লাইভে এসে নিরাপত্তা চাইলেন বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের নেতা

প্রকাশিত: ১২:১৪ অপরাহ্ণ, এপ্রিল ২২, ২০২৫

জামালপুর প্রতিনিধি:

 

ফেসবুক লাইভে এসে নিজের ও পরিবারের নিরাপত্তা চেয়েছেন জামালপুর জেলার বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের আহ্বায়ক মীর ইছহাক হোসেন ইখলাস।

সোমবার (২১ এপ্রিল) রাত ১০টার দিকে নিজের ফেসবুক লাইভে এসে নিজের ও পরিবারের নিরাপত্তা চান তিনি। তার লাইভের ৫ মিনিটের ভিডিওটি ইতোমধ্যে ভাইরাল হয়েছে।

ফেসবুক লাইভে এসে মীর ইছহাক হোসেন ইখলাস বলেন, দীর্ঘ রক্তাক্ত আন্দোলনের মাধ্যমে ফ্যাসিস্ট সরকারকে আমরা পতন করেছি। কিন্ত দুঃখের বিষয় হচ্ছে, আজকে ৫ আগস্টের ৮ মাস পর আসামিরা আমার বাড়িতে রাতের গভীরে হামলা করতে আসছে।

গত ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে জামালপুর সদর উজেলার ৪নং মেস্টা ইউনিয়ন পরিষদের নৌকা প্রতীক নিয়ে চেয়ারম্যান নির্বাচন করা বদরুল হাসান বিদ্যুৎকে দায়ী করে আহ্বায়ক ইখলাস আরও বলেন, বিদ্যুতের বাবা, চাচা ও তার চাচাতো ভাই যারা আছে তারা সবাই আমার বাড়িতে হামলা করতে আসছে।

সমন্বয়কদের লাশ রাখবে না গুম করবে এই জাতীয় হুমকি দিচ্ছে। আমি বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের আহ্বায়ক হওয়া সত্ত্বেও আমার সাতে এ রকম আচরণের পরও প্রশাসনের টনক নড়ে না? স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা, আইন উপদেষ্টা আমাদের জীবনকে ফাঁসির মঞ্চে রেখে কেন আজকে তাদের সুযোগ করে দেওয়া হচ্ছে। আওয়ামী লীগকে বারবার নিষিদ্ধ করার পরও কেন নিষিদ্ধ করা হচ্ছে না। আজকে আমার বাড়িতে হামলা করার জন্য চক্রান্ত চালাইছে। হামলা করার জন্য পুরোপুরি প্ল্যান ছিল, পরবর্তীতে তারা হামলা চালাইতে পারে নাই।

তারা এখনো আত্মগোপনে থেকে আমাদাদের হুমকি দিচ্ছে, আমাদের রাখবে না, আমাদের এলাকায় থাকতে দিবে না। তাদের কত বড় সাহস আওয়ামী লীগের দোসররা এখানো আমাদের ওপর হামলা চালাইতে আসে, আমার বাবা-মা’র ওপর হমলা চালাইতে আসে। আমার বাবা-মা গ্রামে থাকে আমার জীবন ও পরিবারের জীবন সংকটাপন্ন।

লাইভে নৌকার প্রতীকের চেয়ারম্যান প্রার্থী বিদ্যুতের গ্রেপ্তার নিয়ে আহ্বায়ক ইখলাস বলেন, পুলিশ ও সরকার কত টাকার লেনদেন করে বিদ্যুৎকে গ্রেপ্তার করছে না? কেন আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের গ্রেপ্তার করা হচ্ছে না? এর জবাব দিতে হবে। কেন টাকা লেনদেনের বিনিময়ে আমাদের জীবনকে সংকটে ফেলছে।

এ সময় নাগরিক পার্টির আহ্বায়ক নাহিদ ইসলামকে উদ্দেশ্য করে আহ্বায়ক ইখলাস বলেন, আপনার এই নমনীয়তা আমাদের জীবন আজ কবরের দিকে ধাবিত হচ্ছে।

তিনি আইন উপদেষ্টা আসিফ নজরুলকে উদ্দেশ্য করেন বলেন, আপনি বারবার সুযোগ দিচ্ছেন এই আসামিদের, আপনি সুযোগ না দিলে আমার বাড়িতে হামলা চালানোর সুযোগ পেত না।

স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টাকে উদ্দেশ্য করে বলেন, আপনার পুলিশ প্রশাসন কি করে, প্রশাসন আমার ও জনগণের নিরাপত্তা দিতে ব্যর্থ। আমি বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের জামালপুর জেলার সর্বোচ্চ পদে থাকা সত্ত্বেও আমার বাড়িতে যদি হামলা চালানো হয়, পুলিশ প্রশাসনকে জানানো পরেও যদি তাদের টনক না নড়ে, তাহলে এই স্বাধীনতার কোনো দরকার নেই। আমার জীবনের বিনিময়ে হলেও আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ করা হোক। আসামিদের গ্রেপ্তার না করা পর্যন্ত পুলিশ সুপারের কার্যালয়ের সামনে আমরণ অনশনের ঘোষণা দেন তিনি।

এদিকে বিষয়টি নিয়ে কথা বলার জন্য জেলা বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের আহ্বায়ক মীর ইছহাক হোসেন ইখলাসের মোবইলে একাধিকবার কল দিলেও তিনি ধরেননি।

তবে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের আহ্বায়ক মীর ইছহাক হোসেন ইখলাসের বড় ভাই ইকবাল হোসেন বলেন, আমাদের বাড়ির পাশের একটি জমিতে মাটি ভরাট করার সময় প্রতিবেশী সদর উপজেলা যুবলীগের ক্রীড়া সম্পাদক বদরুল হাসান বিদ্যুতের বাবা হাতেম আলী টিকাদার ও তার চাচা লতিফ টিকাদারসহ আরও অনেক লোকজন আমার বাবা ও ভাইকে মাটি ভরাট করতে বাঁধা দেয়। পরে তারা লোকজন নিয়ে আমার বাবা ও ছোট ভাইকে ধাওয়া করে। আমার পরিবারের লোকজনকে না পেয়ে বিদ্যুতের লোকজন আমাদের বাড়িতে গিয়ে হামলার চেষ্টা করে। তারা বিভিন্ন জায়াগা থেকে আমাদের বিভিন্ন ধরনের হুমকি দিয়ে যাচ্ছে।

জমালপুর সদর উপজেলা যুবলীগের ক্রীড়া সম্পাদক বদরুল হাসান বিদ্যুতের মোবাইলে একাধিকবার কল দিলে তা বন্ধ পাওয়া যায়। তাই তার মন্তব্য নেয় যায়নি।

জামালপুর সদর থানার ভারপাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবু ফয়সল মো. আতিক বলেন, মোবাইলের মাধ্যমে ঘটনা জেনেছি। ইতোমধ্যে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছে পুলিশ। অভিযুক্তদের বাড়িতে কাউকে পাওয়া যায়নি। এখনো পর্যন্ত কোনো লিখিত অভিযোগ পাইনি, অভিযোগ পেলে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।