সড়ক বন্ধ করে আ’লীগের দুই পক্ষে ব্যাপক সংঘর্ষ

প্রকাশিত: ৬:০৩ অপরাহ্ণ, সেপ্টেম্বর ২৮, ২০২৪

ফরিদপুর প্রতিনিধি:

কিশোর-কিশোরীর ঝগড়ার জেরে ফরিদপুরের সালথায় আওয়ামী লীগের দুই পক্ষে ব্যাপক সংঘর্ষ হয়েছে। শনিবার সকালে উপজেলার গট্টি ইউনিয়নের মেম্বারগট্টি এলাকায় প্রায় পাঁচ ঘণ্টা ধরে চলে এ সংঘর্ষ। এতে উভয়পক্ষের অর্ধশতাধিক ব্যক্তি আহত হয়েছেন। তাদের অন্তত ৩০ জনকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। এ সময় বেশ কয়েকটি বাড়িঘরে ভাঙচুর চালানো হয়।

সংঘর্ষের সময় পুরো এলাকা রণক্ষেত্রে পরিণত হয়। প্রায় পাঁচ ঘণ্টা ধরে সালথা-ফরিদপুর আঞ্চলিক সড়কে যানবাহন চলাচল বন্ধ হয়ে যায় বলে প্রত্যক্ষদর্শী সূত্রগুলো জানিয়েছে। সংবাদ পেয়ে পুলিশ ও সেনাবাহিনীর দল পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।
এলাকাবাসী জানায়, আধিপত্য বিস্তার নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে মেম্বারগট্টি গ্রামের বাসিন্দা সালথা উপজেলা আওয়ামী লীগের সদস্য মো. রফিক মাতুব্বরের সঙ্গে দ্বন্দ্ব চলছে গট্টি ইউনিয়ন কৃষক লীগের সভাপতি মো. আজিজ মোল্যার। এরই মধ্যে শুক্রবার বিকেলে রফিকের সমর্থক নুরুল ইসলামের কিশোর ছেলের সঙ্গে আজিজের সমর্থক মুকুলের কিশোরী মেয়ের ঝগড়া হয়। এ নিয়ে সন্ধ্যায় উভয়পক্ষের মধ্যে ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া হয়। পুলিশ গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।

প্রত্যক্ষদর্শীদের ভাষ্য, শুক্রবারের ঘটনার জেরে শনিবার সকাল ৬টার দিকে রফিকের বাড়ির সামনে সালথা-ফরিদপুর সড়কে উভয়পক্ষের অন্তত পাঁচ শতাধিক ব্যক্তি দেশীয় অস্ত্র নিয়ে সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে। এক পর্যায় এতে অংশ নেয় আশপাশের অন্তত ১০টি গ্রামের মানুষ অংশ নেয়। যে কারণে সংঘর্ষটি ব্যাপক আকার নেয়। সকাল সাড়ে ১০টা পর্যন্ত উভয়পক্ষের মধ্যে ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া চলে। এ সময় পুরো এলাকা রণক্ষেত্রে পরিণত হয়। আতঙ্কিত নারী-শিশুদের নিরাপদ আশ্রয়ের জন্য ছোটাছুটি করতে দেখা যায়।
সংঘর্ষের মধ্যেই রফিক ও আজিজের বসতবাড়িতে হামলা চালিয়ে ভাঙচুর করে প্রতিপক্ষের লোকজন। এ ঘটনায় উভয় পক্ষের অর্ধশতাধিক ব্যক্তি আহত হয়েছেন। তাদের মধ্যে অন্তত ৩০ জনকে ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালসহ বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক এলাকাবাসী জানায়, সংঘর্ষ চলাকালে পুলিশের একদল সদস্য ঘটনাস্থলে উপস্থিত থাকলেও তারা কোনো ভূমিকা নেননি। ফলে সালথা-ফরিদপুর সড়কে ৫-৬ ঘণ্টা যানবাহন চলাচল বন্ধ থাকে। পরে সেনাবাহিনী এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে নেওয়ার পর যান চলাচল স্বাভাবিক হয়।
সংঘর্ষের বিষয়ে বক্তব্য জানতে সালথা উপজেলা আওয়ামী লীগের সদস্য রফিক মাতুব্বর ও গট্টি ইউনিয়ন কৃষক লীগের সভাপতি আজিজ মোল্যার সঙ্গে যোগাযোগ করা যায়নি। দফায় দফায় কল দিলেও তাঁদের মোবাইল ফোনে সংযোগ মেলেনি।

ফরিদপুরের সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার (নগরকান্দা সার্কেল) মো. আসাদুজ্জামান শাকিল বলেন, সংঘর্ষ ও ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া কয়েক ঘণ্টা ধরে চলে। সংবাদ পেয়ে তাঁর নেতৃত্বে পুলিশের একটি দল সেখানে যায়। সেনাবাহিনীও ঘটনাস্থলে আসে। পরে তারা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।

সংঘর্ষের পর হামলা-ভাঙচুরে জড়িত ব্যক্তিদের বাড়িতে পুলিশ ও সেনাবাহিনী যৌথভাবে অভিযান চালিয়ে বিপুলসংখ্যক দেশীয় অস্ত্র উদ্ধার করে বলেও জানান পুলিশ কর্মকর্তা আসাদুজ্জামান। তিনি আরও বলেন, পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে ওই এলাকায় অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।