকে টাকা দিতে হবে। কারণ নিজের টাকায় কেউ পোস্ট-ডক্টরেট করে না। সেই ক্ষেত্রে আবেদন ফি লাগে না। এটা না নির্ধারণ করলেই ভালো হতো। কারণ দুই তিন জন আবেদন করে। সেখানে তিন হাজার টাকা নেওয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের দরকার ছিল না।
এ বিষয়ে পরিবেশ বিজ্ঞান ইনস্টিটিউটের পরিচালক ড. সাবরিনা নাজ বলেন, পোস্ট-ডক্টরাল ফেলো রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রথম চালু করা হয়েছে। ইতোপূর্বে ইনস্টিটিউট অব বাংলাদেশ স্টাডিজ (আইবিএস) এমন বিজ্ঞপ্তি দিয়েছে। আমার মনে হয় সেটার সঙ্গে আমাদের ফি টাও সমমান আছে। আর আবেদন ফর্মটার বিস্তারিত যদি আপনারা অনলাইনে গিয়ে দেখেন তাহলে সেখানে দেখতে পাবেন অনেক বিশাল একটা বিষয় আছে। যারা কোয়ালিফাই করবেন তারা বিশ্ববিদ্যালয়ের কাছ থেকে সকল ধরনের সুবিধা প্রাপ্ত হবেন এবং মাসিক ফেলোশিপ হিসেবে ৫০ হাজার টাকা করে পাবেন। বিশ্ববিদ্যালয়ে তাদের আর কোনো অর্থই দিতে হচ্ছে না। ফলে যিনি আবেদন করবেন আমরা ধরেই নিই তিনি সুযোগ পাবেন।
তিনি আরও বলেন, একটা স্টুডেন্টের আইডি কার্ড করা থেকে শুরু করে আরও যে ছোট ছোট বিষয় থাকে এছাড়াও পরীক্ষা নেওয়ার যে ব্যাপারগুলো থাকে। এটার জন্য আর্থিক যে সংস্থানটা সেটা আমাদের এর মধ্যেই আয়োজন করতে হবে।