
নিজেস্ব প্রতিবেদক:
ব্যাটারিরিকশা চালকদের অবরোধ, পুলিশের ওপর হামলা অভিজাত এলাকায় রিকশাচালকের চেহারাই বলে দেয় তারা রিকশাচালক নয় :: এলাকা থেকে পালিয়ে এসে যুবলীগ, ছাত্রলীগসহ আওয়ামী নেতাকর্মীরা জীবিকার নামে নিজেদের সংগঠিত করছে :: এক্ষনি ব্যবস্থা না নিলে সরকার পতনের আন্দোলনের ডাক দিতে পারে
রাজধানীর গুরুত্বপূর্ণ গুলশান-বনানী এলাকায় ব্যাটারিচালিত রিকশা চলাচল বন্ধের প্রতিবাদে গত সোমবার সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ ও নৈরাজ্য চালায় চালকরা। তারা পুলিশ বক্সে হামলা, প্যাডেল রিকশাচালক ও মোটরসাইকেল আরোহীদের ওপর হামলা চালিয়ে মারধর করে। তাদের হামলা থেকে রেহাই পাননি সাংবাদিক, পথচারী এমনকি বিদেশি নাগরিকও। এসব ঘটনার ভিডিও ধারণ করতে গিয়ে কয়েকজন পথচারী ও গণমাধ্যমকর্মীও মারধরের শিকার হন। বেশ কয়েকটি মোটরসাইকেল ভাঙচুর ও এর আরোহীদেরও মারধর করা হয়। তাদের নৈরাজ্য ও অবরোধের কারণে ওই সড়কে বেশ কিছু সময় যান চলাচল বন্ধ ছিল।
ভুক্তভোগী ও বিশিষ্টজনরা বলছেন, আন্দোলনের নামে ব্যাটারিরিকশা চালকরা রাজধানীসহ সারা দেশে নৈরাজ্য শুরু করেছে। কিছু না হতেই জোট বেধে তারা গুরুত্বপূর্ণ রাস্তা অবরোধসহ হামলা-ভাঙচুর চালিয়ে যাচ্ছে। নগরীর অলিগলিসহ গুরুত্বপূর্ণ সব সড়কে ব্যাটারিরিকশা চলাচলের কারণে প্রতিদিনই দুর্ঘটনা ঘটছে। মূলত একশ্রেণির পার্টস বিক্রেতা ও গ্যারেজ মালিকরা উসকানি দিয়ে এসব চালকদের রাস্তায় নামাচ্ছে। তাদের নেপথ্যে পতিত ফ্যাসিস্ট আওয়ামী লীগ-ছাত্রলীগসহ অঙ্গ-সংগঠনের নেতাকর্মীদের প্রত্যক্ষ ইন্ধন আছে। বিষয়টি খতিয়ে দেখে তারা জড়িতদের দ্রুত আইনের আওতায় আনার দাবি জানান। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া একাধিক ভিডিওতে দেখা গেছে, বনানী ১১ নম্বর ব্রিজের ট্রাফিক পুলিশের বক্সে লাঠি দিয়ে পেটাচ্ছে ব্যাটারিরিকশা চালকরা। পুলিশের ব্যারিকেড টেনে সরিয়ে ফেলছে। একাধিক মোটরসাইকেল আরোহীর ওপর হামলা চালিয়ে ভাঙচুর ও লাঠি দিয়ে বেধড়ক পেটানো হয়।
রাজধানীতে ব্যাটারিরিকশা চালকদের নৈরাজ্য নতুন নয়। স্বৈরাচারি হাসিনার পতনের পর পুলিশের নিষ্ক্রিয়তার সুযোগে রাজধানীতে হঠাৎ করে বেড়ে যায় ব্যাটারিরিকশার সংখ্যা। সে সময় তারা এক্সপ্রেসওয়ে, ফ্লাইওভার এমনকি বিমানবন্দরেও ঢুকে পড়তে দ্বিধা করেনি। পরিস্থিতি বেমাসামল দেখে হাইকোর্ট রাজধানীতে ব্যাটারিচালিত রিকশা চলাচল নিষিদ্ধ ঘোষণা করে। তাতে শাহবাগে আন্দোলনে নামে রিকশাচালকরা। এরপর রাষ্ট্রপক্ষ হাইকোর্টের রায়ের বিরুদ্ধে অপীল করে। এতে করে তারা পার পেয়ে আরও বেপরোয়া হয়ে ওঠে। যেহেতু হাইকোর্ট তাদেরকে চলাচলের সুযোগ দিয়েছে, এটাকে পুঁজি করে তারা পুলিশকেও মানছে না। অনেকে তাদের বেসামাল দৌরাত্মের জন্য তাই সরকার এবং হাইকোর্টকেই দায়ী করে আসছেন।
