রামপাল ও আদানি বিদ্যুৎ প্রকল্প বাতিল চায় জাতীয় কমিটি

প্রকাশিত: ৩:৫৯ অপরাহ্ণ, অক্টোবর ২৭, ২০২৪

নিজস্ব প্রতিবেদক:

আওয়ামী লীগ সরকারের বিদ্যুৎ ও জ্বালানি খাতের দুর্নীতিবাজদের তালিকা জনসমক্ষে প্রকাশের দাবি জানিয়েছে তেল, গ্যাস, খনিজ সম্পদ ও বিদ্যুৎ-বন্দর রক্ষা জাতীয় কমিটি। নেতারা বলছেন, সেই সময়ের মন্ত্রী, সচিব, পরামর্শক, উপদেষ্টাসহ সব অপরাধীর বিচার নিশ্চিত করতে হবে। ওই সময়কার বিদ্যুৎ ও জ্বালানি চুক্তির পর্যালোচনা জরুরি। বিশেষ করে ভারতের আদানির বিদ্যুৎকেন্দ্রের চুক্তি ও রামপাল বিদ্যুৎকেন্দ্র বাতিল করতে হবে।

গতকাল শনিবার ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে ‘জ্বালানি ও বিদ্যুৎ খাতের রূপরেখা বর্তমান পরিস্থিতি ও করণীয়’ শীর্ষক মতবিনিময় সভায় এসব দাবি উত্থাপন করা হয়। দাবি আদায়ে আগামী ৬ নভেম্বর সারাদেশে সমাবেশ করার ঘোষণা দিয়েছে জাতীয় কমিটি। সভায় সভাপতিত্ব করেন জুলফিকার আলী ও লিখিত বক্তব্য উপস্থাপন করেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক মোশাহিদা সুলতানা।
অনুষ্ঠানে জ্বালানি বিশেষজ্ঞ ড. শামসুল আলম বলেন, কিছু উদ্যোগ নিলে নভেম্বরের মধ্যে ২৬ হাজার কোটি টাকা সাশ্রয় করা সম্ভব। কয়লা আমদানি ব্যয় পর্যালোচনা করলে বছরে প্রায় ৬ হাজার কোটি টাকা খরচ কমবে। ফার্নেস অয়েলচালিত ৪০টি বিদ্যুৎকেন্দ্র চলছে না। অথচ এসব প্রতিষ্ঠান ক্যাপাসিটি চার্জের নামে হাজার হাজার কোটি টাকা নিয়ে যাচ্ছে। এসব চুক্তি বাতিল করলে ২০ হাজার কোটি টাকা সাশ্রয় হবে। তিনি বলেন, গত সরকারের উপদেষ্টা তৌফিক-ই-ইলাহী চৌধুরী, সাবেক বিদ্যুৎ সচিব আহমদ কায়কাউস, আবুল কালাম আজাদ ও মনোয়ার হোসেনরা জ্বালানি অপরাধী। তারা কাগজ তৈরি করে অপরাধের ব্যবস্থা করে দিয়েছেন। এ অপরাধীদের বিচার করতে হবে।
অধ্যাপক আনু মুহাম্মদ বলেন, দেশের সম্পদের শতভাগ মালিকানা নিশ্চিত এবং জাতীয় সক্ষমতার ভিত্তিতে গ্যাস অনুসন্ধান করতে হবে। দায়মুক্তি আইন তৈরির সময়ই বোঝা গেছে, ভয়ংকর কিছু ঘটবে। ২০১৫ সালে পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রকেও দায়মুক্তি দেওয়া হয়েছে। রাশিয়ার একই কোম্পানি ভারতে ৫০০ কোটি ডলার ও বাংলাদেশে ১ হাজার ২০০ কোটি ডলার খরচ করে পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র তৈরি করছে।
অনুষ্ঠানে জাতীয় কমিটির ছয় দফা দাবি তুলে ধরা হয়। এতে বলা হয়, বিদ্যুৎ ও জ্বালানির মূল্য কমাতে স্বল্প মেয়াদে দ্রুত পদক্ষেপ নিতে হবে। বিদ্যুৎকেন্দ্রগুলোকে অন্যায্য কেন্দ্র ভাড়া প্রদানে ভর্তুকি বন্ধ করলে মূল্যবৃদ্ধির চাপ কমবে। রূপপুর, মাতারবাড়ী, রামপাল বিদ্যুৎকেন্দ্রসহ বিভিন্ন প্রকল্পের অনিয়ম ও চুক্তি পর্যালোচনা করে বাতিল বা সংশোধনের ব্যবস্থা এবং রামপাল বিদ্যুৎকেন্দ্র বাতিল করতে হবে। পল্লী বিদ্যুতের সংকট আইনি প্রক্রিয়ায় সমাধান হওয়া উচিত। দেশীয় গ্যাস উত্তোলন ক্ষমতা বৃদ্ধি করলে আমদানিনির্ভরতা কমবে।