লক্ষ্মীপুর প্রতিনিধি:
লক্ষ্মীপুর জেলায় প্রায় ৭ দিন ধরে বন্যার পানিতে দুর্ভোগ পোহাচ্ছে ১০ লক্ষাধিক মানুষ। এতে খাদ্য সংকট দেখা দিয়েছে। সরকারি-বেসরকারিভাবে পাওয়া ত্রাণের মাধ্যমে খাদ্যসংকট কিছুটা দূর হলেও বিশুদ্ধ পানির সংকটে ভুগছে বন্যা কবলিত এলাকার মানুষ। বৃহস্পতিবার (২৯ আগস্ট) সকালে বন্যা কবলিত সদর উপজেলার দিঘলী-মান্দারী এলাকা ঘুরে এসব তথ্য জানা গেছে।
তবে জেলা প্রশাসন সূত্র জানিয়েছে, লক্ষ্মীপুরে প্রায় সাড়ে ৭ লাখ মানুষ পানিবন্দি হয়ে আছে। এছাড়া প্রায় ৩০ হাজার মানুষ আশ্রয়কেন্দ্রে আশ্রয় নিয়েছে।
সদরের পশ্চিম জামিরতলি গ্রামের বাসিন্দা আবদুর রহিম ও জয়নাল আবেদিন জানান, পুরো এলাকা ৩-৪ ফুট পানিতে নিমজ্জিত। প্রত্যেকটি টিউবওয়েল এখন পানির নিচে। টিউবওয়েল চাপ দিলেই ময়লা পানি উঠে আসে। বিশুদ্ধ পানির সংকট দেখা দিয়েছে। অনেকেই বাজার থেকে পানি কিনে খাচ্ছেন। আবার ত্রাণের সঙ্গে দেওয়া পানিও অপ্রতুল। বিশুদ্ধকরণ ট্যাবলেট দিয়েও আশপাশের টিউবওয়েলের পানি পানে ইচ্ছা করছে না।
লক্ষ্মীপুর পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী নাহিদ-উজ জামান খান বলেন, সদর উপজেলার বিভিন্ন এলাকা বন্যার পানিতে ভাসতে। তবে পানি কমতে শুরু করেছে। রায়পুর ও রামগঞ্জ উপজেলায় উল্লেখযোগ্যভাবে পানি কমেছে। নদীতে ভাটা পড়লেই দ্রুত পানি নিষ্কাশনের জন্য মজুচৌধুরীর হাট এলাকার দুটি স্লুইচ গেইটের কপাটগুলো খুলে দেওয়া হয়। গেটগুলো আমরা সার্বক্ষণিক পর্যবেক্ষণ করছি।
অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) জেপি দেওয়ান বলেন, ৭ লাখেরও বেশি মানুষ লক্ষ্মীপুরে পানিবন্দি রয়েছে। এরইমধ্যে আমরা ৭৮৯ মেট্রিক টন চাল ও ২০ লাখ ৭০ হাজার টাকা বিতরণ করেছি। এছাড়া শুকনো খাবারও বিতরণ করা হয়েছে। পানি বিশুদ্ধকরণের জন্য ২০ লাখ ট্যাবলেট বিতরণ করা হয়েছে। আমরা আরও ২০ লাখ টাকা বরাদ্দ পেয়েছি। ওই টাকা বিতরণে কার্যক্রম হাতে নেওয়া হচ্ছে।
২৩ আগস্ট থেকে নোয়াখালীর বন্যার পানি রহমতখালী খাল, ওয়াপদা খাল ও ভুলুয়া খাল দিয়ে লক্ষ্মীপুর জেলায় ঢুকে পড়ে। এতে সদর উপজেলাসহ জেলা বিভিন্ন এলাকায় বন্যা দেখা দেয়। বেসরকারি ও বিভিন্ন সংস্থার তথ্যমতে প্রায় ১০ লাখ মানুষ পানিবন্দি হয়ে দুর্বিষহ জীবনযাপন করছে। এরমধ্যে ৩০ হাজার মানুষ আশ্রয়কেন্দ্রে রয়েছে। অনেকেই আত্মীয় স্বজনদের বাড়িতে ঠাঁই নিয়েছেন। তবে সর্বাধিক মানুষ কষ্ট করে বাড়িতেই অবস্থান করছেন।