রাজধানীতে ট্রাফিক পুলিশের তৎপরতায় যানজট পরিস্থিতির উন্নতি হয়েছে। তবে যানজট নিয়ন্ত্রণে আসেনি ব্যাটারিচালিত রিকশা ও ইজিবাইকের কারণে। পুলিশের চোখের সামনেই প্রধান সড়কে অবাধে চলছে ব্যাটারিচালিত রিকশা। বরং অবাধে চলতে চলতে এগুলো বেপরোয়া হয়ে উঠেছে। নিয়ম ও আইনের তোয়াক্কা না নিজের মতো অভিজাত এলাকাসহ মূল সড়কেও দাপিয়ে বেড়াচ্ছে এসব বাহন। কোনো সিগন্যাল না মেনে যেখানে-সেখানে থামিয়ে যাত্রী ওঠানামা করছে তারা। মহাসড়কে চলছে উল্টোপখে। এতে বাড়ছে জনভোগান্তি, সৃষ্টি হচ্ছে তীব্র যানজট। ঢাকা অটোরিকশা শ্রমিক ইউনিয়নের হিসাব মতে, স্বৈরাচারি হাসিনার পতনের পর শিথিল আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির সুযোগে কমপক্ষে ৮ লাখ ব্যাটারি রিকশা ও ইজিবাইক ঢুকে পড়েছে রাজধানীতে। ঢাকার বাইরে থেকে এখনও সমানে ঢাকায় ঢুকছে।
পরিবহন সেক্টরে শৃঙ্খলা ফেরানোসহ যানজট নিরসনের জন্য ট্রাফিক পুলিশ ভিআইপি এলাকাগুলোতে ব্যাটারি রিকশা চলাচল নিষিদ্ধ করে। তাতে ব্যাটারি রিকশা চালকরা পুলিশের উপর মারমুখি আচরণ করে। সোমবারের ঘটনা তারই বহি:প্রকাশ। রাস্তা অবরোধ তারা করে পাল্টা হুমকী দেয়, তাদেরকে চলতে না দিলে রাজধানীতে কোনো পরিবহনই চলতে দেয়া হবে না। রিকশাচালকদের এমন হুমকী সরকারের প্রতি চ্যালঞ্জ ছুঁড়ে দেয়ারই নামান্তর। এ প্রসঙ্গে ঢাকা অটোরিকশা শ্রমিক ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ হানিফ খোকন গতকাল ইনকিলাবকে বলেন, তারা এত সাহস পেল কোত্থেকে? তাদের কারণে পুরো ঢাকা শহরের অবস্থা নাজুক। যাদের গাড়ির রেজিস্ট্রেশন নেই, প্রশিক্ষণ নেই, লাইসেন্স নেই- তারা সরকারকে এভাবে হুমকী দেয় কীভাবে? নিশ্চয় এদের পেছনে কোন ষড়যন্ত্রকারী চক্র রয়েছে। এরা রাষ্ট্রকে অস্থিতিশীল করতে চায়। কথায় কথায় এরা মিছিল নিয়ে রাস্তা অবরোধ করে। বাধা দিলে উল্টো সরকারকে হুমকী দেয়। এটাকে খাটো করে দেখার কিছু নেই। সরকারের উচিত এদের নেপথ্যের কারিগরদের খুঁজে বের করা।
