রাজশাহী প্রতিনিধি:
সেমিস্টার পদ্ধতি বাতিল করে পুনরায় বর্ষ পদ্ধতি চালুর দাবিতে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন অনুষদের শিক্ষার্থীরা আমরণ অনশন কর্মসূচি পালন করেছেন। বিশ্ববিদ্যালয়ের সৈয়দ নজরুল ইসলাম প্রশাসন ভবনের সামনে অবস্থান নিয়ে বুধবার বেলা সাড়ে ১১টার দিকে এ কর্মসূচি পালন করেন তারা। দুপুর দেড়টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যের আশ্বাসে কর্মসূচি স্থগিত করেন শিক্ষার্থীরা।
কর্মসূচিতে ‘আইন বিভাগ’ এবং ‘আইন ও ভূমি প্রশাসন’ বিভাগের ২০২২-২৩ ও ২০২৩-২৪ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থীরা অংশ নেন। এ সময় দুই বিভাগ থেকে মোট ৪০ জন শিক্ষার্থী অনশনে বসেন। দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত অনশন চালিয়ে যাবেন বলে হুঁশিয়ারি দেন তারা। সেখানে তারা ‘দফা এক দাবি এক, ইয়ারে কামব্যাক’, ‘জেগেছে রে জেগেছে, আইন অনুষদ জেগেছে’, ‘সেমিস্টারের বিরুদ্ধে ডাইরেক্ট অ্যাকশন’, ‘আমাদের দাবি মানতে হবে, মানতে হবে মানতে হবে’ প্রভৃতি স্লোগান দেন। এর আগে শিক্ষার্থীরা একটি বিক্ষোভ মিছিল বের করেন। মিছিলটি ক্যাম্পাসের গুরুত্বপূর্ণ সড়ক প্রদক্ষিণ করে।
কর্মসূচিতে অংশ নেওয়া আইন ও ভূমি প্রশাসন বিভাগের ২০২২-২৩ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী মো. মাহবুব হাসান বলেন, ‘আইন অনুষদের ওপর আগের প্রশাসন জোর করে সেমিস্টার পদ্ধতি চাপিয়ে দিয়েছে। আমাদের বৃহৎ পাঠ্যসূচি, সেটা অধ্যয়নের জন্য সেমিস্টারের তিন-চার মাস যথেষ্ট সময় নয়। এ ছাড়া আমাদের সেমিস্টার পদ্ধতিতে যাওয়ার জন্য যথেষ্ট শিক্ষক ও অবকাঠামো প্রয়োজন যা আমাদের বিভাগের নেই। এজন্য আমরা সেমিস্টার থেকে বর্ষপদ্ধতিতে ফিরে যেতে চাচ্ছি।’
আইন ও ভূমি প্রশাসন বিভাগের ২০২৩-২৪ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী সাদিয়া আফরিন লিপু বলেন, ‘আমাদের বিগত ব্যাচগুলো বর্ষ পদ্ধতিতে পড়াশোনা করে আসছে। বর্তমান সেমিস্টার পদ্ধতিতে বছরে দুটি সেমিস্টার শেষ করতে হয়। তবে যে পরিমাণ পাঠ্যসূচি দেওয়া হয়, তা মাত্র ছয় মাসে শেষ করা সম্ভব নয়। আইন একটি পেশাদারি বিষয়। সেমিস্টার পদ্ধতিতে যা শেখানো হয়, তার কিছুই পেশাগত জীবনে প্রয়োগ করা সম্ভব না। অনুষদের সুনাম অক্ষুন্ন রাখতে আমরা বর্ষ পদ্ধতিতে পড়াশোনা করতে চাই।’
এদিকে দুপুর ১টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক সালেহ্ হাসান নকীব, উপ-উপাচার্য অধ্যাপক ফরিদ উদ্দিন খান ও মোহাম্মদ মাঈন উদ্দিন ঘটনাস্থলে গিয়ে শিক্ষার্থীদের সঙ্গে কথা বলেন। উপাচার্য শিক্ষার্থীদের বলেন, বিষয়টি একাডেমিক কাউন্সিলে যাবে। সেখানে শিক্ষার্থীদের সমস্যাগুলো তুলে ধরা হবে। আমি আশাবাদী, শিক্ষার্থীদের শিক্ষাজীবন ও ভবিষ্যত যেন ভালো হয় এমন সিদ্ধান্তই আসবে।