বন্যা আক্তার:
নির্বাচন কমিশন সংস্কার কমিটির অন্যতম সদস্য ও রাজনৈতিক বিশ্লেষক ডা. জাহেদ উর রহমান বলেছেন, শেখ হাসিনাকে যদি আমরা ফ্যাসিবাদী বলি, তাহলে তাকে সম্মান করা হয়। শেখ হাসিনা ডাকাত ছিলেন।
বুধবার (২৩ অক্টোবর) সন্ধ্যায় জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের জহির রায়হান মিলনায়তনে এক আলোচনা সভায় তিনি এসব কথা বলেন। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন, জাবি শাখা আয়োজিত ‘গণঅভ্যুত্থানের সরকার: প্রত্যাশা ও প্রাপ্তি’ শীর্ষক এ আলোচনা সভায় তিনি বক্তব্য রাখেন।
ডা. জাহেদ উর রহমান বলেন, ফ্যাসিবাদের একটি বিশ্বাস থাকে, যা সে চাপিয়ে দেয়। কিন্তু ডাকাত ফ্যাসিস্ট নয়। শেখ হাসিনার সরকার ছিল মাফিয়া সরকার। হিটলার ডাকাত ছিলেন না। হাসিনার কর্মকাণ্ড দেখে আমি হিটলারের প্রশংসা করি। হিটলার চিন্তা ভাবনার মাধ্যমে যুদ্ধকে সামনে নিয়ে এসেছেন কিন্তু আওয়ামী লীগের লোকজন মূল বিষয়কে সামনে না এনে স্বাধীনতার বয়ান, উন্নয়নের বয়ান এসব কথা সামনে নিয়ে আসতে চেয়েছেন।
তিনি আরও বলেন, পলিটিক্যাল সায়েন্সে ‘মাফিয়া স্টেট’ বলে একটি ধারণা আছে। শেখ হাসিনার সরকার ২০১৪ সালের পর থেকে একটি ‘মাফিয়া স্টেট’ তৈরি করেছে। সেখানে তথাকথিত রাজনীতিবিদ, ব্যবসায়ী, আমলা, পুলিশ বাহিনী, বিদেশি এজেন্ট এবং বিভিন্ন গোয়েন্দা সংস্থা নেটওয়ার্ক তৈরি করেছে, যাদের কাজ ছিল অর্থ সংগ্রহ করা। এর প্রমাণ শেখ হাসিনার পিয়ন, যে ৪০০ কোটি টাকার মালিক—যা সে গর্ব করে বলে, আর যেটি পাড়ার মাস্তানদের কাজের সঙ্গে তুলনা করা যায়। এটি ফ্যাসিস্টের মতো আচরণ।
ডা. জাহেদ আরও বলেন, শেখ হাসিনা মূলত একজন ক্রিমিনাল। কখনো কখনো আমরা তাকে পাড়ার মাস্তানও বলতে পারি। তিনি জুলাই বিপ্লবের মাধ্যমে ক্রিমিনাল হননি; ক্রিমিনাল হয়েছেন ২০১১ সালে পঞ্চদশ সংশোধনীর মাধ্যমে তত্ত্বাবধায়ক সরকার বাতিল করার পর। এরপর ২০১৪, ২০১৮, ২০১৯ এবং সর্বশেষ জুলাইয়ে তার কর্মকাণ্ডের মধ্য দিয়ে এই পরিচয় স্পষ্ট হয়। এরপরেও যদি কেউ বলে শেখ হাসিনা তেমন কিছু করেননি, তা হবে ভুল।
আলোচনা সভায় জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ কামরুল আহসান, তথ্য ও সম্প্রচার উপদেষ্টা মো. নাহিদ ইসলাম, উপ-উপাচার্য (শিক্ষা) অধ্যাপক মাহফুজুর রহমান, উপ-উপাচার্য (প্রশাসন) অধ্যাপক মো. সোহেল আহমেদ, কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক আব্দুর রব, জাতীয় নাগরিক কমিটির সদস্য সচিব আখতার হোসেন প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।