অনুসন্ধানে জানা গেছে, ঢাকার অভিজাত এলাকাগুলোতে যারা ব্যাটারিরিকশা চালাচ্ছে তাদের চেহারা-সুরত দেখলে মনেই হবে না এরা রিকশাচালক। কয়েকজন চালকের সাথে কথা বলে জানা গেছে, দেশের বিভিন্ন জেলা-উপজেলায় পতিত আওয়ামী সরকারের যুবলীগ, ছাত্রলীগ, স্বেচ্ছাসেবক লীগসহ অন্যান্য অঙ্গ সংগঠনের নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে মামলা হওয়ায় তারা ছদ্মবেশে ঢাকায় আশ্রয় নিয়েছে। কেউ কেউ আবার মামলা বা গ্রেফতার এড়াতে পালিয়ে এসেছে ঢাকায়। এরাই মূলত ব্যাটারিরিকশা চালিয়ে জীবিকা নির্বাহের নামে নিজেদেরকে সংগঠিত করছে। এদেরকে পেছন থেকে আর্থিক সহযোগিতা করছে আওয়ামী লীগের নেতারাই। যারা হাসিনার শাসনামলে অঢেল সম্পদের পাহাড় গড়েছে। একজন চালক জানান, ঢাকা শহরের হোটেলগুলো এখন আর খালি থাকে না। আওয়ামী লীগ ও এর অঙ্গ সংগঠনের নেতাকর্মীরা হোটেল ভাড়া করে থাকছেন। তাদেরই একটা অংশ ব্যাটারিরিকশা নিয়ে রাস্তায় বের হচ্ছে। এরাই কথায় কথায় রাস্তা অবরোধ করে সরকারকে হুমকী দিচ্ছে। এদের কারণে সিটি করপোরেশনের লাইসেন্সধারী সাধারণ রিকশাচালকদের এখন দুরাবস্থা। ওই রিকশা চালক বলেন, এরা জীবিকার নামে মাঠে থেকে নিজেদেরকে সংগঠিত করছে। এরাই একদিন সরকার পতনের ডাক দিলে আশ্চর্য হওয়ার কিছুই থাকবে না। ৫ লাখ রিকশাচালকরুপী আওয়ামী কর্মীরা যদি একযোগে রাস্তায় নামে তখন সরকার কি করবে- সেটা ইউনূস সরকার কেনো বোঝে না! সরকারের উচিত এদের নাম-পরিচয়ের তালিকা করে ঠিকানা অনুযায়ী খোঁজ খবর নেয়া।
সিএনজি অটোরিকশা শ্রমিক ইউনিয়নের এক নেতা বলেন, পুলিশ এদের জাতীয় পরিচয় পত্র দেখে এদেরকে শনাক্ত করতে পারে। তা না হলে অদূর ভবিষ্যতে এরাই সরকারের জন্য কাল হয়ে দাঁড়াবে। কেন এরকম ধারনা হলো জানতে চাইলে ওই নেতা বলেন, এদের আচরণেই প্রমান মেলে এরা স্বৈরাচারের দলের নেতা-কর্মী। এরা পুলিশকে থোরাই কেয়ার করে। কোনো নিয়ম কানুনের ধার ধারে না। রাষ্ট্র যেন এদের কাছে নানা বাড়ির মতো। ফার্মগেইট এলাকার একজন ট্রাফিক পুলিশেরও ধারনা এরা যুবলীগ বা ছাত্রলীগের কর্মী। এদের মধ্যে সামান্যতম শ্রদ্ধাবোধ নেই। রাষ্ট্র ও সরকারের প্রতি এদের সামান্যতমও দায়িত্ববোধ নেই। যাত্রাবাড়ী এলাকায় ডিউটিরত একজন ট্রাফিক সার্জেন্ট বলেন, যানজট নিরসনে আমরা প্রাণপন চেষ্টা করে যাচ্ছি। কিন্তু ব্যাটারিরিকশার কারণে পেরে উঠছি না। ওই সার্জেন্ট বলেন, সরকার আইন করে এদের নিষিদ্ধ না করলে যানজট পরিস্থিতির উন্নতি হবে না। সড়কে শৃঙ্খলাও ফিরবে না।
অন্যদিকে, চট্টগ্রামে একের পর এক দুর্ঘটনা ও ট্রাফিক বিশৃঙ্খলার কারণ হচ্ছে সড়ক-মহাসড়কে ব্যাটারিচালিত রিকশার অবাধ চলাচল। একসময় গলিপথে সীমাবদ্ধ থাকা এই যান এখন প্রধান সড়কগুলোতেও অবাধে ছুটছে। নগরের এমন কোনো এলাকা খুঁজে পাওয়া কঠিন যেখানে ব্যাটারিচালিত রিকশার দেখা মেলে না। অভ্যন্তরীণ কিছু সড়কে চলাচলকারী সাশ্রয়ী বাহন হিসেবে পরিচিত এই যান এখন নৈরাজ্য ও বিশৃঙ্খলার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে।
