লালমনিহাট প্রতিনিধি:
লালমনিরহাটের আদিতমারী উপজেলায় মোটরসাইকেলের টাকা নিয়ে বিরোধে ফরহাদ আলী (১৬) নামে এক স্কুলছাত্রকে কুপিয়ে হত্যা করা হয়েছে। বৃহস্পতিবার (৬ জুন) দুপুরে উপজেলার ভাদাই ইউনিয়নের বড়াবাড়ি রুহানী নগরের একটি নালা থেকে তার মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ।
নিহত ফরহাদ আলী ভাদাই ইউনিয়নের শিববাড়ি এলাকার গরু ব্যবসায়ী শাহাজান আলীর ছেলে এবং সারপুকুর উচ্চ বিদ্যালয়ের দশম শ্রেণির ছাত্র।
এদিকে হত্যায় অভিযুক্ত মধু চন্দ্রকে (১৮) গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। তিনি ভাদাই ইউনিয়নের বড়াবাড়ি রুহানীনগর এলাকার মৃত সুবাশ চন্দ্রের ছেলে।
পুলিশ ও স্থানীয়রা জানান, মধু চন্দ্র শিশুকালে বাবাকে হারান। মায়ের অন্যত্র বিয়ে হয়ে যায়। এরপর চাচার বাড়িতে বড় হন তিনি। কিশোর বয়স থেকে নারায়ণগঞ্জে এমপি শামীম ওসমানের ভাই সেলিম ওসমানের কারখানায় কাজ করতেন। মাঝে মাঝে বাড়ি আসলেও বাহিরে থাকায় তার আচরণে বেশ পরিবর্তন দেখতে পান স্থানীয়রা। এলাকায় আসলেও চুরি করে পুনরায় ঢাকা চলে যেতেন। কয়েক মাস আগে বাড়ি ফিরে একটি মোটরসাইকেল ক্রয় করে ব্যবহার করেন মধু চন্দ্র।
পরে সেই মোটরসাইকেলটি বিক্রি করেন পাশের গ্রাম শিববাড়ির শাহাজান আলীর ছেলে ফরহাদের কাছে। সেই মোটরসাইকেলের টাকা লেনদেন নিয়ে মনোমালিন্য হয় তাদের মধ্যে। মঙ্গলবার সন্ধ্যায় মোটরসাইকেল নিয়ে বাড়ি থেকে বের হলে আর ফিরেনি স্কুলছাত্র ফরহাদ আলী। ছেলের সন্ধান না পেয়ে আদিতমারী থানায় সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেন ফরহাদের বাবা। সেই জিডির সূত্র ধরে অনুসন্ধানে নামে থানা পুলিশ। প্রথম দিকে ফরহাদের ব্যবহৃত মোবাইলটি মধু চন্দ্রের কাছ থেকে উদ্ধার করে পুলিশ। বৃহস্পতিবার দুপুরে মধুর দেওয়া তথ্য মতে নিজ বাড়ি থেকে অস্ত্র ও পাশের নালা থেকে ফরহাদের বস্তাবন্দি মরদেহ উদ্ধার করা হয়। এ ঘটনায় ফরহাদকে হত্যার অভিযোগে মধু চন্দ্রকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ।
স্থানীয় সুবল চন্দ্র বর্মন বলেন, ছোটবেলায় বেশ ভালোই ছিল মধু চন্দ্র। নারায়ণগঞ্জে কাজে গিয়ে তার উচ্ছৃঙ্খল আচরণ দেখা যায়।
আদিতমারী থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি-তদন্ত) রফিকুল ইসলাম বলেন, নিখোঁজের অনুসন্ধানে নেমে প্রথমে তার ব্যবহৃত মোবাইল উদ্ধার করা হয়। পরে আটক মধুর দেওয়া তথ্যমতে ফরহাদের বস্তাবন্দি মরদেহ তার বাড়ির পাশের নালা থেকে উদ্ধার করে লালমনিরহাট সদর হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে। ফরহাদকে বাড়ি থেকে ডেকে এনে দা দিয়ে কুপিয়ে হত্যা করে তার মরদেহ নালায় ফেলে দেওয়ার কথা স্বীকার করেছেন গ্রেপ্তার মধু চন্দ্র। তবে মোটরসাইকেলটি এখনো উদ্ধার করা সম্ভব হয়নি। এ ঘটনায় হত্যা মামলা দায়ের করা হবে।