সাতকানিয়ায় অস্ত্রের মুখে জিম্মি করে চার বাড়িতে ডাকাতি, নগদ টাকা ও স্বর্ণালংকার লুট

প্রকাশিত: ৪:৪২ অপরাহ্ণ, ফেব্রুয়ারি ৩, ২০২৫

চট্টগ্রাম প্রতিনিধি:

চট্টগ্রামের সাতকানিয়া উপজেলায় গভীর রাতে অস্ত্রের মুখে জিম্মি করে চারটি বাড়িতে দুর্র্ধষ ডাকাতির ঘটনা ঘটেছে। এ সময় ডাকাতদের হামলায় দুই গৃহবধূ আহত হয়েছেন। রোববার দিবাগত রাত ২টার দিকে উপজেলার সোনাকানিয়া ইউনিয়নের ৫ নম্বর ওয়ার্ডের উত্তর হাতিয়ারকুল কুদ্দুস সওদাগর বাড়ি এলাকায় এই ডাকাতির ঘটনা ঘটে।

স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, রাতের অন্ধকারে মুখোশধারী ও হাফপ্যান্ট পরিহিত ২৫-৩০ জনের একদল ডাকাত প্রথমে আব্দুল জব্বারের বসতঘরের দরজা ভেঙে ভেতরে প্রবেশ করে। অস্ত্রের মুখে পরিবারের সদস্যদের জিম্মি করে তারা নগদ ৩০ হাজার টাকা, এক ভরি স্বর্ণালংকার, দেড় হাজার সৌদি রিয়াল, পাঁচটি মোবাইল ফোন এবং কিছু গুরুত্বপূর্ণ কাগজপত্র লুট করে।

এরপর ডাকাত দল একই কায়দায় পার্শ্ববর্তী মৃত খায়ের আহমদ, নুর আহমদ এবং মৃত আলী আহমদের ঘরে হানা দেয়। এসব বাড়ি থেকে তারা তিনটি মোবাইল ফোন, প্রায় তিন ভরি স্বর্ণালংকার, প্রায় এক লাখ টাকা এবং মূল্যবান সামগ্রীসহ ছয় লক্ষাধিক টাকার মালামাল লুট করে নিয়ে যায়।

ডাকাত দলের হামলায় আহত হয়েছেন সৌদি প্রবাসী রফিকুল ইসলামের স্ত্রী বেবী আক্তার এবং মৃত খায়ের আহমেদের স্ত্রী খতিজা আক্তার।

বেবী আক্তার জানান, ডাকাত দল দরজা ভেঙে ৭-৮ জন আমার ঘরে প্রবেশ করে এবং অস্ত্রের মুখে সবাইকে জিম্মি করে। তারা স্বর্ণালংকার ও টাকা দিতে বলে। আমি আপত্তি করলে লোহার খুন্তি দিয়ে আমাকে মারধর করা হয়। তারা কানের দুল, শরীরে থাকা স্বর্ণালংকার, আলমারিতে রাখা প্রায় ৫০ হাজার টাকা এবং ২৬ হাজার টাকা দিয়ে নতুন কেনা একটি মোবাইল ফোন লুট করে নিয়ে যায়। ডাকাতরা আমার কানের দুল খুলে নেওয়ার সময় ডান কানের লতি পুরোপুরি ছিঁড়ে যায় এবং বাম কানের লতির একটি অংশ ছিঁড়ে যায়।

এছাড়া, মৃত খায়ের আহমেদের স্ত্রী খতিজা আক্তারকেও লোহার খুন্তি দিয়ে মারধর করে আহত করা হয় বলে জানা গেছে।

নুর আহমদের ছেলে ও ঢাকায় কর্মরত মো. জাফর আলম জানান, রাত চারটার দিকে আমার স্ত্রী নাজমা আক্তার মোবাইল ফোনে জানায় যে আমাদের ঘরে ডাকাত ঢুকেছে। আমার স্ত্রী টাকা ও মোবাইল দিতে দেরি করলে ডাকাতরা আমার বড় মেয়েকে পা দিয়ে চেপে ধরে এবং ছোট ছেলেকে অস্ত্রের মুখে জিম্মি করে টাকা ও মোবাইল দিতে বাধ্য করে।

এ ব্যাপারে সাতকানিয়া থানার পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) মো. আব্দুল মুন্নাফ জানান, ‘‘ডাকাতির ঘটনাটি খতিয়ে দেখতে ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠানো হচ্ছে।’’

এই ডাকাতির ঘটনায় পুরো এলাকায় আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে। স্থানীয়রা দ্রুত ডাকাতদের গ্রেপ্তার ও আইনের আওতায় আনার দাবি জানিয়েছেন।