শিল্পকলায় মাঝপথে বন্ধ করে দিতে হলো নাটক

প্রকাশিত: ১০:৪৬ পূর্বাহ্ণ, নভেম্বর ৩, ২০২৪

নিজস্ব প্রতিবেদক:

‘ফেসবুকে কটূক্তি’র জের ধরে বাইরে বিক্ষোভকারীদের দাবির প্রেক্ষিতে শিল্পকলা একাডেমির জাতীয় নাট্যশালার মূল মিলনায়তনে ‘নিত্যপুরাণ’ নাটকের শো চলার মাঝপথেই সেটি থামিয়ে দিতে বাধ্য হলেন নতুন মহাপরিচালক সৈয়দ জামিল আহমেদ।

শনিবার (২ নভেম্বর) সন্ধ্যা ৭টা থেকে নাটকটি চলা অবস্থায় তা বন্ধ করে দেওয়া হয়। নাটকটি রচনা ও পরিচালনা করেন মাসুম রেজা।
জানা যায়, নাটকের শো শুরুর আগে শিল্পকলার গেটে বিক্ষোভকারীরা নাটক বন্ধের জন্য ব্যানার ঝুলিয়ে দেন। এরপর তারা ‘দেশ নাটক’র দলনেতা এহসানুল এজাজ বাবুকে তাদের হাতে তুলে দেওয়ার দাবি জানান এবং নাটকটি বন্ধ করে দিতে বলেন।
বিক্ষোভকারীদের দাবি, এহসানুল এজাজ ফেসবুকে বর্তমান সরকার নিয়ে কটাক্ষ করেছেন। এক পর্যায়ে শিল্পকলার প্রধান সৈয়দ জামিল সেখানে গিয়ে মধ্যস্থতার চেষ্টা করে ব্যর্থ হন। বিক্ষোভকারীদের কোনোভাবে শান্ত করতে না পেরে তিনি মঞ্চে চলতে থাকা নাটকটির মাঝখানে ওঠেই সেটি বন্ধ করে দেওয়ার কথা বলেন।

মঞ্চে ওঠে শিল্পকলা একাডেমির মহাপরিচালক বলেন, ‘এতোক্ষণ (ঠেকানোর) যুদ্ধ করলাম তো, এখন যেটা হবে- এখানে এসে উত্তেজিত জনতা আগুন দিয়ে দেবে। সেটি আরো ভয়ঙ্কর হবে।’

ঘটনার বিবরণ জানতে চাইলে সেখানে থাকা নাটকটির রচয়িতা ও নির্দেশক মাসুম রেজা বলেন, ‘আসলে পরিস্থিতি এমন হয়ে গিয়েছিল এবং জামিল ভাই এসে বললেন বন্ধ করতে হবে, কারণ তিনি ওদের বোঝাতে পারছিলেন না। তখন নাটকটা বন্ধ করে দেওয়া ছাড়া আমরা আর কিছু ভাবতে পারিনি।’
এই নাট্যকার ও নির্দেশক আরও বললেন, ‘আজ আমাদের দলের নিত্যপুরাণ নাটকের শো ছিল। এই সময়ে আমরা যখন টিকিট বিক্রি করছি, সেই সময় ওখানে প্রায় ২০-২২ জন এসে একটা ব্যানার টানান। তাতে লেখা ছিল, ‘দেশ নাটক’র বাবুকে আমাদের হাতে তুলে দিন।’ বিষয়টি শিল্পকলার ডিজি জামিল ভাইকে জানালে উনি দ্রুতই আসেন। উনি এসে ওদের সঙ্গে কথা বললেন, শান্ত করলেন এবং আমাকে এসে বললেন, আপনারা নাটক করেন, ভালো একটা শো করেন।’

এরপর শো শুরু হলেও ঘটনা থামেনি। মাসুম রেজার ভাষায়, ‘কিছুক্ষণ পরে তারা আসেন এবং ওই একই দাবি জানাতে থাকেন যে, ‘আমরা এই নাটক হতে দেবো না যদি উনি (মানে বাবু) এখানে থাকেনৃ’। এই অবস্থার ভেতরেই নাটক চলছে। জামিল ভাই চেষ্টা করেছেন। উনার সঙ্গে শিল্পকলা একাডেমির আরো যারা আছেন তারা সবাই মিলে আমাদের থিয়েটারের নেতৃত্বে যারা আছেন- কামাল বায়েজিদ, তপন হাফিজ, শাহ আলম এরাও অনেক চেষ্টা করেছেন। কিন্তু তারা সেটা মানছিলেন না। পরে জামিল ভাই এসে মঞ্চে ওঠে ঘোষণা দিলেন, ‘আমরা খুবই দুঃখিত, এটার জন্য লজ্জিত যে- আমাদের এই শো টা বন্ধ করতে হচ্ছেৃ। তারপর আমরা শো টা বন্ধ করে চলে এসেছি।’