চট্টগ্রাম নগরীতে নিয়মিত চলাচলকারীরা জানান, ধীরগতির এ বাহন দ্রুতগামী গাড়ির সঙ্গে মিশে গিয়ে সিগন্যাল পয়েন্টে জ্যাম সৃষ্টি করে; হঠাৎ রাস্তার মাঝে থেমে যাত্রী ওঠা-নামা করে, বড় গাড়ির লেনে ঢুকে পড়ে- সব মিলিয়ে এগুলো এখন বড় উৎপাত। প্রতিটি মোড়ে ব্যাটারি-চালিত রিকশা যানজট সৃষ্টি করছে। বেপরোয়া এই যানের কারণে প্রায় প্রতিদিন দুর্ঘটনা ও হতাহতের খবর পাওয়া যায়। সবশেষ গত ১৮ এপ্রিল রাতে চকবাজার থানার কাপাসগোলা এলাকায় একটি ব্যাটারিচালিত রিকশা উল্টে গিয়ে পড়ে হিজড়া খালে। রিকশায় থাকা দুই নারী বেঁচে গেলেও, তাদের কোলে থাকা ৬ মাস বয়সী শিশু সেহরিজ নিখোঁজ হয়। পরদিন সকালে চাক্তাই খাল থেকে শিশুটির লাশ উদ্ধার করা হয়। শহরজুড়ে ছড়িয়ে পড়ে শোক। পাশাপাশি ক্ষোভের সঞ্চারও হয়।
এরপর নগরজুড়ে ব্যাটারি-চালিত রিকশার বিরুদ্ধে সাঁড়াশি অভিযান শুরু হয়। টানা কয়েকদিনের অভিযানে বিভিন্ন এলাকা থেকে জব্দ করা হয়েছে প্রায় তিন হাজার অটোরিকশা। নগর পুলিশের আওতাধীন ট্রাফিক বিভাগের ডাম্পিং স্টেশন মনসুরাবাদ ও সদরঘাটে জায়গা প্রায় পুরোটা ভরে গেছে জব্দকৃত রিকশায়। গতকাল বুধবার নগরের চান্দগাঁও থানার কাপ্তাই রাস্তার মাথা এলাকায় পুলিশের সঙ্গে ব্যাটারিচালিত রিকশা চালকদের সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। ট্রাফিক বিভাগের অভিযান ও গাড়ি আটকের বিরুদ্ধে রাস্তা অবরোধ করে চালকরা বিক্ষোভ করে। পুলিশ তাদের সরিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করলে সংঘর্ষের সূত্রপাত হয়। পরে ঘটনাস্থলে সেনাবাহিনী পৌঁছে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করে।
নগরবাসীর অভিযোগ, কিছু এলাকায় স্থানীয় রাজনৈতিক ও প্রভাবশালী মহলের ছত্রছায়ায় এসব রিকশা নির্বিঘেœ চলছে। কোনো কোনো চালক জানান, আটক হলে জরিমানা দিয়েও তারা রাস্তায় থাকে। আবার প্রতিবারই দুর্ঘটনার পর প্রশাসন কঠোর পদক্ষেপ নেয়। আটকের পাশাপাশি অনেক চালককে জরিমানা করে ছেড়ে দেওয়া হয়। তবে এসব রিকশা আবার নিয়মমাফিক ছাড়িয়ে নেওয়া হয় এবং কয়েকদিনের মধ্যেই পুনরায় চলাচল শুরু করে।
