মোঃ সাইফুল ইসলাম
বাংলাদেশ জাতীয় সংসদের চিফ হুইপ নূর-ই-আলম চৌধুরী বলেছেন, স্থায়ী কমিটিগুলোতে শিশু অধিকার রক্ষায় সংসদ সদস্যদের ভূমিকা রাখার সুযোগ রয়েছে। সংসদীয় ককাসের সদস্যরা বিষয়ভিত্তিক সমস্যাগুলো চিহ্নিত করে দলীয়সহ বিভিন্ন ফোরামে আলোচনা করতে পারেন। তাদের সুচিন্তিত পরামর্শের মাধ্যমে শিশুদের অধিকার নিশ্চিত করা সহজ হবে।
সোমবার (৩ জুন) জাতীয় সংসদ ভবনের পার্লামেন্ট মেম্বারস ক্লাবে চাইল্ড ককাস ও ইউনিসেফের উদ্যোগে আয়োজিত ‘জাতীয় বাজেটে শিশুদের স্বার্থ রক্ষা: প্রাক-বাজেট ব্রিফিং’ শীর্ষক আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে চিফ হুইপ এসব কথা বলেন। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন বাংলাদেশ জাতীয় সংসদের ডেপুটি স্পিকার ও পার্লামেন্টারি ককাস অন চাইল্ড রাইটসের সভাপতি মো. শামসুল হক টুকু এমপি।
আলোচনা সভায় সংসদ সদস্য মো. আব্দুল আজিজ, আরমা দত্ত, মো. সিদ্দিকুর রহমান পাটোয়ারী, আশেক উল্লাহ রফিক, খাদিজাতুল আনোয়ার, অপরাজিতা হক, এইচ এম বদিউজ্জামান, নিলুফার আনজুম, মোছা. জান্নাত আরা হেনরী, আমাতুল কিবরিয়া কেয়া চৌধুরী, ফরিদা ইয়াসমিন, রুনু রেজা, শবনম জাহান, মোসা. ফারজানা সুমী, ফরিদুন্নাহার লাইলী, বেদৌরা আহমেদ সালাম, আব্দুল্লাহ নাহিদ নিগার এবং অনিমা মুক্তি গোমেজ অংশগ্রহণ করেন। এছাড়া ইউনিসেফ-বাংলাদেশের চিফ অব হেলথ মিসেস মায়া ভ্যান্ডেনেন্ট এবং বাংলাদেশে ইউনিসেফের ওয়াইসি রিপ্রেজেন্টেটিভ স্ট্যানলি গ্যুয়েভা বক্তব্য রাখেন।
চিফ হুইপ বলেন, তৃণমূল পর্যায়ে স্বাস্থ্যসেবা পৌঁছে দিতে কমিউনিটি ক্লিনিক ব্যাপক অবদান রাখছে। উপজেলায় ১০ বেডের মা ও শিশু হাসপাতাল রয়েছে। সংসদ সদস্যদের এসব স্বাস্থ্যকেন্দ্রের ব্যবস্থাপনা সম্পর্কে সজাগ থাকতে হবে। ইউনিসেফ উপজেলায় যে অর্থায়ন করছে সেগুলোর তদারকি করা গুরুত্বপূর্ণ। সরকারের বরাদ্দকৃত অর্থের সঠিক ব্যবহার নিশ্চিত করতে হলে সবাইকে এগিয়ে আসতে হবে।
তিনি আরও বলেন, উন্নত দেশের সাথে আমাদের সমস্যার পার্থক্য রয়েছে। বাংলাদেশ একটি জনবহুল দেশ। পর্যাপ্ত প্রশিক্ষণের মাধ্যমে এই জনসংখ্যাকে জনশক্তিতে রূপান্তর করতে হবে।
ডেপুটি স্পিকার মো. শামসুল হক টুকু বলেন, বর্তমান সরকার শিশুর সার্বিক কল্যাণ নিশ্চিত করতে শিশুর বিকাশ, শিশু নির্যাতন রোধ, বাল্য বিবাহ রোধ, শিশুর অন্ন-বস্ত্র-বাসস্থান নিশ্চিত করতে বদ্ধপরিকর। সরকারি বরাদ্দপ্রাপ্ত প্রতিটি মন্ত্রণালয়কে শিশুদের জন্য নির্ধারিত বাজেট সুনির্দিষ্ট পরিকল্পনা অনুযায়ী সঠিকভাবে বাস্তবায়ন করতে হবে। এক্ষেত্রে চাইল্ড ককাস গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতে পারে।
তিনি বলেন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান সংবিধানে নারী-পুরুষের সমানাধিকার এবং শিশুদের অধিকার নিশ্চিত করে গিয়েছেন। তার কন্যা বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সামাজিক নিরাপত্তা খাতে বিভিন্ন ভাতা, শিক্ষার্থীদের মাঝে উপবৃত্তি প্রদান ও শিক্ষা উপকরণ বিতরণের মাধ্যমে শিশুদের বিদ্যালয়মুখী করার বহুমুখী পরিকল্পনা গ্রহণের ফলে শিক্ষার হার বৃদ্ধি পেয়েছে। বর্তমান সরকার শিশুর বিকাশ ও শিক্ষা ব্যবস্থার উন্নয়নের মাধ্যমে আগামীর উন্নত বাংলাদেশ ও ডেল্টা প্রকল্প বাস্তবায়নের স্বপ্ন দেখছে।
ইউনিসেফ ২০২৩-২৪ অর্থবছরের জাতীয় বাজেটের একটি বিস্তৃত বিশ্লেষণ সংসদ সদস্যদের সামনে উপস্থাপন করে, যেখানে শিক্ষা, স্বাস্থ্য ও সামাজিক সুরক্ষার মতো গুরুত্বপূর্ণ খাতে বরাদ্দ ও বরাদ্দকৃত অর্থ বাস্তবায়নের ক্ষেত্রে বিগত বছরগুলোর চিত্র তুলে ধরা হয়। উপস্থাপনায় আসন্ন বাজেটে এই তিনটি গুরুত্বপূর্ণ খাতে বিনিয়োগের প্রয়োজনীয়তা এবং এগিয়ে যাওয়ার ক্ষেত্রে সুপারিশমালাও তুলে ধরা হয়। অনুষ্ঠানে বিভিন্ন জেলা থেকে আগত শিশু প্রতিনিধি, অর্থ মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা, সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা ও গণমাধ্যমকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।