শিশু অপহরণ ও হত্যা: ৫ আসামির যাবজ্জীবন কারাদণ্ড

প্রকাশিত: ১২:৫২ অপরাহ্ণ, অক্টোবর ৩০, ২০২৪

মুন্সীগঞ্জ প্রতিনিধি:

মুন্সীগঞ্জে শিশু আবু তকিরকে অপহরণ করে হত্যার ঘটনায় করা মামলায় ৫ আসামির যাবজ্জীবন সশ্রম কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। একই সঙ্গে ১০ হাজার টাকা অর্থদণ্ড অনাদায়ে আরও এক বছরের বিনাশ্রম কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে।

গতকাল মঙ্গলবার বিকেল সাড়ে ৩টার দিকে অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ দ্বিতীয় আদালতের বিচারক ড. মো. আলমগীর এ আদেশ দেন। রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী সিরাজুল ইসলাম পল্টু এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্ত আসামিরা হলেন– সদর উপজেলার ফুলতলা গ্রামের সামছুল হক প্রধানের ছেলে রবিউল (২২), একই গ্রামের মৃত হযরত আলীর ছেলে আবুল (২২), রিয়াজুল হক প্রধানের ছেলে ময়না (২৭), ইসহাকের ছেলে আনোয়ার ও দক্ষিণ চরমসুরা গ্রামের মন্নান খানের ছেলে হান্নান (২৭)। আদালতে রায় ঘোষণার সময় আসামি আবুল, ময়না ও আনোয়ার উপস্থিত ছিলেন। পরে তাদের পুলিশ হেফাজতে নেওয়া হয়। অপর আসামি রবিউল ও হান্নান পলাতক রয়েছেন বলে জানিয়েছেন আদালতের বেঞ্চ সহকারী হাছান ছারওয়ার্দী।

মামলা ও আদালত সূত্রে জানা গেছে, ২০১০ সালের ৩১ আগস্ট মামলার বাদী ঝর্ণা বেগম ও নাসির উদ্দিন বেপারি তাদের ছেলে আবু তকিরকে (১০) ফুলতলা গ্রামের বাড়িতে রেখে সকালে মুন্সীগঞ্জ শহরে কেনাকাটা করতে আসেন। পরে বিকেলে বাড়িতে ফিরে ছেলে তকিরকে খুঁজে না পেয়ে পরদিন সদর থানায় অজ্ঞাতপরিচয় আসামি করে একটি অপহরণ মামলা করেন তারা। এর পর তদন্তে নামে পুলিশ। প্রতিবেশী অর্ণব নামের এক শিশু নিখোঁজ হওয়ার আগে তকিরকে প্রতিবেশী রবিউলের সঙ্গে কথা বলতে দেখেছে– এমন তথ্য পেয়ে পুলিশ রবিউলকে আটক করলে অপহরণের পর হত্যার ঘটনা প্রকাশ হয়ে পড়ে। এর পর আসামি ময়নার বাড়ির গোয়ালঘরের গোবরের গর্ত থেকে তকিরের লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। পরে আসামি রবিউল দোষ স্বীকার করে আদালতে জবানবন্দি দিলে এর আলোকে অপর আসামিদের গ্রেপ্তার করে পুলিশ। মামলার তদন্ত শেষে আদালতে ৫ আসামির বিরুদ্ধে চার্জশিট দাখিল করা হয়। মামলায় ১৯ জন সাক্ষীর সাক্ষ্যের ভিত্তিতে ৫ আসামিকে দোষী সাব্যস্ত করে যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের আদেশ দেন বিচারক।
আদালতে রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী সিরাজুল ইসলাম পল্টু বলেন, শিশু আবু তকির হত্যা মামলায় আদালতে রবিউলসহ ৫ আসামি দোষী সাব্যস্ত হয়েছেন। তাদের প্রত্যেককে যাবজ্জীবন সশ্রম কারাদণ্ড ও ১০ হাজার টাকা অর্থদণ্ড অনাদায়ে আরও এক বছরের বিনাশ্রম করাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। এ রায়ে রাষ্ট্রপক্ষ সন্তুষ্ট।