শীত যতই হোক একদিন কাজ না করলে পেট চলে না’

প্রকাশিত: ১১:২০ পূর্বাহ্ণ, জানুয়ারি ১৮, ২০২৪

জেলা প্রতিনিধি, গাইবান্ধা

টানা মৃদু শৈত্যপ্রবাহে জবুথবু হয়ে আছে পুরো উত্তরের জনপদ। এতে একদিকে বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে মানুষের স্বাভাবিক জীবনযাত্রা অন্যদিকে দুর্ভোগে পড়েছেন নিম্নআয়ের শ্রমজীবী মানুষ।

বুধবার (১৭ জানুয়ারি) দুপুরে গাইবান্ধা সদর উপজেলার দক্ষিণ ধানঘড়া গ্রামে কথা হয়েছে ওই গ্রামের দিনমজুর আব্দুস সালাম আকন্দের সাথে। তিনি বলেন, শীত যতই হোক একদিন কাজ না করলে পেট চলে না। শীতের সকালে বের হতে কষ্ট হয় কিন্তু উপায় যে নেই। সংসার চালাতে গেলে শীতের মধ্যেও কামলা (দিনমজুরি) দিতে হয়।

সংসার চালাতে তীব্র শীত উপেক্ষা করেও অন্যের জমিতে ধান লাগানোর কাজ করছেন আব্দুস সালাম। একই জমিতে দিনমজুরি দিচ্ছেন শাহজামাল, কালাম, কাশেম আলী, নাজমুলসহ আরও কয়েকজন শ্রমজীবী মানুষ। প্রত্যেকেরই দিনমজুরি না দিলে সংসার চলে না।

এর মধ্যে দিনমজুর কাশেম আলী বলেন, শীতের চিন্তা করলে আমাদের চলে না আমাদের চিন্তা করতে হয় পেটের, সংসারের। এরপরও আবার প্রতিদিন কাজ পাওয়া যায় না। যেদিন কাজ থাকে না সেদিন বাকিতে জিনিসপত্র কিনে সংসার চালাতে হয়।

এদিকে তীব্র শীতেও পাতলা পোশাকে দেখা গেছে রিকশা, ভ্যানচালকসহ ভ্রাম্যমাণ ও ক্ষুদ ব্যবসার সঙ্গে জড়িত ফুটপাতের দোকানদারদের। কুয়াশার কারণে গাইবান্ধার কিছু সড়কে দিনের বেলায় লাইট জ্বালিয়ে যান চলাচল করতে দেখা গেছে। শীত উপেক্ষা করে রাস্তায় দেখা গেছে স্কুলগামী কোমলমতি শিশুর সঙ্গে অভিভাবক ও শিক্ষার্থীদের।

গাইবান্ধার বাজারগুলোতে সকাল সকাল তাদের ব্যবসা প্রতিষ্ঠান খুললেও ক্রেতাদের উপস্থিতি ছিল তুলনামূলক কম। বিকেল হতেই শহর ও হাট-বাজারগুলোতে কমতে থাকে মানুষের আনাগোনা। এতে করে ব্যবসায় শীতের প্রভাব পড়তে শুরু করেছে বলে জানান একাধিক নিত্যপণ্য বিক্রেতারা। সেক্ষেত্রে সব থেকে বিপাকে পড়ছেন ভ্রাম্যমাণ ও ক্ষুদ ব্যবসায় জড়িত ফুটপাতের দোকানদাররা।

অন্যদিকে জেলার হাসপাতাল, স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ও চিকিৎসাকেন্দ্রগুলোতে বাড়ছে সর্দি-কাশি, ডাইরিয়া ও আমাশয়সহ শীতজনিত নানা রোগীর সংখ্যা। এদের মধ্যে শিশু ও বৃদ্ধের সংখ্যা বেশি।

এসময় শীতে শিশু ও বয়স্কদের বাড়তি যত্ন নেওয়ার পরামর্শ দিয়ে গাইবান্ধা জেনারেল হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডা. মাহাবুব হোসেন বলেন, এক সপ্তাহের ব্যবধানে গাইবান্ধায় প্রচণ্ড ঠান্ডা পড়ায় শীতজনিত রোগীর সংখ্যা বৃদ্ধি পাচ্ছে। তাদের মধ্যে বেশির ভাগই শিশু। এ অবস্থা চলতে থাকলে দিন দিন শীতজনিত রোগীর সংখ্যা আরও বাড়ার আশঙ্কা রয়েছে।

তাই শীতে ঠান্ডা ও বাসি খাবার পরিহার করাসহ গরম পানিতে গোসল এবং প্রয়োজনীয় গরম কাপড় পরিধান করার পরামর্শ দেন এই চিকিৎসক।