সময়টা উদযাপনের নয়, রাষ্ট্র পুনর্গঠনের : শিল্পীসমাজ

প্রকাশিত: ২:০৮ অপরাহ্ণ, আগস্ট ১১, ২০২৪

বিনোদন ডেস্ক:

ছাত্র-জনতার আন্দোলনে সংহতি জানিয়ে যেসকল শিল্পীরাও সরব ছিলেন, তারাই আবার মাঠে নেমেছেন। শনিবার ঢাকার কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে শিল্পী সংস্কৃতিকর্মীদের এক সমাবেশ আয়োজিত হয়েছে। সেখানে উপস্থিত ছিলেন থিয়েটারকর্মী, আলোকচিত্রী, নির্মাতা, শিল্পী ও সংগীতশিল্পীরা।
এদিন এক যৌথ বিবৃতিতে তারা বলেছেন, দেশের চলমান এই পরিস্থিতিতে এখনকার সময়টি উদযাপনের নয়, বরং সময়টা রাষ্ট্র পুনর্গঠনের। শিল্পীদের কথায়, ‘এই নতুন বাংলাদেশ সব জাতির, সব বর্ণের, সব ধর্মের, সব লিঙ্গের একটি বৈষম্যহীন জনপদ হয়ে উঠবে বলে আমরা বিশ্বাস করি।’

এ সময় চার মাধ্যমের পক্ষ থেকে এক যৌথ বিবৃতি পাঠ করেন নির্মাতা ও অভিনেত্রী ঋতু সাত্তার।
যৌথ বিবৃতিতে বলা হয়, ‘গণ-অভ্যুথান পরবর্তী সময়েও অনাকাঙ্ক্ষিতভাবে দেশব্যাপী নানা ধর্মীয় সম্প্রদায়, ভিন্নমত ও নানা শ্রেণি–পেশার মানুষ হত্যা-নিপীড়নের শিকার হয়েছেন। হামলা ও লুটপাট হয়েছে ধর্মীয় উপাসনালয়, মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাসভিত্তিক স্থাপনা, ঐতিহ্যবাহী ভাস্কর্য, সংগ্রহশালা, জাদুঘর, স্মৃতিস্মারকসহ শিল্পী, গণমাধ্যম ও সংস্কৃতিকর্মীদের বাড়ি। আমরা মনে করি, অগ্নিসংযোগ, হামলা, ধ্বংস ও লুটপাটের সঙ্গে জড়িত একটি বিশেষ স্বার্থান্বেষী মহল, যারা আমাদের এই বিজয়ের সব অর্জন ম্লান করে দিতে চায়।’
বিবৃতিতে আরও বলা হয়, ‘বিপ্লবী ছাত্র–জনতা আমাদের উপহার দিয়েছে এক নতুন মুক্তি। তারাই জান বাজি রেখে রক্ষা করে যাচ্ছে দেশের সম্পদ। অভ্যুত্থান-পরবর্তী সংকটময় সময়ে তারাই দায়িত্ব নিয়েছে আইনশৃঙ্খলা রক্ষার। পাহারা দিয়ে যাচ্ছে মন্দির, মাজারসহ বিভিন্ন উপাসনালয় ও ঐতিহ্যবাহী স্থাপনার। দুষ্কৃতকারীদের ঠেকাতে সংঘবদ্ধভাবে টহল দিয়ে যাচ্ছে পাড়া-মহল্লায়। আন্তরিকতার সঙ্গে ধ্বংসস্তূপ পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা ও ট্রাফিক নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করে যাচ্ছে দিনরাত।’

শিল্পীরা বলেন, ‘সরকার পরিবর্তনের এই বিশেষ সময়ে প্রশাসনিক অনুপস্থিতিতে ছাত্র-জনতাই ধরে রাখছে দেশের হাল। এই অভ্যুত্থানে ছাত্র–জনতার দাবির সঙ্গে সংহতি জানিয়ে আমরা কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে একাধিক সমাবেশ, পদযাত্রা ও লংমার্চে শামিল হয়েছি।’

এ সময় আলাদা করে বক্তব্য দেন, আলোকচিত্রী শহিদুল আলম, নাট্যশিল্পী রোকসানা রুমা, সোনার বাংলা সার্কাস ব্যান্ডের ভোকালিস্ট প্রবর রিপন, কস্টিউম ডিজাইনার ইদিলা ফরিদ তুরিন, আলোকচিত্রী তাসলিমা আখতার ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগের অধ্যাপক মোহাম্মদ আজম। এছাড়াও উপস্থিত ছিলেন আলোকচিত্রী আমিরুল রাজীব, নির্মাতা অমিতাভ রেজা, অভিনেতা সুমন আনোয়ার, অভিনেত্রী আজমেরী হক বাঁধন, জাকিয়া বারী মম, নাজিয়া হক অর্ষাসহ অনেকে।

সমাবেশের পর শহীদ মিনারে ‘মুক্তির মন্দির সোপানতলে’ পরিবেশন করেন তানজির তুহিন, আরমীন মুসা, লাবিক কামাল, প্রবর রিপনসহ উপস্থিত শিল্পীরা।