সংকট এড়াতে জাতীয় সমঝোতা পরিষদ গড়ার আহ্বান

প্রকাশিত: ১:৪৭ অপরাহ্ণ, জানুয়ারি ৩০, ২০২৫

নিজেস্ব প্রতিবেদক:

 

বিভিন্ন সংস্কার কমিশনের দেওয়া প্রস্তাবের ভিত্তিতে ন্যূনতম ঐক্য বা সমঝোতায় পৌঁছাতে রাজনৈতিক দল, গণঅভ্যুত্থান-সংশ্লিষ্ট ও বিভিন্ন সংগঠনের প্রতিনিধিদের সমন্বয়ে জাতীয় সমঝোতা পরিষদ গঠনের আহ্বান জানানো হয়েছে।

গতকাল বুধবার জাতীয় প্রেস ক্লাবে ‘রাষ্ট্র সংস্কার আন্দোলন’ ও ‘জুলাই ৩৬ ফোরাম– অপরাজেয় বাংলা’ আয়োজিত ‘সমঝোতা ব্যতীত সংবিধান সংস্কার কি সম্ভব?’ শীর্ষক সংলাপে এ আহ্বান জানান সংগঠন দুটির নেতারা।

সভায় লিখিত প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন রাষ্ট্র সংস্কার আন্দোলনের প্রচার সমন্বয়ক সৈয়দ হাসিবউদ্দীন হোসেন। তিনি বলেন, এ মুহূর্তের বড় রাজনৈতিক প্রশ্ন হচ্ছে, এ সমঝোতা করবে কারা? একটা পক্ষ হতে পারে অন্তর্র্বতী সরকার। কিন্তু অন্তর্র্বতী সরকারের কাছে সংবিধান সংস্কার কমিশন যে সুপারিশ করেছে, সেই সুপারিশ থেকে ন্যূনতম ঐক্য বের করে আনা দুষ্কর হয়ে উঠবে। কারণ, রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে সংবিধানের সংস্কার বিষয়ে মৌলিক মতপার্থক্য আছে। এ পার্থক্য মেটাতে প্রয়োজন দলগুলোর মুখোমুখি আলোচনা ও সমঝোতা।

সভায় বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা এম জহিরউদ্দিন স্বপন বলেন, আন্দোলনের প্রধান শক্তি জনগণ। কিন্তু এ জনগণ থেকে যদি কেউ বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়, তাহলে মানুষের মনে ক্ষোভ তৈরি হয়। জনগণকে দীর্ঘদিন ক্ষমতাহীন করে রাখা ঠিক না। সামগ্রিক বাস্তবতায় বিএনপির ৩১ দফার আলোকে সমঝোতা প্রক্রিয়াকে এগিয়ে নেওয়ার ব্যাপারে ভাবতে হবে। রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে যে সমঝোতা ছিল, সেটাকে নতুন করে সংগঠিত করা দরকার।

রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে অনৈক্য বাড়তে থাকলে আওয়ামী লীগের ফিরে আসার সম্ভাবনাও বাড়তে থাকবে বলে মন্তব্য করেন বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল হক। তিনি বলেন, যে আন্দোলনের মাধ্যমে ফ্যাসিবাদকে বিদায় করা হয়েছে, সেই অর্জন রক্ষা করতে হবে এবং জাতীয় নিরাপত্তা ও গণতন্ত্রের প্রশ্নে ঐক্য ধরে রাখতে হবে।

এবি পার্টির সভাপতি মজিবুর রহমান মঞ্জু বলেন, বিএনপিকে এটা বোঝাতে হবে যে তারা ক্ষমতায় আসবে; কিন্তু তারা যেন হাসিনার মতো না পালায়। ছোট দলগুলোকে যেন তুচ্ছতাচ্ছিল্য করা না হয়।

সংস্কার নিয়ে আলোচনার কোনো উদ্যোগ নেই বলে অভিযোগ করেন রাষ্ট্র সংস্কার আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়ক হাসনাত কাইয়ুম। তিনি বলেন, এখন কতটা সংস্কার দরকার– এ প্রশ্নে রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে কিছু চিন্তা কাজ করছে। আগামী ৮ ফেব্রুয়ারি এ সরকারের ছয় মাস পূর্ণ হবে। এর মধ্যে কিছু কমিশনের বিশেষজ্ঞ মতামত এসেছে। এ ছাড়া বাকি যারা আন্দোলন করেছেন, জীবন দিয়েছেন এবং ভবিষ্যতে যারা দেশ পরিচালনা করবেন, তাদের সঙ্গে যে পরিসরে আলোচনা হওয়া দরকার, সেই উদ্যোগ দেখা যাচ্ছে না।

রাষ্ট্র সংস্কার আন্দোলনের অর্থবিষয়ক সমন্বয়ক দিদারুল ভূঁইয়ার সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে অন্যদের মধ্যে বক্তব্য দেন জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দলের (জেএসডি) সাধারণ সম্পাদক শহীদ উদ্দিন মাহমুদ স্বপন, ন্যাশনাল ডেমোক্রেটিক মুভমেন্টের (এনডিএম) মহাসচিব মোমিনুল আমিন, গণসংহতি আন্দোলনের নির্বাহী সমন্বয়কারী আবুল হাসান, জুলাই ৩৬ ফোরামের আহ্বায়ক এম এ এন শাহীন, নাগরিক ঐক্যের সাংগঠনিক সম্পাদক সাকিব আনোয়ার প্রমুখ।