শেকৃবি ছাত্রলীগ সভাপতির কক্ষে শিক্ষক-কর্মকর্তার জীবনবৃত্তান্ত

প্রকাশিত: ১:১২ অপরাহ্ণ, আগস্ট ১১, ২০২৪

শেকৃবি প্রতিনিধি:

রাজধানীর শেরেবাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের (শেকৃবি) সাবেক ছাত্রলীগ সভাপতি মাসুদুর রহমান মিঠুর কক্ষ থেকে ৬ শিক্ষক ও দুই কর্মকর্তার সুপারিশকৃত জীবনবৃত্তান্ত উদ্ধার করা হয়েছে। তারা ২০১৮ ও ২০২৩ সালে নিয়োগ পান। সে সময় বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি ছিলেন মিঠু। এ ছাড়া তাঁর কক্ষ থেকে আরও ডজনখানেক চাকরিপ্রত্যাশীর জীবনবৃত্তান্ত ও দেশীয় অস্ত্র উদ্ধার করা হয়। গত শুক্রবার মধ্যরাতে তল্লাশি চালিয়ে সাধারণ শিক্ষার্থীরা এগুলো উদ্ধার করেন।

জীবনবৃত্তান্ত পাওয়া শিক্ষকরা হলেন– কৃষি অনুষদের বায়োটেকনোলজি বিভাগের শামীম আরা সুমি, বোটানি বিভাগের শারমিন আক্তার রানু, বায়োকেমিস্ট্রি বিভাগের মুন্সি মোহাম্মদ সুমন, এগ্রিবিজনেস ম্যানেজমেন্ট অনুষদের ডেভেলপমেন্ট অ্যান্ড প্রোভার্টি স্টাডিজ বিভাগের হায়দার খান সুজন, ফাইন্যান্স অ্যান্ড ম্যানেজমেন্ট বিভাগের সিরাজুম মুনিরা ও এগ্রিকালচারাল ইকোনমিকস বিভাগের ফাতেমা তুস সাদিয়া। আর দুই কর্মকর্তা হলেন– উজ্জ্বল হোসেন ও সাবেরী আনোয়ার। এর বাইরেও চাকরিপ্রত্যাশী আরও ডজনখানেকের জীবনবৃত্তান্ত পাওয়া যায়। এ ছাড়া উদ্ধার করা হয় রামদা, চাপাতি, রড, বিদেশি মদের বোতল ও এক ভারতীয় নাগরিকের আধার কার্ড।
এর আগে শুক্রবার রাত ১২টার পর শিক্ষার্থীরা শেকৃবি ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি মাসুদুর রহমান মিঠু ও সাধারণ সম্পাদক মিজানুর রহমান মিজান এবং পদপ্রত্যাশী জামিউল আলম পরশ, আরিফুল আরিফ ও রুদ্র নাথ টুটনের কক্ষে তল্লাশি চালান।

জানা গেছে, ২০১৮ সালের ২৭ ডিসেম্বর একটি নিয়োগ কার্যক্রম সম্পন্ন হয়। এ সময় বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ছিলেন অধ্যাপক কামাল উদ্দিন আহমেদ। ছাত্রলীগের সুপারিশে কতজনের নিয়োগ হয়েছে– জানতে চাইলে সাংবাদিক পরিচয় পেয়ে তিনি শুনতে পাওয়া যাচ্ছে না বলে কল কেটে দেন। এর পর তাঁর ফোন নম্বরটি বন্ধ পাওয়া যায়। পরে ২০২৩ সালের ডিসেম্বরে আরেকটি নিয়োগ সম্পন্ন হয়। এর এক মাস আগে ছাত্রলীগের মিঠু-মিজান কমিটি বিলুপ্ত হলেও শিক্ষার্থীদের দাবি, শিক্ষক ও কর্মকর্তা নিয়োগে তারা প্রশাসনকে প্রভাবিত করেছেন। এ সময় উপাচার্য ছিলেন অধ্যাপক শহীদুর রশিদ ভূঁইয়া।
জীবনবৃত্তান্ত পাওয়া শিক্ষকদের মধ্যে সহকারী অধ্যাপক হায়দার খান সুজন ও মুন্সি মোহাম্মদ সুমনের মোবাইল ফোন বন্ধ পাওয়া যায়। বাকি শিক্ষকদের সঙ্গে যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি। তবে কর্মকর্তা হিসেবে নিয়োগ পাওয়া শেরেবাংলা হল শাখা ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক উজ্জ্বল হোসেন দাবি করেন, ‘মিঠু ভাইয়ের সঙ্গে আমার সম্পর্ক তখন ভালো ছিল না। আমি চাকরির জন্য কোনো জীবনবৃত্তান্ত দিইনি।’

এই বিষয়ে জানতে মাসুদুর রহমান মিঠুকে কল দেওয়া হলেও তাঁর ফোন নম্বরটি বন্ধ পাওয়া যায়। সাবেক ছাত্রলীগ সভাপতি মিঠুর সুপারিশে কোনো নিয়োগ দেওয়া হয়েছে কিনা– জানতে চাইলে সদ্য পদত্যাগ করা উপাচার্য শহীদুর রশিদ ভূঁইয়া বলেন, ‘না, দিইনি।’