আন্তর্জাতিক ডেস্ক রিপোর্টঃ
মার্কিন পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় রাশিয়ার বিরুদ্ধে ইউক্রেনে ওপর নিষিদ্ধ রাসায়নিক অস্ত্র প্রয়োগের অভিযোগ এনেছে। মস্কোর ওপর নতুন নিষেধাজ্ঞারও ঘোষণা করেছে ওয়াশিংটন।রাসায়নিক অস্ত্র সংক্রান্ত আন্তর্জাতিক সনদ অনুযায়ী যুদ্ধক্ষেত্রে এমন হাতিয়ার ব্যবহার করা নিষিদ্ধ। অথচ রাশিয়া ইউক্রেনের ওপর হামলার সময়ে একাধিক ‘ইরিট্যান্ট গ্যাস’ প্রয়োগ করেছে বলে মার্কিন প্রশাসন অভিযোগ করেছে। সেইসঙ্গে ‘রায়ট কনট্রোল’ নামের কাঁদানে গ্যাসও ব্যবহার করেছে বলে ওয়াশিংটন দাবি করছে।
মার্কিন পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মতে, রাশিয়া মোটেই বিচ্ছিন্নভাবে এমন নিষিদ্ধ রাসায়নিক এজেন্টের প্রয়োগ করেনি। বরং পাকা অবস্থান থেকে ইউক্রেনীয় সৈন্যদের তাড়াতে ও যুদ্ধক্ষেত্রে সুবিধা নিতে সুপরিকল্পিতভাবে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। রাশিয়া রাসায়নিক অস্ত্রভাণ্ডারের অস্তিত্বের অভিযোগ অস্বীকার করে আসছে। তা সত্ত্বেও সে ক্ষেত্রে স্বচ্ছতার অভাব দূর করতে মস্কোর ওপর আন্তর্জাতিক চাপ বাড়ছে।
ইউক্রেনের ওপর লাগাতার হামলা, সেখানে রাসায়নিক অস্ত্রের প্রয়োগ এবং বিরোধী নেতা আলেক্সি নাভালনির মৃত্যুর দায়ে মার্কিন প্রশাসন রাশিয়ার উপর আরো এক দফা নিষেধাজ্ঞা চাপানোর ঘোষণা করেছে। বিশেষ করে সে দেশে অস্ত্র উৎপাদন আরো কঠিন করে তুলতে নতুন পদক্ষেপ নিচ্ছে ওয়াশিংটন। এর আওতায় চীন, বেলজিয়াম, স্লোভাকিয়া, আজেরবাইজান, তুরস্ক, সংযুক্ত আরব আমিরাতসহ একাধিক দেশে প্রায় ২০০ কোম্পানি ও প্রায় ৮০ জন ব্যক্তির বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে। সেই সব কোম্পানি ও ব্যক্তি রাশিয়াকে অস্ত্র কর্মসূচির জন্য প্রয়োজনীয় উপাদান সংগ্রহে সহায়তা করছে বলে অভিযোগ উঠেছে। রাশিয়ায় রাসায়নিক ও জৈব অস্ত্র উৎপাদন বানচাল করতেও সুনির্দিষ্ট নিষেধাজ্ঞা চাপাচ্ছে ওয়াশিংটন।
গত ফেব্রুয়ারি মাসে রুশ বিরোধী নেতা নাভালনির মৃত্যুর সঙ্গে যুক্ত ব্যক্তিদেরও মার্কিন নিষেধাজ্ঞার তালিকায় অন্তর্গত করা হয়েছে। সাইবেরিয়ায় সুমেরু অঞ্চলের এক প্রিজন ক্যাম্পে তার মৃত্যুর কারণ মোটেই স্বাভাবিক ছিল না বলে মনে করে তার পরিবার। এই ঘটনার সঙ্গে যুক্ত ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের যে কোনো সম্পদ মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে থাকলে সেগুলোর নাগাল পাওয়া যাবে না। মার্কিন নাগরিক ও বাসিন্দারাও তাদের সঙ্গে কোনো ব্যবসায়িক সম্পর্ক রাখতে পারবেন না।
ইউক্রেন যুদ্ধের সূচনা থেকেই যুক্তরাষ্ট্রসহ পশ্চিমা জগত রাশিয়ার ওপর একের পর এক নিষেধাজ্ঞা চাপিয়ে আসছে। অথচ নানা কৌশলে রাশিয়া সেই সব শাস্তিমূলক পদক্ষেপের ধাক্কা সামলে চলেছে বলে অভিযোগ উঠছে। এমন দুর্বলতা দূর করতে মার্কিন প্রশাসন অন্যান্য দেশের দিকে নজর দিচ্ছে। রাশিয়া যাতে নিষেধাজ্ঞা এড়িয়ে ঘুরপথে প্রয়োজনীয় পণ্য সংগ্রহ করতে না পারে, তা যতটা সম্ভব নিশ্চিত করাই এমন উদ্যোগের লক্ষ্য। এর মাধ্যমে সহযোগী ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের মনে মার্কিন নিষেধাজ্ঞার ভয় চাপাতে চায় ওয়াশিংটন।