সরকারি সার আত্মসাতে বিএডিসির সাবেক কর্মকর্তার ১৪ বছর জেল

প্রকাশিত: ১২:২২ পূর্বাহ্ণ, জুলাই ৫, ২০২৩

যশোর প্রতিনিধি:

যশোরে সরকারি সার আত্মসাতের অপরাধে বাংলাদেশ কৃষি উন্নয়ন কর্পোরেশনের (বিএডিসি) সাবেক সহকারী ভান্ডার কর্মকর্তা আজগর আলীকে ১৪ বছর সশ্রম কারাদণ্ড এবং জরিমানা করেছেন আদালত। একই সঙ্গে আত্মসাৎ করা সারের ৩ কোটি ৭৪ লাখ ৮১ হাজার ১৬ টাকা ৩২ পয়সা রাষ্ট্রের অনুকূলে জমার আদেশ দেওয়া হয়। মঙ্গলবার (৪ জুলাই) যশোরের স্পেশাল জজ (জেলা ও দায়রা জজ) মোহাম্মদ সামছুল হক এ রায় ঘোষণা করেন। একই সঙ্গে মামলার অপর দুই আসামির বিরুদ্ধে অভিযোগ প্রমাণিত না হওয়ায় তাদের খালাস দেওয়া হয়েছে। সাজাপ্রাপ্ত আসামি আজগর আলী যশোরের বাঘারপাড়া উপজেলার আরাজী সিলিমপুরের আরশাদ আলী মোল্লার ছেলে। রায় ঘোষণার সময় আসামি আদালতে উপস্থিত ছিলেন। খালাসপ্রাপ্তরা হলেন- যশোর বিএডিসির তৎকালীন উপ-সহকারী পরিচালক বর্তমানে ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় কর্মরত মো. ফাহাদ আল-মামুন ও অভয়নগর উপজেলার শংকরপাশা গ্রামের মো. মেছের আলী মল্লিকের ছেলে সার ডিলার মো. মমিন উদ্দিন। মঙ্গলবার বিকেলে বিষয়টি নিউজ পোস্ট বিডিকে নিশ্চিত করেছেন সংশ্লিষ্ট আদালতের সরকারি কৌঁসুলি (পিপি) অ্যাডভোকেট মো. সিরাজুল ইসলাম।

মামলার বিবরণে জানা গেছে, যশোরের চাঁচড়াস্থ বিএডিসি গুদামে সহকারী ভান্ডার কর্মকর্তা হিসেবে কর্মরত ছিলেন আজগর আলী। তিনি ২০১১ সালের ২১ ডিসেম্বর থেকে ২০১৫ সালের ১ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত ওই গুদামে কর্মরত থাকাকালে অজ্ঞাতনামা ব্যক্তিদের সহায়তায় ৩২০ টন এমওপি সার আত্মসাৎ করেন। যার তৎকালীন মূল্য ৭৬ লাখ ৩৪ হাজার ৫৬০ টাকা। এ ঘটনায় বিএডিসির যুগ্ম পরিচালক (সার) রতন কুমার মন্ডল ২০১৫ সালের ৬ সেপ্টেম্বর কোতোয়ালি থানায় মামলা করেন। মামলাটি তদন্ত করেন দুর্নীতি দমন কমিশনের সহকারী পরিচালক মো. ওয়াজেদ আলী গাজী। তদন্তকালে এজাহারভুক্ত আসামি আজগর আলীকে আটক করা হয়। তিনি আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন। তার জবানবন্দিতে প্রকাশ পায়, এ ঘটনার সঙ্গে বিএডিসির উপ-সহকারী পরিচালক ফাহাদ আল-মামুন এবং অভয়নগরের নওয়াপাড়ার দুজন সার ব্যবসায়ী এম এ রাশেদ ও মমিন উদ্দিন জড়িত। এছাড়া তদন্তকালে টিএসপি, এমওপি এবং ডিএপি সার মোট ৮৪৪ দশমিক ৮০ টন আত্মসাতের প্রমাণ পাওয়া যায়। যার মূল্য ৩ কোটি ৭৪ লাখ ৮১ হাজার ১৬ টাকা ৩২ পয়সা।

আজগর আলী, ফাহাদ আল-মামুন, এম এ রশিদ ও মমিন উদ্দিনকে অভিযুক্ত করে আদালতে চার্জশিট দাখিল করেন দুদক কর্মকর্তা ওয়াজেদ আলী গাজী। মামলায় আসামি আজগর আলীর বিরুদ্ধে আনিত অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় বিচারক তার ৭ বছরের সশ্রম কারাদণ্ড এবং ১০ হাজার টাকা জরিমানা ও অনাদায়ে আরও ছয় মাসের কারাদণ্ড দেন। আরেক ধারায় পাঁচ বছরের সশ্রম কারাদণ্ড এবং ৫ হাজার টাকা জরিমানা ও অনাদায়ে আরও চার মাসের কারাদণ্ড দেন। আরেকটি ধারায় দুবছরের কারাদণ্ড এবং ৩ হাজার টাকা জরিমানা ও অনাদায়ে আরও দুই মাসের কারাদণ্ড দেন বিচারক।