রোমের সান্তা মারিয়া ম্যাজিওর গির্জায় পোপ ফ্রান্সিসের সমাধির ছবি প্রকাশিত হয়েছে।

প্রকাশিত: ৪:৪২ অপরাহ্ণ, এপ্রিল ২৭, ২০২৫

ডেস্ক রিপোর্ট:

 

ছবিতে দেখা গেছে, পাথরের তৈরি সমাধির ওপর একটি সাদা গোলাপ ফুল রাখা। পোপ হিসেবে যে নামে তিনি পরিচিত ছিলেন, সে নাম সমাধির ওপর খোদাই করা। সমাধিটির ওপরে স্পটলাইটের আলোয় উদ্ভাসিত হয়েছে একটি ক্রুশ চিহ্ন।

গত শনিবার ভ্যাটিকানে অনুষ্ঠিত উন্মুক্ত অন্ত্যেষ্টিক্রিয়ার পর সীমিত পরিসরের অনুষ্ঠানে প্রয়াত পোপকে ওই গির্জায় সমাহিত করা হয়। গির্জাটি ইতালির রাজধানী রোমের চারটি প্রধান বিশাল গির্জার একটি। সেখানে তিনি কার্ডিনাল এবং পরে পোপ থাকাকালীন নিয়মিত যেতেন।

আজ রোববার সকালে বহু শোকাহত মানুষ গির্জার বাইরে ভিড় জমান, যাতে পোপ ফ্রান্সিসের প্রতি শেষ শ্রদ্ধা জানাতে পারেন। পোপ ফ্রান্সিস গত সোমবার ৮৮ বছর বয়সে মৃত্যুবরণ করেন।

পোপ ফ্রান্সিস বিশেষভাবে ভার্জিন মেরির ভক্ত ছিলেন। চতুর্থ শতকে নির্মিত সান্তা মারিয়া ম্যাজিওরে গির্জাটি ভার্জিন মেরিকে উৎসর্গ করা প্রথম গির্জা।

এই বিশাল গির্জাটি কলোসিয়ামের কাছে এবং রোমের ব্যস্ততম টার্মিনি স্টেশনের কাছাকাছি অবস্থিত। এটি ভ্যাটিকানের চৌহদ্দির অনেক বাইরে। সাধারণত পোপদের ভ্যাটিকানের মধ্যে সমাহিত করা হয়। তবে এই গির্জার প্রতি দক্ষিণ আমেরিকান পোপের বিশেষ ভালোবাসা ছিল।

সান্তা মারিয়া ম্যাজিওর গির্জার প্রধান পুরোহিত আগে এক ইতালীয় সংবাদপত্রকে বলেছিলেন, ২০২২ সালে পোপ ফ্রান্সিস জানিয়েছিলেন, ভার্জিন মেরি তাঁর অনুপ্রেরণা। সে কারণে ওই গির্জায় সমাহিত হতে চান।

পোপ ফ্রান্সিসের অন্ত্যেষ্টিক্রিয়ায় বিশ্বের বিভিন্ন রাষ্ট্রপ্রধান, সরকারপ্রধান ও রাজপরিবারের সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন। পাশাপাশি লাখো ক্যাথলিক খ্রিষ্টান তাঁর প্রতি শেষ শ্রদ্ধা জানাতে ভ্যাটিকানের রাস্তায় ভিড় করেছিলেন।

অনুষ্ঠানে ৯১ বছর বয়সী কার্ডিনাল জিওভান্নি ব্যাত্তিস্তা রে পোপের জীবনের ওপর একটি ধর্মোপদেশ দেন। তিনি বিশেষভাবে উল্লেখ করেন, পোপ ফ্রান্সিস সব সময় বিশ্বকে ‘দেয়াল নয়, সেতুবন্ধ’ গড়ার আহ্বান জানিয়ে গেছেন।

এই অন্ত্যেষ্টিক্রিয়া ছিল একটি গুরুত্বপূর্ণ বৈঠকেরও মঞ্চ, যেখানে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প এবং ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি সাক্ষাৎ করেন। পরে জেলেনস্কি এই সাক্ষাৎকে ‘ঐতিহাসিক সম্ভাবনাময়’ বলে মন্তব্য করেন।

প্রকাশ্য অন্ত্যেষ্টিক্রিয়ার পর পোপ ফ্রান্সিসের কফিন ধীরগতিতে রোম শহর প্রদক্ষিণ করে নিয়ে যাওয়া হয়।

কর্তৃপক্ষ জানায়, প্রায় ১ লাখ ৪০ হাজার মানুষ রাস্তায় সারিবদ্ধ হয়ে পোপের কফিনবাহী গাড়িকে অভ্যর্থনা জানান। এই শোকযাত্রায় সাদা রঙের একটি বিশেষভাবে রূপান্তরিত পোপমোবাইল (যে গাড়িতে পোপ চলাচল করেন) ব্যবহার করা হয়। গাড়িটি টাইবার নদী অতিক্রম করে এবং কলোসিয়াম, ফোরাম ও পিয়াজ্জা ভেনেজিয়ায় অবস্থিত আলতারে দেলা পাত্রিয়া জাতীয় স্মৃতিস্তম্ভের পাশ দিয়ে অগ্রসর হয়।

শোক শেষে নজর দেওয়া হবে নতুন পোপ নির্বাচনের দিকে। এখনো নির্দিষ্ট তারিখ ঘোষণা করা হয়নি। তবে ধারণা করা হচ্ছে, আগামী ৫ বা ৬ মের মধ্যে নির্বাচনী প্রক্রিয়া শুরু হতে পারে, যেখানে ১৩৫ জন কার্ডিনাল উপস্থিত থাকবেন।