বিনোদন ডেস্ক:
বলিউডের অন্যতম জনপ্রিয় অভিনেত্রী মনীষা কৈরালাকে ৯০ দশকের অন্যতম সফল অভিনেত্রী বলা যায়। তিনি ১৯৯১ সালে সওদাগর সিনেমার মাধ্যমে তার বলিউডে আত্মপ্রকাশ করেছিলেন এবং তখন থেকে তিনি অপ্রতিরোধ্য ছিলেন। তারপর থেকে অনেক সফল সিনেমা উপহার দিয়েছেন এ অভিনেত্রী।
সম্প্রতি একটি এক্সক্লুসিভ সাক্ষাৎকারে শেয়ার করেছেন তার জীবনের নানা অজানা বিষয়। সেখানে বাদ যায়নি শাহরুখ খানের সঙ্গে তার গভীর সখ্যতার কথাও।
এনডিটিভির প্রতিবেদন অনুযায়ী, পিঙ্কভিলাকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে মনীষা কৈরালা জানান, সহ অভিনেতা শাহরুখ খান নাকি একসময় তাকে মুম্বাইয়ে বাড়ি কেনার পরামর্শ দিয়েছিলেন।
শাহরুখ খানের সঙ্গে ১৯৯৫ সালে প্রথম জুটি বাঁধেন মনীষা। তারা প্রেম লালওয়ানি পরিচালিত ‘গুড্ডু’ সিনেমায় জুটি হয়ে কাজ করেছিলেন। এরপর ১৯৯৮ সালে ‘দিল সে’ সিনেমায় জুটি হয়ে জনপ্রিয়তা পায় শাহরুখ-মনীষা জুটি। সেই সিনেমা বক্স অফিসে যেমন বাজিমাত করেছিল তেমনি দর্শক-সমালোচকদের প্রশংসাও কুড়িয়েছিল। এর গানগুলোও পেয়েছিল আকাশ ছোঁয়া জনপ্রিয়তা।
অনেকে এই সিনেমাকে বলিউডের একটি ক্লাসিক সংযোজন বলে মনে করেন। তবে এরপর আর একসঙ্গে দেখা যায়নি এই জুটিকে। যদিও ১৯৯৮ সালে গোবিন্দ ও মনীষা জুটির ‘আচানক’ সিনেমায় ক্যামিও চরিত্রে হাজির হয়েছিলেন শাহরুখ খান। সেটাই তাদের একসঙ্গে শেষ কাজ করা।
সিনেমায় জুটি হিসেবে নিয়মিত না হলেও পর্দার বাইরে ক্যারিয়ারের শুরু থেকেই খুব ভালো বন্ধুত্ব ছিল শাহরুখ ও মনীষার। তা এখনো বহাল। সেই বন্ধুত্বের অনেক অজানা গল্প জানিয়েছেন মনীষা।
এই অভিনেত্রী বলেন, ‘শাহরুখ আমার পুরনো বন্ধু। যখন সে তার মাউন্ট মেরি অ্যাপার্টমেন্টে থাকত তখন থেকেই আমাদের ভালো সম্পর্ক। আমরা একসঙ্গে চাটাইয়ে বসে আড্ডা দিতাম। বন্ধুত্বগুলো উপভোগ করতাম।’
তিনি আরও বলেন, ‘যদিও সিনেমা করতে আমি শাহরুখের এক বা দুই বছর আগে মুম্বাইয়ে এসেছিলাম, কিন্তু আমাদের বন্ধুত্ব অনেক জমজমটা ছিল। শাহরুখ ছিল প্রথম ব্যক্তি যে আমাকে মুম্বাইয়ে বাড়ি কেনার পরামর্শ দিয়েছিল। সে বলেছিল, ‘মানীষা, আমরা দুজনেই বাইরে থেকে এসেছি। কিন্তু মুম্বাইয়ে থাকতে হলে তোমার একটা নিজের জায়গা দরকার। এতে মনে হবে তুমি তোমার বাড়িতেই আছো।’
এছাড়া সাক্ষাৎকারে মনীষা অভিনেত্রী রেখার সঙ্গেও তার বন্ধুত্বের কথা স্মরণ করেন।
তিনি বলেন, ‘রেখাজি’র সঙ্গে আমার বন্ধুত্ব গড়ে উঠেছিল বেশ পরে। প্রথমে আমি তার কাছে তেমন আন্তরিক হতে পারছিলাম না। কিন্তু পরে যখন ঘনিষ্টতা বাড়লো দেখলাম তিনি খুবই আন্তরিক খোলামেলা স্বভাবের মানুষ। আমি মুগ্ধ হয়ে গিয়েছিলাম তার প্রতি।’
তিনি আরও জানান, রেখার মধ্যে অনেক জ্ঞান, ব্যক্তিত্ব, শিল্পীসত্ত্বা, বুদ্ধিমত্তা, সহানুভূতি এবং সৌন্দর্য রয়েছে। তিনি বলিউডের এক অমীমাংসিত ও অনন্য প্রতিভা। তার কাছাকাছি থাকার মধ্যে মনের ভেতরে দারুণ আনন্দ কাজ করে।’
‘আমি প্রথমবার যখন রেখাজি’কে মেকআপ ছাড়া দেখেছিলাম তার সৌন্দর্যে মুগ্ধ হয়েছিলাম। তিনি যেভাবে তার আসল সৌন্দর্যকে প্রকাশ করেছিলেন, সেটা সত্যিই অসাধারণ ছিল’- যোগ করেন মনীষা।
বর্তমানে বেশ কিছু কাজে যুক্ত হতে চলেছেন মনীষা। ক্যান্সার জয় করে ফেরা এই চিরকুমারী অভিনেত্রী অভিনয়ের সঙ্গেই আমৃত্যু থেকে যেতে চান বলে জানান।
মনীষা কৈরালাকে শেষ দেখা গিয়েছিল হীরামান্ডি: দ্য ডায়মন্ড বাজার। সঞ্জয় লীলা বনসালির এ সিনেমাটি গতবছরের অন্যতম জনপ্রিয় ওয়েব সিরিজ ছিল। মনীষা কৈরালার পাশাপাশি, সিরিজটিতে সোনাক্ষী সিনহা, অদিতি রাও হায়দারি, শারমিন সেগাল, রিচা চাড্ডা এবং সানজিদা শেখ প্রধান চরিত্রে অভিনয় করেছেন। ফরিদা জালাল, ফারদিন খান এবং তাহা শাহ বদুশাও এই প্রকল্পে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছেন।