শীতেও শিশুকে কি রোজ গোসল করাতে হবে?
শিশুদের গোসলের স্থানটি যেন উষ্ণ হয়
সাজ্জাদ হোসেন:
পৌষ মাস চলছে। এ সময় কখনো সূয্যিমামার দেখা মেলে তো, কখনো সে থাকে কুয়াশার আড়ালে। অতিরিক্ত শীতে বড়রাই তো গোসল নিয়ে দ্বিধায় থাকেন। শিশুদের বেলায় তো আরও দুশ্চিন্তা—রোজ গোসল করালে যদি ঠান্ডা লেগে যায়! রোগ প্রতিরোধক্ষমতা কম থাকায় শীত নবজাতক এবং শিশুদের জন্য কষ্টের সময়।
তাহলে কী শীতে শিশুদের রোজ গোসল করানো ঠিক হবে না?
উত্তর হলো, রোদ উঠুক বা না উঠুক, সুস্থ শিশুদের প্রতিদিনই গোসল করানো উচিত। শুকনা আবহাওয়া ও বাতাসে ধুলা বেশি থাকে। আর শিশুদের ত্বক হলো খুবই নাজুক এবং সংবেদনশীল। ফলে এই সময় শিশুদের বিভিন্ন সংক্রামক রোগের শঙ্কা থাকে। গোসলের ফলে ত্বকের ময়লাও দূর হয়। নিয়মিত গোসল না করালে শিশুর রোমকূপের গোড়ায় ময়লা জমে ত্বকে ফুসকুড়ি উঠতে পারে। এর মধ্যে পুঁজও জমতে পারে। গোসলের কারণে শিশুর ত্বকের কোমলতা বাড়ে, আর্দ্র থাকে ত্বক।
শিশুদের গোসলের স্থানটি যেন উষ্ণ হয় এবং সেখানে যেন ঠান্ডা বাতাস ঢুকতে না পারে। প্রতিদিন একটি নির্দিষ্ট সময়ে গোসল করানো উচিত। এতে শিশুও সঠিক নিয়মে অভ্যস্ত হতে থাকে।
শিশুদের গোসলে হালকা কুসুম গরম পানি ব্যবহার করা উচিত। খেয়াল রাখতে হবে পানির তাপমাত্রা যেন শিশুর শরীরের তাপমাত্রার চেয়ে বেশি না হয়। শিশুকে কখনোই অতিরিক্ত গরম পানি দিয়ে গোসল করানো উচিত নয়। বেশি সময় ধরেও গোসল করানো যাবে না। গোসল শেষে শুকনা কাপড় দিয়ে ভালোভাবে শরীর মুছে দিতে হবে। তোয়ালে দিয়ে জোরে জোরে না ঘষে হালকাভাবে গা মুছিয়ে নিতে হবে। খেয়াল রাখতে হবে, যেন শিশুর চুল ভেজা না থাকে। কারণ, এতে ভেজা চুল থেকে দ্রুত ঠান্ডা লেগে যেতে পারে।
গোসল শেষে শিশুর গায়ে তার উপযোগী লোশন মাখিয়ে দিতে হবে। এতে শীতের শুষ্কতা থেকে ছোট ত্বক রেহাই পাবে, আর্দ্র থাকবে সোনামণিদের ত্বক। গোসল শেষে তাকে দ্রুত পোশাক পরিয়ে ফেলতে হবে।
শিশুর ঠান্ডার ধাত থাকলে এক দিন পরপর গোসল করানো যেতে পারে। যদি ঠান্ডা লাগে বা জ্বর হয় তবে কুসুম গরম পানিতে কাপড় ভিজিয়ে গা মুছে দেওয়া যেতে পারে। নবজাতকের ক্ষেত্রে জন্মের পর ৭২ ঘণ্টা পর্যন্ত গোসল না করাতে বলা হয়। সেটা শীত বা গ্রীষ্ম যে সময়ই হোক। নবজাতকের ক্ষেত্রে সপ্তাহে দুই বা তিন দিন গোসল করানো উচিত। প্রথম ২৮ দিনের পর থেকে প্রতিদিন গোসল করানো যেতে পারে।