সন্দেহ এড়াতে বিচারের দাবিতে মানববন্ধনে অংশ নেন হত্যাকারী মামুন
নিউজ পোস্ট বিডি নিউজ পোস্ট বিডি
নিউজ পোস্ট বিডি

নোয়াখালী প্রতিনিধি:
নোয়াখালী সদর উপজেলায় অটোরিকশা চালককে হত্যার ঘটনায় জড়িতদের গ্রেপ্তার ও বিচারের দাবিতে আয়োজিত মানববন্ধনে সন্দেহ এড়াতে অংশগ্রহণ করেছিল হত্যাকারী মনিরুল ইসলাম মামুন (৩০)।
মঙ্গলবার (১৫ এপ্রিল) রাতে ঢাকা পোস্টকে এ তথ্য নিশ্চিত করেন জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ক্রাইম অ্যান্ড অপস) মোহাম্মদ ইব্রাহীম।
তিনি বলেন, বৃহস্পতিবার দুপুরে নোয়াখালী ইউনিয়নের ডাক্তার বাজার স্লুইস গেট খাল সংলগ্ন একটি কবরস্থানের পাশ থেকে অটোরিকশা চালক বাবর হোসেনের মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। হত্যাকারীদের গ্রেপ্তার দাবিতে বাবরের স্বজন ও এলাকাবাসী রোববার জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের সামনে মানববন্ধন ও বিক্ষোভ সমাবেশ করেন। এটি ছিল ক্লুলেস ঘটনা। সন্দেহ এড়াতে মানববন্ধনে হত্যাকারী নিজেও ছিল। কিন্তু আমরা কৌশলে তাকে গ্রেপ্তার করলে সে সব কিছু স্বীকার করে নেয়।
গ্রেপ্তার মনিরুল ইসলাম মামুন সদর উপজেলার মধ্যম করিমপুরের মৃত তাজুল ইসলামের ছেলে। মঙ্গলবার ভোররাতে জেলা শহর মাইজদীতে পেট্রোল পাম্পের পাশ থেকে র্যাব ও পুলিশের যৌথ দল তাকে গ্রেপ্তার করে। এ ঘটনায় নিহত অটোরিকশার চালক মো. বাবর হোসেন (১৮) একই এলাকার মো. সেলিমের ছেলে।
জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ক্রাইম অ্যান্ড অপস্) মোহাম্মদ ইব্রাহীম ঢাকা পোস্টকে বলেন, মনিরুল ইসলাম মামুন পুলিশের জিজ্ঞাসাবাদে হত্যাকাণ্ডে নিজেকে জড়িয়ে স্বীকারোক্তি দিয়েছেন। মূলত আসামি মামুন তার পরিচিত কয়েকজন লোক থেকে নেওয়া ৪৫ হাজার টাকা ধার করেন। এর পরিবর্তে পাওনাদাররা তার কাছে ৯০ হাজার টাকা দাবি করে। মামুন তার পরিচিত বাবরকে হত্যা করে তার অটোরিকশাটি বিক্রি করে টাকা সংগ্রহের পরিকল্পনা করেন। পরিকল্পনা অনুযায়ী বাবরকে দত্তেরহাট এনে জুসের সাথে কৌশলে ঘুমের ট্যাবলেট খাইয়ে বিনোদপুর ইউনিয়নের জালিয়াল গ্রামে নির্জন বাগানে নিয়ে যান। এরপর অটোরিকশাটি সেখানে রেখে ঘুমের ওষুধ খাওয়ানো দুর্বল বাবরকে প্রথমে সোনাপুর নিয়ে যান মামুন। পরে সিএনজিচালিত অন্য একটি অটোরিকশায় পূর্ব চর উরিয়া গ্রামে সুইসগেট সংলগ্ন নির্জন সবজি বাগানে নিয়ে তার গায়ের লিলেনের গেঞ্জি দিয়ে গলা ফাঁস লাগিয়ে শ্বাসরোধ করে হত্যা করা হয়। এ সময় বাবরের পায়ে দেওয়া স্যান্ডেল বাঁশ ঝাড়ের পাশে এবং হত্যায় ব্যবহৃত গেঞ্জিটি পাশে কলাবাগানে রেখে পালিয়ে যান মামুন।
র্যাব-১১, সিপিসি-৩, নোয়াখালীর কোম্পানি কমান্ডার (ভারপ্রাপ্ত) সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার মিঠুন কুমার কুণ্ডু ঢাকা পোস্টকে বলেন, হত্যাকারীদের গ্রেপ্তার দাবিতে বাবরের স্বজন ও এলাকাবাসী রোববার জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের সামনে মানববন্ধন ও বিক্ষোভ সমাবেশ করেন । সন্দেহ এড়াতে মানববন্ধনে হত্যাকারী নিজেও ছিল। কেবল টাকার নেশায় এ হত্যাকাণ্ড ঘটানো হয়েছে। নিহত বাবরের খোয়া-যাওয়া অটোরিকশা, তার ব্যবহৃত স্যান্ডেল ও অপরাপর সহযোগী আসামি গ্রেপ্তার অভিযান চলমান রয়েছে বলে জানান এ কর্মকর্তা।