গোপালগঞ্জ প্রতিনিধি:
মাস চারেক আগে মৃত্যু হয় গোপালগঞ্জের কোটালীপাড়ার বাসিন্দা চাঁদ মিয়ার। তাঁর দাফন হয়েছিল উপজেলার আমতলী ইউনিয়নের পশ্চিম চিত্রাপাড়া কবরস্থানে। গতকাল বুধবার ভোরে এলাকায় ছড়িয়ে পড়ে, ওই কবরস্থান থেকে তিনটি মরদেহ চুরি গেছে। এ সংবাদ শুনে সকালে সেখানে আসেন চাঁদ মিয়ার ছেলে মহাসিন ইসলাম। তিনিসহ স্বজনের কান্নায় গোটা এলাকায় শোকাবহ পরিবেশ দেখা দেয়।
মহাসিন ইসলাম বলেন, ‘আমার বাবা চার মাস আগে মারা যান। চিত্রাপাড়া কবরস্থানে তাঁকে দাফন করি। আজ (বুধবার) সকালে লাশ চুরির খবর পেয়ে এখানে এসে দেখি, বাবার কবর খোঁড়া; ভেতরে মরদেহ নেই।’
সরেজমিন পশ্চিম চিত্রাপাড়া কবরস্থানের ছয়টি কবর খোঁড়া অবস্থায় দেখা যায়। এর মধ্যে চিত্রাপাড়া গ্রামের লিয়াকত আলী, চাঁদ মিয়া ও বায়েজিদ হোসেনের কবরে মরদেহ ছিল না। তাদের মধ্যে লিয়াকত আলী আমতলী ইউপির ১ নম্বর ওয়ার্ডের সাবেক সদস্য। ইউপি সদস্য থাকা অবস্থায়ই ৯ মাস আগে তাঁর মৃত্যু হয় বলে জানান বড় মেয়ে সালমা খানম। তিনি কান্নাজড়িত কণ্ঠে বলেন, ‘বাবা জীবনে কারও ক্ষতি করেননি। বুধবার ভোরে খবর পাই, কবরস্থান থেকে মরদেহ চুরি হয়েছে। তাৎক্ষণিক এখানে ছুটে এসেছি। পরে দেখতে পাই, বাবার কবর খোঁড়া। কবরের পাশেই কাফনের কাপড়, শরীরের চামড়া ও চুল-দাড়ি পড়ে আছে। হাড়গুলো নিয়ে যাওয়া হয়েছে।’
একই কবরস্থানে মা-বাবার দাফন হয়েছে মুকুল মিয়ার। তিনি প্রতিদিন ফজরের নামাজ পড়ে তাদের কবর জিয়ারতে আসেন। মুকুলের ভাষ্য, ‘আজ (বুধবার) কবরস্থানে ঢুকতেই দেখি একটি কবর খোঁড়া। আশপাশে তাকিয়ে দেখি সব মিলিয়ে ছয়টি কবর খোঁড়া। এর মধ্যে তিনটি কবরে লাশ নেই।’ তখনই তিনি এলাকাবাসীকে বিষয়টি জানান।
চিত্রাপাড়া কবরস্থান পরিচালনা কমিটির সাধারণ সম্পাদক এম আবুল মুনসুর মুন্সী মুনজু বিষয়টি খুবই দুঃখজনক উল্লেখ করে বলেন, অতীতে এই কবরস্থানে এমন কোনো ঘটনা ঘটেনি। তারা কোটালীপাড়া থানায় অভিযোগ দেবেন।
১ নম্বর ওয়ার্ডের বর্তমান সদস্য সেলিম মিয়া বলেন, তারা এসে ছয়টি কবর খোঁড়া দেখেছেন। এর মধ্যে সাবেক ইউপি সদস্য লিয়াকত আলী, চিত্রাপাড়া গ্রামের বায়েজিদ হোসেন ও চাঁদ মিয়ার কঙ্কাল পাওয়া যায়নি।
কোটালীপাড়া থানার ওসি মো. আবুল কালাম আজাদ বলেন, লিখিত অভিযোগ পেলে তদন্তের পর দোষী ব্যক্তিদের শনাক্ত করে ব্যবস্থা নেবেন।
