চট্টগ্রাম প্রতিনিধি:
চট্টগ্রামের সাবেক সংসদ সদস্য এ বি এম ফজলে করিম চৌধুরীর দুই দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন আদালত। রাউজানে মুনিরিয়া যুব তাবলীগ কমিটির কার্যালয়ে হামলা-ভাঙচুরের মামলায় মঙ্গলবার সকাল ৭টায় চট্টগ্রাম জুডিশিয়াল মাজিস্ট্রেট নুরুল হারুনের আদালত এ রিমান্ড মঞ্জুর করেন।
আদালত চত্বরে গোলযোগ এড়াতে আসামিকে সকালে নিয়ে যায় পুলিশ। তবে তাকে আদালতে তোলার খবর পেয়ে সকালেই আদালত চত্বরে অবস্থান নেয় বিক্ষুব্ধ জনদতা। একপর্যায়ে তারা ফজলে করিমের ওপর হামলার চেষ্টা করে। তাদের অভিযোগ, রাউজানে দীর্ঘদিন ধরে ভিন্নমতের কোনো মানুষকে এলাকায় যেতে দেননি ফজলে করিম। তার বিরুদ্ধে এখন পর্যন্ত খুন, হত্যাচেষ্টাসহ ১০টি মামলা চলমান।
চট্টগ্রাম জেলা কোর্ট পরিদর্শক জাকির হোসাইন মাহমুদ জানান, রাউজানে মুনিরীয়া যুব তাবলীগ কমিটির দলইনগর-নোয়াজিষপুর শাখা (এবাদত খানা) ভাঙচুরের অভিযোগে দায়ের করা এক মামলায় ফজলে করিমের ৭ দিনের রিমান্ড আবেদন করা হয়। শুনানি শেষে দুই দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন আদালত।
গত ২৩ আগস্ট সাবেক সংসদ সদস্য ফজলে করিম চৌধুরী, তার ছেলে ফারাজ করিম চৌধুরীসহ ৬৮ জনের বিরুদ্ধে মামলাটি দায়ের করেন মুনিরিয়া যুব তাবলীগ কমিটির সাংগঠনিক সম্পাদক মুহাম্মদ আলাউদ্দিন।
এদিকে আসামিকে কারাগার থেকে আদালতে তোলার আগে আদালত ভবনের চারদিকেই কড়া নিরাপত্তা ও পুলিশি পাহারা ছিল। তারপরও পুলিশের বাধা অতিক্রম করেই আদালত ভবনে ঢুকে পড়েন ১০-১২ জন যুবক। এ সময় তারা নানা স্লোগান দিতে থাকেন। পুলিশি বাধা উপেক্ষা করে তারা মারতে তেড়ে যান সাবেক সংসদ সদস্যকে। পুলিশের সঙ্গে হাতাহাতিও হয় তাদের। তাকে প্রিজন ভ্যান থেকে সরাসরি আদালতে নিয়ে যাওয়ার পথে হট্টগোল শুরু করেন যুবকরা। তাদের কারো কারো হাতে ছিল ‘ফজলে করিমের ফাঁসি চাই’ লেখা ব্যানার-পোস্টারও। এ সময় কয়েকজন যুবক পুলিশকে ধাক্কা মেরে ফজলে করিমের ওপর হামলা করতে দৌঁড়ে পুলিশের প্রিজন ভ্যানের দিকে এগিয়ে যান। কিন্তু পরে আবার পুলিশের বাধায় তারা পিছু হটে। এ নিয়ে আদালত চত্বরে হট্টগোল লেগে যায়।
ফজলে করিম আওয়ামী লীগের মনোনয়ন নিয়ে চট্টগ্রাম-৬ আসনে ২০০১, ২০০৮, ২০১৪, ২০১৮ ও ২০২৪ সালে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। গত ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে হাসিনা সরকারের পতনের পর থেকে আত্মগোপনে ছিলেন তিনি। ১২ সেপ্টেম্বর ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আখাউড়া সীমান্ত দিয়ে অবৈধভাবে ভারতে পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টাকালে গ্রেপ্তার করা হয় তাকে।