সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক এবং সেতু বিভাগে ৪৮ হাজার ৭৮৩ কোটি টাকা বরাদ্দের প্রস্তাব
নিউজ পোস্ট বিডি নিউজ পোস্ট বিডি
নিউজ পোস্ট বিডি
আগামী অর্থ-বছরের প্রস্তাবিত বাজেটে সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগ এবং সেতু বিভাগে মোট ৪৮ হাজার ৭৮৩ কোটি টাকা বরাদ্দের প্রস্তাব করা হয়েছে।
এর মধ্য সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগের জন্য ৩৯ হাজার ৭১০ কোটি টাকা এবং সেতু বিভাগের জন্য ৯ হাজার ৭৩ কোটি টাকা বরাদ্দের প্রস্তাব করা হয়েছে।
আজ বৃহস্পতিবার জাতীয় সংসদে উত্থাপিত ২০২৩-২৪ অর্থ-বছরের বাজেটে অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল এই প্রস্তাব করেন।
জাতীয় সংসদে স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরীর সভাপতিত্বে এবং প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উপস্থিতিতে বাজেট প্রস্তাব উপস্থাপন করেন অর্থমন্ত্রী।
বিগত ২০২২-২০২৩ অর্থ বছরে সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগ এবং সেতু বিভাগে মোট ৪৫ হাজার কোটি ৯৪৫ টাকা বরাদ্দের প্রস্তাব করা হয়েছিল। তবে সংশোধিত বাজেটে বরাদ্দ কমে দাঁড়ায় ৩৫ হাজার ২৪৮ কোটি টাকা। সেই হিসাবে গত অর্থ বছরের তুলনায় প্রস্তাবিত বাজেটে এই খাতে বরাদ্দ বাড়ল ৪ হাজার ৪৬২ কোটি টাকা।
বাজেট বক্তৃতায় অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল বলেন, যোগাযোগ খাতে আমরা সব মাধ্যম অর্থাৎ সড়ক, সেতু, রেল, নৌ ও আকাশপথের সমন্বিত উন্নয়নের ওপর গুরুত্ব দিয়েছি। আমাদের উদ্দেশ্য হলো- অভ্যন্তরীণ ও আন্তর্জাতিক পর্যায়ে নিরাপদ, টেকসই, পরিবেশবান্ধব ও সাশ্রয়ী যোগযোগ ব্যবস্থা নিশ্চিত করা। বিশেষ করে, বর্তমানে চলমান কার্যক্রমগুলোর সময়ানুগ বাস্তবায়ন ও বাস্তবায়নোত্তর মান সংরক্ষণের ওপর আমরা বিশেষ গুরুত্ব দিচ্ছি।
তিনি বলেন, ২০০৯ সালে আমরা ক্ষমতায় আসার পর থেকে সড়ক সেতু কালভার্ট ইত্যাদি নির্মাণ করার ফলে সারাদেশে ২২ হাজার ৪৭৬ কিলোমিটার দৈর্ঘ্যের মহাসড়ক তৈরি হয়েছে। এতে নির্বিঘœ পণ্য ও যাত্রী পরিবহণ নিশ্চিত হয়েছে।
এ ছাড়া দেশজুড়ে প্রায় ৭১৮ কিলোমিটার জাতীয় মহাসড়ক চারলেনে উন্নীত করা হয়েছে। বিভিন্ন মহাসড়কে এক হাজার ৫৫৮টি সেতু ও সাত হাজার ৪৯৮টি কালভার্ট নির্মাণ ও পুননির্মাণ করা হয়েছে। দেশের সড়ক নেটওয়ার্কে যুক্ত হয়েছে ১৫টি রেলওয়ে ওভারপাস ও ১৮টি ফ্লাইওভার।
অর্থমন্ত্রী বলেন, যাত্রাবাড়ী ইন্টারসেকশন থেকে মাওয়া হয়ে ফরিদপুরের ভাঙ্গা পর্যন্ত জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান মহাসড়ক নির্মাণের মধ্য দিয়ে বাংলাদেশের সড়ক যোগাযোগ ব্যবস্থা এক্সপ্রেসওয়ের যুগে প্রবেশ করেছে। সামনের দিনগুলোতে সারা দেশে দুই হাজার ৩৪২ কিলোমিটার জাতীয় মহাসড়কের দুই পাশে সার্ভিস লেনসহ চারলেনে উন্নীত করার প্রক্রিয়া শুরু করেছি।
সড়ক ও মহাসড়ক প্রসঙ্গে মুস্তফা কামাল বলেন, বর্তমান সরকারের মেয়াদকালে বাস্তবায়িত দেশের আট বিভাগের ২৫ জেলায় মোট ১০০টি সেতু উদ্বোধন করা হয়েছে, যার মোট দৈর্ঘ্য পাঁচ হাজার ৪৯৪ মিটার। আমরা নিজস্ব অর্থায়নে ৬ দশমিক ১৫ কিলোমিটার দীর্ঘ পদ্মা সেতু নির্মাণ করে বিশ্বের দরবারে নিজেদের সক্ষমতার প্রমাণ দিয়েছি।
তিনি বলেন, কর্ণফুলী নদীর তলদেশে সড়ক টানেল নির্মাণ কাজ প্রায় শেষ পর্যায়ে আছে। শীঘ্রই এটিকে যানচলাচলের জন্য উন্মুক্ত করে দেয়া হবে। এ ছাড়া, হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের কুতুবখালি পর্যন্ত র্যাম্পসহ ৪৬ দশমিক ৭৩ কিলোমিটার দীর্ঘ ঢাকা এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ের নির্মাণ আগামী বছরের জুনের মধ্যে শেষ হবে বলে আশা করছি। যদিও আগামী সেপ্টেম্বরের মধ্যে প্রকল্পের হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে তেজগাঁও পর্যন্ত অংশ চলাচলের জন্য উন্মুক্ত করে দেওয়া হবে।
যানজট নিরসন ও নিরাপদ সড়ক বিষয়ে বাজেট বক্তৃতায় অর্থমন্ত্রী বলেন, ঢাকা মহানগরী ও আশপাশের এলাকা যানজট নিরসন ও দ্রুত যোগাযোগ নিশ্চিত করতে ৬টি মেট্রো রেল লাইনের একটি নেটওয়ার্ক গড়ে তোলা হচ্ছে। বাংলাদেশের প্রথম মেট্রো রেলের উত্তরা উত্তর থেকে আগারগাঁও পর্যন্ত অংশ গত ২৮ ডিসেম্বর প্রধানমন্ত্রী উদ্বোধন করেছেন। ২০২৫ সালের মধ্যে মেট্রো রেল কমলাপুর পর্যন্ত সম্প্রসারিত হবে।
তিনি বলেন, ২০২৬ সালের মধ্যে কমলাপুর থেকে বিমানবন্দর পর্যন্ত ১৯ দশমিক ৮৭২ কিলোমিটার পাতাল এবং নতুন বাজার থেকে পিতলগঞ্জ ডিপো পর্যন্ত ১১ দশমিক ৩৬৯ কিলোমিটার উড়ালসহ মোট ৩১ দশমিক ২৪১ কিলোমিটার দীর্ঘ ও ২১টি স্টেশন বিশিষ্ট মেট্রো রেলের আরেকটি লাইন নির্মাণের লক্ষ্যমাত্রা স্থির রাখা হয়েছে।