সরকারি অর্থ আত্মসাতে পৌর মেয়র-নির্বাহী প্রকৌশলীসহ ৪ জনের বিরুদ্ধে মামলা

প্রকাশিত: ৮:১৩ অপরাহ্ণ, জুলাই ২৫, ২০২৩

নিজস্ব প্রতিবেদক:
অডিটোরিয়াম নির্মাণে দুর্নীতির মাধ্যমে সরকারের প্রায় ৪৪ লাখ টাকা আত্মসাতের অভিযোগে ভোলার লালমোহন পৌরসভার মেয়র ও নির্বাহী প্রকৌশলীসহ চারজনের বিরুদ্ধে মামলা করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। আজ মঙ্গলবার (২৫ জুলাই) বরিশাল সমন্বিত জেলা কার্যালয়ে সংস্থাটির সহকারী পরিচালক রাজ কুমার সাহা বাদী হয়ে এ মামলা করেন। আজ বিকেলে নিউজ পোস্টকে এ তথ্য জানিয়েছেন দুদক উপ-পরিচালক (জনসংযোগ) মুহাম্মদ আরিফ সাদেক।
মামলার আসামিরা হলেন- লালমোহন পৌরসভার মেয়র এমদাদুল ইসলাম (তুহিন), নির্বাহী প্রকৌশলী ধ্রুব লাল দত্ত বনিক, উপ-সহকারী প্রকৌশলী নিজাম উদ্দিন ও ঠিকাদার মেসার্স রিয়াজ স্টোরের মালিক কামাল হোসেন রিয়াজ।
আসামিদের বিরুদ্ধে ক্ষমতার অপব্যবহার ও দুর্নীতির মাধ্যমে লালমোহন পৌরসভাধীন ৬ নম্বর ওয়ার্ডের উত্তর বাজারস্থ লালমোহন পৌর অডিটোরিয়ামের (পার্ট-১, পার্ট-২ ও পার্ট-৩) নির্মাণকাজ যথাযথভাবে সম্পাদন না করে রাষ্ট্রের ৪৩ লাখ ৮৮ হাজার ৯১২ টাকা আত্মসাতের অভিযোগ আনা হয়েছে। মামলায় আসামিদের বিরুদ্ধে দণ্ডবিধির ৪০৯/১০৯ ধারাসহ ১৯৪৭ সনের দুর্নীতি প্রতিরোধ আইনের ৫ (২) ধারায় অভিযোগ আনা হয়েছে।


এজাহার সূত্রে জানা যায়, ২০১৯-২০ অর্থবছরে ওই অডিটোরিয়াম নির্মাণকাজটি দরপত্রের মাধ্যমে ২০২০ সালের মার্চ মাসে সর্বনিম্ন দরদাতা হিসেবে মেসার্স রিয়াজ স্টোর পায়। অডিটরিয়াম নির্মাণে অনিয়মের অভিযোগ ওঠার পর দুদক অনুসন্ধানে নামে। অনুসন্ধানে গণপূর্ত বিভাগ থেকে চার সদস্যের একটি নিরপেক্ষ প্রকৌশলী টিম অডিটরিয়াম নির্মাণকাজের পরিমাপ নেয়। গণপূর্ত টিম সরেজমিনে পরিদর্শন ও পরিমাপে সম্পাদিত কাজের মূল্যমান পায় ১ কোটি ৩০ লাখ ৯৫ হাজার টাকা। এর বিপরীতে বিল নেওয়া হয় এক কোটি ৭৪ লাখ ৮৩ হাজার ৯১৯ টাকা। অর্থাৎ ৪৩ লাখ ৮৮ হাজার ৯১২ টাকা বেশি বিল উত্তোলনের মাধ্যমে আত্মসাৎ করেন আসামিরা।
জানা যায়, ঠিকাদার কামাল হোসেন রিয়াজ এ কাজের ৮০ শতাংশ সম্পাদন করে ২০২০ সালের জুলাই মাসে লালমোহন পৌরসভা মেয়র বরাবর আবেদন করেন। কাজের তদারককারী কর্মকর্তা লালমোহন পৌরসভার সহকারী প্রকৌশলী (ভারপ্রাপ্ত) ও দায়িত্বপ্রাপ্ত উপ-সহকারী প্রকৌশলী মো. নিজাম উদ্দিন এমবি বই প্রস্তুতপূর্বক নথিতে লিপিবদ্ধ করে মতামতসহ সই দিয়ে প্রথম চলতি বিল বাবদ ১ কোটি ১১ লাখ ৬৮ হাজার ১২৮ টাকা দিতে লালমোহন পৌরসভার নির্বাহী প্রকৌশলী ধ্র“ব লাল দত্ত বনিকের কাছে উপস্থাপন করেন। এরপর নির্বাহী প্রকৌশলী এমবি ও নথিতে সই করে ঠিকাদারকে বিল দেওয়ার জন্য মেয়র লালমোহন পৌরসভাকে সুপারিশ করেন। এরই পরিপ্রেক্ষিতে মেয়র প্রথম চলতি বিল অনুমোদন করেন। ফলে লালমোহন পৌরসভার মেয়র এমদাদুল ইসলাম তুহিন ও পৌরসভার সচিব (অতিরিক্ত দায়িত্ব) হিসেবে নির্বাহী প্রকৌশলী ধ্রুব লাল দত্ত বনিকের যৌথ স্বাক্ষরে ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান মেসার্স রিয়াজ স্টোরকে প্রথম চলতি বিল বাবদ ৮৭ লাখ ১১ হাজার ১৪০ টাকা দেওয়া হয়। যা চুক্তি মূল্যের চেয়ে ৪৩ লাখ ৮৮ হাজার ৯১২ টাকা বেশি।
মামলার এজাহারে আরও বলা হয়, নির্মাণকাজ যথাযথভাবে সম্পাদন না করে রাষ্ট্রের ৪৩ লাখ ৮৮ হাজার ৯১২ টাকার অতিরিক্ত বিল উত্তোলনপূর্বক আত্মসাতের অভিযোগে আসামিদের বিরুদ্ধে মামলা করা হয়েছে।