লিভারপুলের শিরোপার হাতছানি, অ্যানফিল্ডের টিকিট বিক্রি হচ্ছে ৫ লাখ টাকায়

ক্রীড়া ডেস্ক:
দরকার মাত্র আর একটা পয়েন্ট। সেটা লিভারপুল পেয়ে যেতে পারে আজ রাতে, অ্যানফিল্ডে টটেনহামের বিপক্ষে ম্যাচেই। ড্র করতে পারলেই প্রিমিয়ার লিগের চ্যাম্পিয়ন হয়ে যাবে লিভারপুল, অ্যানফিল্ডে হবে শিরোপা-উৎসব।
মাঠে বসে সেই উৎসব দেখার, সেই উৎসবে যোগ দেওয়ার সুযোগ হারাতে চাইছেন না লিভারপুল সমর্থকেরা। আর সেই সুযোগটাই নিচ্ছে কালোবাজারিরা। লিভারপুলের সম্ভাব্য শিরোপা-উৎসবের ম্যাচের অনেক টিকিট কালোবাজারে বিক্রি হচ্ছে তিন হাজার পাউন্ডের বেশি দামে, বাংলাদেশি মুদ্রায় যা পাঁচ লাখ টাকার বেশি!
১৯৯০ সালের পর এই প্রথম অ্যানফিল্ডে সমর্থকদের সামনে শিরোপা–উৎসবের সুযোগ পাচ্ছে লিভারপুল। সর্বশেষ তারা যেবার ইংল্যান্ডের চ্যাম্পিয়ন হয়েছিল, ২০১৯-২০ মৌসুমে ইয়ুর্গেন ক্লপের অধীনে, করোনাভাইরাস মহামারির কারণে সেই সময় খালি গ্যালারিতেই উদ্যাপন করতে হয়েছিল তাদের।
ফলে লিভারপুল সমর্থকদের একাধিক প্রজন্ম অ্যানফিল্ডে বসে দলের শিরোপা উৎসব দেখার সুযোগ পায়নি, যে সুযোগ এসেছে এবার। খুব স্বাভাবিকভাবেই এই সুযোগ হারাতে চাইছে না তারা। ফলে রোববারের ম্যাচের টিকিটের চাহিদা এখন আকাশছোঁয়া।
এ সুযোগটাই নিচ্ছে কালোবাজারিরা। স্পেনের মাদ্রিদভিত্তিক ওয়েবসাইট ‘লাইভফুটবলটিকিটস’-এ অ্যানফিল্ডের মেইন স্ট্যান্ডের ৬১ পাউন্ড মূল্যের টিকিট বিক্রি হচ্ছে ৩ হাজার ২৪৮.৭০ পাউন্ডে! বাংলাদেশি মুদ্রায় যা প্রায় পাঁচ লাখ টাকার বেশি।
এমনকি অ্যানফিল্ডের অ্যাওয়ে সেকশনের ৩০ পাউন্ড মূল্যের টিকিটের সর্বনিম্ন দাম হাঁকা হচ্ছে ৪১৪.৭০ পাউন্ড। মানে প্রায় ৭০ হাজার টাকার মতো!
৬০ হাজার ৫০০ দর্শক ধারণক্ষমতা সম্পন্ন অ্যানফিল্ডে এই ম্যাচের সব অফিশিয়াল টিকিট অবশ্য এরই মধ্যে বিক্রি হয়ে গেছে। ক্লাব কর্তৃপক্ষ সমর্থকদের অনুরোধ করেছে, অনানুষ্ঠানিক কোনো উৎস থেকে টিকিট না কেনার জন্য—এগুলো নকল বা ক্লোনড হতে পারে।
ধারণা করা হচ্ছে, ইংল্যান্ড ও ইংল্যান্ডের বাইরে সক্রিয় একাধিক সংগঠিত অপরাধ চক্র কালোবাজারে এই টিকিটবাণিজ্যে যুক্ত। গত বছর জুলাই ও নভেম্বর মাসে লিভারপুলের সদস্যদের জন্য নির্ধারিত অনলাইন টিকিট সাইটে বড়সড় সাইবার হামলা হয়। যে হামলার লক্ষ্য ছিল অবৈধভাবে টিকিট জোগাড় করা।
গত মৌসুমেই এমন ১ লাখ ভুয়া অনলাইন অ্যাকাউন্ট বন্ধ করে দেয় ক্লাবটি। সন্দেহজনক কার্যক্রমের ভিত্তিতে ১ হাজার ৫০০টি টিকিট বাতিল করা হয়, ৪৭ জনকে আজীবনের জন্য অ্যানফিল্ডে নিষিদ্ধ করা হয় এবং ১৩৬ জনকে অনির্দিষ্টকালের জন্য বরখাস্ত করা হয়। তবে তা–ও কালোবাজারিদের ঠেকাতে পারছে না লিভারপুল।
এমনিতে লিভারপুলের পুরো মৌসুমের টিকিটধারী আছেন ২৮ হাজার জন। প্রতিটি ম্যাচে আরও ১১ হাজার হসপিটালিটি টিকিট বরাদ্দ থাকে। সফরকারী দলের জন্য বরাদ্দ প্রায় তিন হাজার টিকিট। বাকি যে টিকিটগুলো থাকে, সেগুলো লটারির মাধ্যমে ক্লাব সদস্যদের কাছে বিক্রি করা হয়, যে সদস্যরা বার্ষিক চাঁদা দেন ৩৭ থেকে ৪৬ পাউন্ড।