বিনোদন ডেস্ক রিপোর্টঃ
কোলন ক্যান্সারের সঙ্গে লড়াই করে হেরে গেলেন ছোটপর্দায় জনপ্রিয় অভিনেতা অলিউল হক রুমি। গতকাল ভোরে চিকিৎসাধীন অবস্থায় শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেছেন তিনি। জনপ্রিয় এই অভিনেতার সাবলীল অভিনয়ে দর্শক হেসে লুটোপুটি খেয়েছে, কখনো আবার ভারী হয়েছে বুক। তাই গতকাল রুমির চিরপ্রস্থানের সংবাদে সবার মনে বিষাদের ছায়া নেমে এসেছে। দীর্ঘদিনের সহকর্মীদের স্মৃতিতে ভেসে উঠেছে বিভিন্ন আনন্দ-বেদনার কথা।
মীর সাব্বির- আজকের (গতকাল) সকালটা আমার জন্য খুবই বিষাদময়। কারণ সবার প্রিয় অলিউল হক রুমি ভাই আমাদের ছেড়ে চলে গেছেন। গত ৩ মাস আগে ওনার কোলন ক্যান্সার ধরা পড়ার পর থেকে অনেক চেষ্টা করেও আমরা তাকে ধরে রাখতে পারলাম না। রুমি ভাইয়ের সঙ্গে আমার অনেক স্মৃতি। তার সঙ্গে আমার দীর্ঘ পথচলা, অসংখ্য নাটকে অভিনয় করা। কত মান-অভিমান! আমরা মনে রাখার মতো একজন মানুষকে হারালাম। সবাই রুমি ভাইয়ের জন্য দোয়া করবেন।
চঞ্চল চৌধুরী- ভেবেছিলাম একটু সুস্থ হয়ে উঠবেন, আপনাকে দেখতে যাবো। আর দেখা হলো না। এ কেমন বিদায় রুমি ভাই! নিয়তির কাছে সকলেই হার মানে, মানতে হয়। তবে আপনি একটু তাড়াতাড়িই চলে গেলেন। অন্যলোকে শান্তিতে থাকুন রুমি ভাই।
শাহনাজ খুশি- চলে গেলেন রুমি ভাই! মৃত্যুটা কত সহজ, জীবনটাই অনেক বেশি কঠিন। এই প্রথমবার, এমন খবর শুনে, সবাইকে জানাবার জন্য লিখতে গিয়ে, লিখলাম আর মুছলাম অসংখ্যবার! আপনার ছবির সাথে কোনোভাবেই ‘শেষ বিদায়’-এর কিছু লিখতে পারছিলাম না রুমি ভাই! সব সম্ভব? মাত্র দেড়/দুই মাস, সব চেষ্টা শেষ হলো! কোনোভাবেই ঠেকানো গেল না কিছু! আপনার পরিবারকে আল্লাহ এ শোক কাটিয়ে ওঠার শক্তি দিক, এ প্রার্থনা করি।
ফারজানা চুমকি- রুমি ভাই, শেষ পর্যন্ত চলেই গেলেন। ভালো থাকবেন ওপারে। আমার জন্মদিনের প্রথম যে ফোনটি আসত, সেটা আপনার ফোন। সেই কলটি আর আসবে না। সাব্বিরের সাথে কত অভিমান কে করবে রুমি ভাই? ক্ষমা করেন ভাই।
রোকেয়া প্রাচী- রুমি ভাই, বিদায়। আমার পরিচালনায় প্রথম ধারাবাহিক ‘সেলাই পরিবার’ নাটকের সময়টা মনে হচ্ছে খুব। আল্লাহ আপনাকে বেহেশত নসিব করুন।
গোলাম ফরিদা ছন্দা- আহা রুমি ভাই! খুব করে অপেক্ষা করছিলাম যে ভালো কোনো খবর শুনবো। মাত্র দেড়-দু’মাস! আর শোনা হলো না। সবাইকেই যেতে হবে। কিন্তু তুমি এত তাড়াতাড়ি কেন চলে গেলে! অবিশ্বাস্য ঠেকছে! আমার দাদির সেই কথাটাই মনে হচ্ছে কেবল—‘কতকাল জানি বাঁচমু আর কুনসুম জানি মইরা যামু।’ জীবন এমনই। বিদায় রুমি ভাই। চির শান্তিতে থাকো ওপারে।
রাশেদ সীমান্ত- যে সবসময় আমাকে শুটিং সেটে পাহারা দিয়ে রাখত আজ আমি তাকে পাহারা দিয়ে নিয়ে যাচ্ছি আসল ঠিকানায়। আল্লাহ আমার ভাইকে আপনি জান্নাত দান করুন। আমিন।
এছাড়াও অভিনেত্রী তারিন জাহান, শামীমা তুষ্টি, অহনা রহমান, জ্যোতিকা জ্যোতি, কেয়া, রোজী সিদ্দিকী, মৌসুমী হামিদ, অভিনেতা অপূর্ব, সাজু খাদেম, আমিন আজাদ, জামিলসহ অনেকেই শোক প্রকাশ করেছেন। উল্লেখ্য, রুমি ১৯৮৮ সালে থিয়েটার বেইলি রোডের ‘এখনও ক্রীতদাস’ নাটকের মধ্য দিয়ে অভিনয় যাত্রা শুরু করেন। একই বছর ‘কোন কাননের ফুল’ নাটকের মাধ্যমে ছোটপর্দায় অভিষেক হয় তার। এরপর কয়েকশ’ নাটকে দেখা গেছে তাকে। পাশাপাশি সিনেমায়ও অভিনয় করেছেন এই শিল্পী।