শ্রীপুরে ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কে জুবায়ের পন্থীদের সমাবেশ
নিউজ পোস্ট বিডি নিউজ পোস্ট বিডি
নিউজ পোস্ট বিডি
গাজীপুর প্রতিনিধি:
বিশ্ব ইজতেমা ময়দান দখল নিয়ে মাওলানা সাদ ও জুবায়ের পন্থীদের মধ্যে সংঘর্ষে হতাহতের প্রতিবাদে জুবায়ের পন্থীরা শ্রীপুরের ঢাকা ময়মনসিংহ মহাসড়কে বুধবার (১৮ ডিসেম্বর) প্রতিবাদ সমাবেশ করেছে। বেলা বারোটার সময় ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কের মাওনা উড়াল সেতুর নিচে এই সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়।এতে বক্তব্য রাখেন জুবায়ের পন্থী তাবলীগ জামাতের মুসল্লিগন। সমাবেশে অবিলম্বে ইজতেমা ময়দান জুবায়ের পন্থীদের নিকট বুঝিয়ে দেওয়ার, হত্যাকারীদের বিচার দাবী ও সাদ পন্থীদের নিষিদ্ধ করা সহ বিভিন্ন দাবী তুলে ধরা হয়। একই সাথে দাবী না মানা পর্যন্ত আন্দোলন চালিয়ে যাবার ঘোষণাও দেন বক্তারাউপজেলার মারকাজের শূরা সদস্য মাও. মো. নূরুল আমিন বলেন, সাদপন্থীরা ফ্যাসিবাদী সরকারের মতো গত সতেরো বছর আমাদের উপর নির্যাতন, জুলুম করেছে। বর্তমান অন্তর্র্বতী কালীন সরকারের আমলেও থেমে নেই তাদের অপ-তৎপরতা। টঙ্গী ইজতেমা মাঠে তাহাজ্জুতের নামাজ রত অবস্থায় আমাদের সাথীদের উপর সশস্ত্র হামলা করা হয়েছে। হত্যা করা হয়েছে তিন সাথীকে। আহত হয়েছে অসংখ্য সাথী। আমাদের স্পষ্ট দাবী হামলাকারীও হত্যাকারীদের অবিলম্বে আইনের আওতায় এনে দৃষ্টান্ত মূলক শাস্তি নিশ্চিত করতে হয়ে। অবিলম্বে টঙ্গী ময়দান আমাদের নিকট হস্তান্তর করতে হয়ে।
তারা আরও বলেন, সাদপন্থীদের বাংলাদেশে নিষিদ্ধ করতে হবে। আসন্ন বিশ্ব ইজতেমা উপলক্ষে এত্তেহাদীদের সাথে করা সকল চুক্তি বাতিল করতে হবে। মাওলানা ইকরামুজ্জামান বাতেন বলেন, বুধবার রাতে তাহাজ্জুত নামাজের সময় আমাদের সাথীদের উপর হামলা করেছে এত্তেহাদীরা। শহিদ করা হয়েছে তিন সাথীকে। আহত হয়েছেন শতাধিক সাথী। আমরা ইজতেমা ময়দান হস্তান্তর, হত্যা নির্যাতনের বিচারের দাবীতে মহাসড়ক অবরোধ করেছি । দাবী আদায় না হওয়া পর্যন্ত আমাদের কর্মসূচি চলবে। এসময় সমাবেশে জুবায়ের পন্থী বিভিন্ন নেতৃবৃন্দ বক্তব্য প্রদান করেন। মহাসড়কে সমাবেশ শেষে মাওনা উড়াল সেতুর নিচে নিহতদের বিদেহী আত্মার শান্তি কামনা করে বিশেষ মুনাজাতের মধ্যদিয়ে অবরোধের সমাপ্তি হয়।
এর আগে বুধবার ভোর রাত চারটার দিকে জুবায়ের পন্থী ও সাদ পন্থীদের মাঝে টঙ্গী ইজতেমার মাঠ দখল নিয়ে সংঘর্ষ হয়। এতে তিনজন নিহত হন আহত হন শতাধিক। নিহতরা হলেন- কিশোরগঞ্জ জেলার পাকুন্দিয়া থানার এগারসিন্দু গ্রামের আমিনুল ইসলাম বাচ্চু মিয়া (৭০), ঢাকার দক্ষিণ খানের বেড়াইদ এলাকার আব্দুস সামাদের ছেলে বেলাল হোসেন (৬০) ও বগুড়া জেলার তাজুল ইসলাম (৭০)।
এদিকে টঙ্গীতে সাদ পন্থীদের হামলায় তিন জন নিহত শতাধিক আহত হবার খবরে বুধবার সকাল ১০ টার দিকে উপজেলার মুলাইদের পল্লী বিদ্যুৎ এলাকায় ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়ক অবরোধ করে জুবায়ের পন্থীরা। এতে ওই সড়কে প্রায় দুই ঘণ্টা যান চলাচল বন্ধ ছিল। তীব্র যানজটে দুর্ভোগে পড়ে হাজার হাজার বাস ও বিভিন্ন পরিবহনের যাত্রীরা।
শ্রীপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. জয়নাল আবেদীন মণ্ডল বলেন, টঙ্গীর ইজতেমা ময়দানে সংঘর্ষে হতাহতের ঘটনায় জুবায়ের পন্থীরা মহাসড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করেছে। এতে মহাসড়কের উভয় পাশে যানজট সৃষ্টি হয়ে ছিলো। এখন পরিস্থিতি স্বাভাবিক রয়েছে।
২০২৫ সালের বিশ্ব ইজতেমার প্রস্তুতি হিসেবে ৩ ডিসেম্বর মাওলানা জোবায়ের পন্থীদের জোর ইজতেমা শেষ হয়েছে। আগামী ২০ ডিসেম্বর সাদপন্থীদের জোর ইজতেমা আয়োজন করার উদ্দেশ্যে ইজতেমার মাঠ বুঝিয়ে দেয়ার জন্য প্রশাসনসহ জুবায়েরপন্থীদের অনুরোধ করেন। কিন্তু তারা ইজতেমা মাঠ কোনো অবস্থাতেই সাদ পন্থীদেরকে বুঝিয়ে দেবেন না বলে ঘোষণা দেন। এর পরিপ্রেক্ষিতে উভয় পক্ষের মধ্যে একাধিক বার হামলা ও ধাওয়া পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটে। সব শেষ বুধবার রাতের সংঘর্ষে তিন মুসুল্লির মৃত্যু ও শতাধিক মুসুল্লি আহত হবার ঘটনা ঘটে।