শীর্ষ জঙ্গি নেতা টুটুলসহ সিটিটিসির হাতে ধরা পড়লো ৫ সদস্য

প্রকাশিত: ৮:৪৩ অপরাহ্ণ, নভেম্বর ৩০, ২০২৩

এসএম দেলোয়ার হোসেন:
রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে ধারাবাহিক অভিযান চালিয়ে নিষিদ্ধ জঙ্গি সংগঠন জামায়েতুল মুজাহিদীন বাংলাদেশ (জেএমবি) এর একটি অংশ নব্য জেএমবির মিডিয়া শাখার শীর্ষ জঙ্গি নেতা সোয়েব আখতার ওরফে টুটুলসহ ৫ জন সক্রিয় সদস্যকে গ্রেফতার করেছে ডিএমপির কাউন্টার টেরোরিজম ইনভেস্টিগেশন বিভাগ। গ্রেফতারকৃত অপর ৪ জন হলেন- মোহাম্মদ আলী, মো. সজীব ওরফে যায়েদ ইবনে ইসমাঈল, মুহাম্মদ নাঈম হাসান ও হাসিব খান ওরফে বাধন। আজ বৃহস্পতিবার (৩০ নভেম্বর) বিকেলে নিউজ পোস্টকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন ডিএমপির মিডিয়া অ্যান্ড পাবলিক রিলেশনস বিভাগের উপ-পুলিশ কমিশনার (ডিসি) মো. ফারুক হোসেন।


সিটিটিসি জানায়, গতকাল বুধবার (২৯ নভেম্বর) গোপন সংবাদে সিটিটিসির একটি দল রাজধানীর মহাখালী এলাকায় অভিযান চালায়। এ সময় নিষিদ্ধ ঘোষিত জঙ্গি সংগঠন জামায়েতুল মুজাহিদীন বাংলাদেশ (জেএমবি) এর একটি অংশ নব্য জেএমবির মিডিয়া শাখার শীর্ষ নেতা ও সক্রিয় সদস্য সোয়েব আখতার ওরফে টুটুলকে গ্রেফতার করা হয়।
প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদের বরাত দিয়ে সংস্থাটি জানায়, গ্রেফতারকৃত টুটুল নব্য জেএমবির শীর্ষ নেতা। সে ও তার অপরাপর পলাতক সহযোগীগণ নব্য জেএমবির আদর্শে উজ্জীবিত হয়ে প্রজাতন্ত্রের সম্পত্তির ক্ষতি সাধনের লক্ষ্যে নাশকতামূলক কর্মকান্ডের পরিকল্পনা ও প্রচেষ্টা গ্রহণের উদ্দেশ্যে ঘটনাস্থলে মিলিত হয়েছিলো।
এর আগে চলতি বছরের ২২ অক্টোবর রাজধানীর মুগদা থানা এলাকা হতে নব্য জেএমবির মিডিয়া শাখার সক্রিয় সদস্য মোহাম্মদ আলীকে গ্রেফতার করে কাউন্টার টেরোরিজম ইনভেস্টিগেশন বিভাগের একটি দল। গ্রেফতার আলী নব্য জেএমবির আদর্শ প্রচারের উদ্দেশ্যে অনলাইন প্ল্যাটফর্মে একাধিক গ্র“প, চ্যানেল ও আইডি পরিচালনা করতো। এ সকল চ্যানেলের মাধ্যমে সে আন্তর্জাতিক জঙ্গি সংগঠন আইএস-এর ভাবাদর্শ প্রচার করতো। এ সংক্রান্তে রাজধানীর মুগদা থানায় সন্ত্রাস বিরোধী আইনে একটি মামলা রুজু হয়। গ্রেফতারকৃত আলীর কাছ থেকে প্রাপ্ত তথ্যের ভিত্তিতে গত ২৫ অক্টোবর পটুয়াখালীর মির্জাগঞ্জ থানা এলাকা হতে নব্য জেএমবির সক্রিয় সদস্য মো. সজীব ওরফে যায়েদ ইবনে ইসমাঈলকে গ্রেফতার করা হয়। সে মোহাম্মদ আলীর সক্রিয় সহযোগী এবং অনলাইন প্ল্যাটফর্মে বিভিন্ন উগ্রবাদী কন্টেন্ট অনুবাদকের দায়িত্বে নিয়োজিত ছিলো। সজীবকে গ্রেফতারের পর তার দেয়া তথ্যের ভিত্তিতে গত ১৫ নভেম্বর রংপুর মহানগরীর কোতোয়ালী থানা এলাকা হতে একই গ্র“পের অপর এক সদস্য মুহাম্মদ নাঈম হাসানকে গ্রেফতার করা হয়। এ সময় তার নিকট হতে মিডিয়া শাখার কাজে ব্যবহৃত একাধিক ল্যাপটপ ও মোবাইল ফোন উদ্ধার করা হয়। একে একে গ্রেফতারকৃতদের কাছ থেকে প্রাপ্ত তথ্যের ভিত্তিতে গত ২২ নভেম্বর টঙ্গী পূর্ব থানার টঙ্গী বাজার এলাকায় অভিযান চালিয়ে এ গ্র“পের আরেক সদস্য হাসিব খান ওরফে বাধনকে গ্রেফতার করা হয়। গ্রেফতারকৃত হাসিব খানের দেয়া তথ্যের ভিত্তিতে গতকাল বুধবার (২৯ নভেম্বর) রাজধানীর মহাখালী এলাকা থেকে সোয়েব আখতার ওরফে টুটুলকে গ্রেফতার করে কাউন্টার টেরোরিজম ইনভেস্টিগেশন বিভাগ।


প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে, গ্রেফতারকৃতদের সাথে আন্তর্জাতিক জঙ্গি সংগঠন আইএস-এর ভাবধারা অনুসারী নব্য জেএমবির একাধিক সদস্যের যোগাযোগ রয়েছে। গ্রেফতারকৃতরাসহ তাদের অপরাপর পলাতক সহযোগীগণ অনলাইন প্ল্যাটফর্মে ও প্রোটেকটেড টেক্সট অ্যাপসের মাধ্যমে নিজেদের মধ্যে যোগাযোগ স্থাপন করে সংগঠনের উগ্রবাদী লক্ষ্য, উদ্দেশ্য ও আদর্শ বাস্তবায়নের জন্য কার্যক্রম পরিচালনা করতো। এ সংক্রান্তে রাজধানীর মুগদা থানায় সন্ত্রাস বিরোধী আইনে দায়েরকৃত মামলায় তদন্ত চলমান রয়েছে। এছাড়া গ্রেফতারকৃতদের অপরাপর পলাতক জঙ্গি সদস্যদের ধরতে অভিযান অব্যাহত রয়েছে বলেও জানিয়েছে কাউন্টার টেরোরিজম ইনভেস্টিগেশন বিভাগ।