বিশেষজ্ঞদের মতে, ক্রমবর্ধমান যানজট ও বিশৃঙ্খলা কমিয়ে আনতে রাজধানীতে অটো ও ব্যাটারিচালিত রিকশা নিয়ন্ত্রণের নীতিগত সিদ্ধান্ত রয়েছে সিটি কর্পোরেশন, ডিএমপিসহ সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের। বিশেষত গুলশান, বনানী, বারিধারার মতো এলাকায় কূনৈতিক জোন, বিনিয়োগকারি বিভিন্ন কর্পোরেট প্রতিষ্ঠানের অফিস, দেশি-বিদেশি ব্যবসায়ী ও কূটনীতিকদের যাতায়াত বেশি থাকায় চলাচল মসৃণ করতে যানজটমুক্ত রাখা জরুরি। তবে অটোরিকশা চালকদের বেপরোয়া চলাচলের কারণে তা বাস্তবায়ন করা যাচ্ছে না। এদের বেশিরভাগই আওয়ামী লীগ ও তার অঙ্গসংগঠনের নেতাকর্মী যারা অটোচালকের ছদ্মবেশে রয়েছে। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর উচিৎ এদের সম্পর্কে খোঁজ-খবর নেয়া। একই সাথে সহ¯্রাধিক কারখানাসহ বংশাল, মিরপুর স্টেডিয়াম ও কমলাপুর স্টেডিয়ামের ব্যাটারিরিকশার খুরচা যন্ত্রাংশ আমদানিকারকদের বিরুদ্ধেও কঠোর ব্যবস্থা নেয়া জরুরি।
চট্টগ্রামে পুলিশের সাথে ব্যাটারি রিকশাচালকদের সংঘর্ষ আহত ১০
চট্টগ্রাম ব্যুরো : চট্টগ্রামে ব্যাটারি চালিত অটোরিকশার বিরুদ্ধে চলমান অভিযানে চালকদের সাথে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। গতকাল বুধবার চান্দগাঁও বাহির সিগন্যাল এলাকায় এ সংঘর্ষে পুলিশসহ অন্তত ১০ জন আহত হয়েছে। আটক করা হয়েছে কয়েকজনকে।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানায়, ব্যাটারিচালতি অটোরিকশার বিরুদ্ধে চলমান অভিযানের প্রতিবাদে সকাল সিঅ্যান্ডবি এলাকায় জড়ো হয়ে চালকরা বিক্ষোভ শুরু করে। এক পর্যায়ে তারা বাহির সিগন্যাল এলাকায় সড়ক অবরোধ করে রাখেন। পুলিশ গিয়ে তাদের সড়িয়ে দেয়ার চেষ্টা করলে ইটপাটকেল নিক্ষেপ শুরু হয়। উভয় পক্ষের ধাওয়া পাল্টা ধাওয়া ও সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। এসময় পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে পুলিশের পাশাপাশি সেনা সদস্যরাও সেখানে উপস্থিত হয়। বিক্ষোভকারীদের ছত্রভঙ্গ করতে পুলিশ টিয়ার সেলও নিক্ষেপ করে।
নগর পুলিশের সহকারী কমিশনার (পাঁচলাইশ জোন) মোহাম্মদ আরিফ হোসেন বলেন, ব্যাটারি রিকশার গ্যারেজগুলোতে জেলা প্রশাসনের সহযোগিতায় অভিযান চলছে। এর প্রতিবাদে চালকরা জড়ো বাহির সিগন্যাল এলাকায় সড়ক অবরোধ করে রাখে।
তিনি বলেন, এসময় অবরোধকারীদের সড়ক থেকে তুলে দেয়ার চেষ্টা করলে তারা পুলিশকে লক্ষ্য করে ইটপাটকেল নিক্ষেপ শুরু করে। এতে আমাদের অন্তত চার জন পুলিশ সদস্য আহত হয়েছে। এ ঘটনায় মামলার প্রস্তুতি চলছে এবং চার জনকে আটক করা হয়েছে বলে জানান সহকারী কমিশনার আরিফ। নগরীর বিভিন্ন স্থানে অটো রিকশার ব্যাটারি চার্জ করার স্থানগুলোতে অভিযানের পাশাপাশি ট্রাফিক পুলিশের পক্ষ থেকে রিকশা উচ্ছেদের অভিযান চলছে। গত তিন দিনে ট্রাফিক বিভাগ কয়েকশ ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা জব্দ করেছে।