আন্তর্জাতিক ডেস্ক :
‘লাব্বাইক আল্লাহুম্মা লাব্বাইক’ ধ্বনিতে মুখর হবে আরাফাতের ময়দান। হজের মূল আনুষ্ঠানিকতা হলো সূর্যোদয় থেকে সূর্যাস্ত পর্যন্ত এই ময়দানেই অবস্থান করা। এর মধ্যে আরাফাতের মজজিদে নামিরাহতে মঙ্গলবার (২৭ জুন) একসঙ্গে নামাজ আদায় করেছেন হাজিরা।
হজের যাবতীয় কার্যক্রম মসজিদ হারামাইন শরীফাইন (ঐধৎধসধরহ ঝযধৎরভধরহ) ফেসবুক পেজে ও সৌদির টিভি চ্যানেলগুলোতে সরাসরি সম্প্রচার করা হচ্ছে। এছাড়া ইউটিউব চ্যানেলও দেখা যাবে পবিত্র হজ।
করোনার কারণে গত তিন বছর সীমিত পরিসরে হজ হয়। আজ হজ পালন করতে আরাফাতের ময়দানে অবস্থান করছেন লাখ লাখ মুসলিম। এখানে সারা দিন অবস্থান করবেন বিশ্বের প্রায় ২৫ লাখ হাজি।
এমনকি হাসপাতালে ভর্তি অসুস্থ হাজিদেরও অ্যাম্বুল্যান্সে করে কিছু সময়ের জন্য এখানে আনা হবে।
হাজিদের মুখে ধ্বনিত হবে ‘লাব্বাইক আল্লাহুম্মা লাব্বাইক, লাব্বাইকা লা শারিকা লাকা লাব্বাইক, ইন্নাল হামদা ওয়ান নিমাতা লাকা ওয়াল মুলক, লা শারিকা লাক।’অর্থ—আমি হাজির, হে আল্লাহ আমি হাজির, তোমার কোনো অংশীদার নেই। আমি হাজির। সব প্রশংসা ও অনুগ্রহ শুধুই তোমার। সব রাজত্ব তোমার।
উপস্থিত হাজিদের উদ্দেশে মসজিদে নামিরা থেকে খুতবা পড়বেন শায়খ ইউসুফ বিন মুহাম্মদ। এর আগে গতকাল সোমবার (২৬ জুন) মিনায় অবস্থান করেন হাজিরা। তবে এবার প্রায় এক-তৃতীয়াংশ হাজিকে মিনায় না নিয়ে সরাসরি আরাফাতে নেওয়া হচ্ছে।
হাজিরা আরাফাতের ময়দানে জোহর ও আসর নামাজ পড়বেন। এরপর সূর্যাস্ত পর্যন্ত দোয়া-মোনাজাতে মগ্ন থাকবেন। সূর্যাস্তের পর সবাই মুজদালিফার উদ্দেশে গমন করবেন। সেখানে মাগরিব ও এশার নামাজ পড়ে রাত কাটাবেন। মুজদালিফা থেকে তিন জামারার জন্য তারা পাথর সংগ্রহ করবেন।
পরদিন মিনায় বড় জামারায় গিয়ে পাথর ছুড়বেন। এরপর কোরবানি দিয়ে মাথার চুল ছোট বা মুণ্ডন করবেন। তখন ইহরামের কাপড় বদলে স্বাভাবিক পোশাক পরে মিনা থেকে মক্কায় গিয়ে পবিত্র কাবা শরিফ সাতবার তাওয়াফ করবেন। কাবার সামনের দুই পাহাড় সাফা ও মারওয়ায় সায়ি (সাতবার দৌড়ানো) করবেন। সেখান থেকে তারা আবার মিনায় যাবেন। মিনা থেকে তিন দিন (বড়, মধ্যম, ছোট) ২১টি করে ৬৩টিসহ মোট ৭০টি পাথর জামারায় নিক্ষেপ করবেন। এরপর মক্কায় বিদায়ি তাওয়াফ করে হজের সব কাজ শেষ করবেন।
সৌদি আরবের সংবাদমাধ্যম সূত্রে জানা যায়, করোনার পর এবারই প্রথম বিশ্বের ১৬০টির বেশি দেশ থেকে ১৬ লাখ ৫৫ হাজার ১৮৮ হজযাত্রী সৌদি আরব পৌঁছান। আর সৌদি আরবের ভেতর থেকেও বিপুলসংখ্যক লোক হজ করছেন।
এ বছর বাংলাদেশ থেকে হজ পালন করতে এক লাখ ২২ হাজার ৮৮৪ জন সৌদি আরব গেছেন। গত ২১ মে থেকে ২৪ জুন পর্যন্ত ৩২৫টি ফ্লাইটে তাদের নিয়ে যাওয়া হয়। এখন পর্যন্ত বাংলাদেশের ২৬ হজযাত্রী মক্কা ও মদিনায় মারা গেছেন। বাংলাদেশি হজযাত্রীদের ফিরতি ফ্লাইট আগামী ২ জুলাই থেকে শুরু হয়ে ২ আগস্ট পর্যন্ত চলবে।