শরীয়তপুরে রাতের অন্ধকারে আ.লীগের কার্যালয়ে অগ্নিসংযোগ
নিউজ পোস্ট বিডি নিউজ পোস্ট বিডি
নিউজ পোস্ট বিডি
জেলা প্রতিনিধি,শরীয়তপুরঃ
শরীয়তপুরে রাতের অন্ধকারে ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের কার্যালয়ে আগুন দিয়েছে দুর্বৃত্তরা। আগুনে পুরো কার্যালয়টি পুড়ে ছাই হয়ে গেছে।সোমবার (১৫ এপ্রিল) দিবাগত রাত সাড়ে ৩টার দিকে শরীয়তপুর সদর উপজেলার বালাখানা নামক স্থানের পালং ইউনিয়ন আওয়ামী লীগ কার্যালয়ে এ ঘটনা ঘটে।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, বালাখানা নামক স্থানে দীর্ঘদিন যাবত একটি দোকান ঘর ভাড়া নিয়ে দলীয় কার্যালয় হিসেবে ব্যবহার করে আসছিল পালং ইউনিয়ন আওয়ামী লীগ। কয়েক দিন আগে স্থানীয় কিশোরদের মধ্যে মোটরসাইকেল সাইড দেওয়া নিয়ে হাতাহাতি হয়। বিষয়টি স্থানীয়রা মীমাংসা করে দেবেন বলে আশ্বাস দেয়। ধারণা করা হচ্ছে, ওই বিষয়টিকে কেন্দ্র করে সোমবার দিবাগত রাতে কে বা কারা কার্যালয়টিতে আগুন দেয়। রাত গভীর হওয়ায় কেউ টের না পেলেও সড়কে চলাচলকারী গাড়ি চালকরা ডাকাডাকি করলে স্থানীয়রা ফায়ার সার্ভিসকে খবর দিলে ফায়ার সার্ভিসের দুইটি টিম এসে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে। আগুনে আশপাশের কোনো প্রতিষ্ঠানের ক্ষতি না হলেও কার্যালয়ে থাকা চেয়ার, টেবিল, টিভিসহ পুরো ঘরটি পুড়ে ছাই হয়ে গেছে। এতে ইউনিয়ন আওয়ামী লীগ ও সকল অঙ্গসংগঠনের নেতাকর্মীদের মধ্যে ক্ষোভ বিরাজ করছে। সকালে ক্ষতিগ্রস্ত কার্যালয়টি পরিদর্শনে এসে মামলা করবেন বলে জানিয়েছেন উপজেলা আওয়ামী লীগের নেতৃবৃন্দ।
পালং ইউনিয়ন ছাত্রলীগের যুগ্ম আহ্বায়ক মো. মিরাজ হাসান বলেন, গত রাতে কে বা কারা আওয়ামী লীগের কার্যালয়ে আগুন দিয়েছে। কার্যালয়ের ভেতর বঙ্গবন্ধু, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও অপু ভাইয়ের (শরীয়তপুর-১ আসনের সংসদ সদস্য ইকবাল হোসেন অপু) ছবি ছিল। ওই ছবিগুলোও পুড়ে গেছে। পরিকল্পনা করেই দুর্বৃত্তরা আগুন দিয়েছে। আমরা ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত করে দোষীদের বিচার দাবি করছি।
পালং ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আলমগীর পেদা বলেন, দলীয় কার্যালয়ে কে বা কারা আগুন দিয়েছে, তা এই মুহূর্তে বলতে না পারলেও এটা নিশ্চিত যে পরিকল্পনা করেই আগুন দেওয়া হয়েছে। কারণ দলীয় কার্যালয়টি ছাড়া আশপাশের কোনো ঘরের ক্ষতি হয়নি। অথচ কার্যালয়টি পুড়ে ছাই হয়ে গেছে। উপজেলা আওয়ামী লীগের নেতৃবৃন্দ এসেছেন, তাদের সঙ্গে কথা বলে আমরা আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করবো।
শরীয়তপুর সদর উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক গোলাম মোস্তফা বলেন, কয়েক দিন আগে স্থানীয় কিশোরদের একটি বিষয় নিয়ে হাতাহাতি হয়। সাধারণত ছোটদের এই সমস্ত ঝামেলা নিয়ে পরবর্তীতে বড়দের মধ্যে দ্বন্দ্ব শুরু হয়। বিষয়টি একপর্যায়ে দলীয় পর্যায়ে চলে যায়। আমরা সরাসরি না দেখলেও ধারণা করছি ওই বিষয়টি কেন্দ্র করেই কেউ আওয়ামী লীগ কার্যালয়ে আগুন দিয়েছে। বিষয়টি নিয়ে আমরা থানায় সাধারণ ডায়েরি করবো। পুলিশ তদন্ত করে বিষয়টি মামলায় রূপ দিয়ে দুর্বৃত্তদের আইনের আওতায় নিয়ে আসবেন বলে প্রত্যাশা আমাদের।
ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স শরীয়তপুরের ভারপ্রাপ্ত স্টেশন কর্মকর্তা শংকর বিশ্বাস বলেন, গতকাল রাত ৩টা ২০ মিনিটে খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে গিয়ে আওয়ামী লীগ কার্যালয়ের আগুন নিয়ন্ত্রণে এনেছে ফায়ার সার্ভিসের দুইটি টিম। আগুনের সূত্রপাত কীভাবে হয়েছে তা তদন্ত সাপেক্ষে বলা যাবে। ফায়ার সার্ভিসকে খবর দিতে দেরি হওয়ায় পুরো কার্যালয়টি পুড়ে ছাই হয়ে গেছে।
পালং মডেল থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মেজবাহ উদ্দিন আহমেদ বলেন, গতকাল রাতে পালং ইউনিয়ন আওয়ামী লীগ কার্যালয়ে আগুন লেগেছে এমন খবর পেয়ে দায়িত্বরত মোবাইল টিম ঘটনাস্থলে গিয়েছিল। এ ঘটনায় এখনো কেউ থানায় অভিযোগ করেনি। অভিযোগ পেলে তদন্ত করে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।