সংখ্যালঘুদের ওপর নির্যাতন সম্পর্কে ভুল তথ্য, ইউবিইউআই’র প্রতিবাদ

প্রকাশিত: ১২:০৮ অপরাহ্ণ, নভেম্বর ১১, ২০২৪

ডেস্ক রিপোর্ট:

আন্তর্জাতিক মহলে বাংলাদেশের সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের ওপর নির্যাতন সংক্রান্ত বিষয়ে ভুল তথ্য ছড়ানোর প্রতিবাদ জানিয়েছে ইউএস বাংলাদেশ ইউনিটি ইনিশিয়েটিভ (ইউবিইউআই)। গত ৮ নভেম্বর এক বিবৃতিতে এ প্রতিবাদ জানায় বাংলাদেশি আরেকিমান সংগঠনটি।

বিবৃতিতে বলা হয়েছে, বাংলাদেশে সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের ওপর নির্যাতন নিয়ে ভুল তথ্য ছড়ানোর বিষয়ে বাংলাদেশ আমেরিকান সম্প্রদায় ব্যাপক উদ্বিগ্ন। কেননা, একটি নির্দিষ্ট ধর্মীয় সম্প্রদায়ের বিরুদ্ধে কোনো প্রমাণ ছাড়াই বড় ধরনের হামলা ও মানবাধিকার লঙ্ঘনের দাবি করা হচ্ছে। যা খুবই দুর্ভাগ্যজনক যে, যখন যুক্তরাষ্ট্রে একজন প্রেসিডেন্ট প্রার্থীর মাধ্যমে এ ধরনের তথ্য সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে তখন তা লাখো লাখো আমেরিকনারদের কাছে পৌঁছে যায়, এতে বাংলাদেশের যে দৃশ্য উঠে আসে তা প্রকৃত চিত্র নয়।
এতে বলা হয়, বাংলাদেশি আমেরিকান হিসেবে, আমরা যুক্তরাষ্ট্রের জনগণের কাছে বাংলাদেশে সংখ্যালঘুদের অধিকারের অবস্থা সঠিকভাবে এবং সততার সঙ্গে তুলে ধরা প্রয়োজন বলে মনে করছি। এর মাধ্যমে আমরা দুই দেশের মধ্যে বৃহত্তর সহযোগিতা এবং ঐক্যকে এগিয়ে নেওয়ার আশা করি।

বাংলাদেশে সাম্প্রতিক রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের পর সঠিক তথ্য উপস্থাপন করা স্বাভাবিকভাবেই প্রযোজন। ছাত্র-জনতার ব্যাপক আন্দোলনের মাধ্যমে শেখ হাসিনা ক্ষমতাচ্যুত হওয়ার পর একটি গোষ্ঠী প্রচার চালাচ্ছে যে, সংখ্যালঘু এবং বিশেষ করে হিন্দু সম্প্রদায়ের লোকজন আক্রমণ-নিপীড়নের শিকার হচ্ছে। প্রকৃতপক্ষে কিছু ঘটনা রাজনৈতিক কারণে হলেও যা নিয়ে বিভ্রান্তিকর তথ্য ছড়ানো হচ্ছে।
বিবৃতিতে বলা হয়েছে, শেখ হাসিনার ক্ষমতাচ্যুত হওয়ার আগে ও পর থেকে সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের ওপর হওয়া হামলার ঘটনায় অন্তর্র্বতী সরকারকে প্রতিটি ঘটনা তদন্ত করে দোষীদের বিচারের আওতায় আনার আহ্বান জানাই। গত ৫ আগস্টে শেখ হাসিনার পতনের পর কিছু স্বার্থান্বেষী গোষ্ঠী নানা ভুল তথ্য ছড়িয়ে বিভ্রান্তি ছড়াচ্ছে। ডোনাল্ড ট্রাম্পের সোশ্যাল মিডিয়ায় পোস্ট তাদেরই অপচেষ্টার একটি অংশ। স্থানীয় ও আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমের প্রতিবেদনে এই ঘটনাগুলোর সঙ্গে রাজনৈতিক সম্পর্ক রয়েছে বলে ওঠে এসেছে। এরই মধ্যে অন্তর্র্বতীকালীন সরকার সব নাগরিকের নিরাপত্তা নিশ্চিতে পদক্ষেপ নিয়েছে। বাংলাদেশি আমেরিকান সম্প্রদায় প্রতিটি ঘটনার স্বাধীনভাবে তদন্তের জন্য সরকারের ওপর চাপ প্রয়োগ অব্যাহত রাখবে।

অন্তর্র্বতী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস জনগণের আশা আকাঙ্ক্ষা বাস্তবায়নের প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন। একইসঙ্গে তিনি দেশের মানবাধিকার সমুন্নত, গণতান্ত্রিক প্রতিষ্ঠান শক্তিশালী এবং সামাজিক সম্প্রীতি বাড়াতে ভূমিকা রাখবেন বলে আমরা মনে করি। এছাড়া বাংলাদেশের নাগরিক সমাজ মানবাধিকার সম্পর্কে সচেতন। বাংলাদেশে এখন রাজনৈতিক ক্রান্তিকাল অতিক্রম করছে। ফলে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের উচিত বাংলাদেশ নিয়ে সঠিক তথ্যের ভিত্তিতে মন্তব্য করা। সংখ্যালঘু বিরোধী ব্যাপক প্রচারণা এবং হিন্দু নিপীড়নের ভিত্তিহীন অভিযোগ সমগ্র জাতিকে কলঙ্কিত করেছে।

বিবৃতিতে আরও বলা হয়েছে, যেকোনো তথ্য প্রকাশ করার আগে প্রভাবশালী রাজনৈতিক ব্যক্তি ও সরকারি কর্মকর্তাসহ সবাইকে বস্তুনিষ্ঠ সূত্র থেকে নিশ্চিত হওয়ার আহ্বান জানাচ্ছি আমরা। একটি অন্তর্ভুক্তিমূলক গণতান্ত্রিক দেশ হিসেবে বাংলাদেশের সাফল্য আঞ্চলিক স্থিতিশীলতা ও মার্কিন স্বার্থের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ।