সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর এপিএস মনিরের অঢেল সম্পদ

প্রকাশিত: ১:৪৮ অপরাহ্ণ, নভেম্বর ৯, ২০২৪

নিজস্ব প্রতিবেদক:

সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালের সহকারী একান্ত সচিব (এপিএস) মনির হোসেনের আয়কর নথিতে ১৫ কোটির বেশি টাকার সম্পদের তথ্য রয়েছে। তাঁর ২০২৪-২৫ অর্থবছরের নথিতে সম্পদের ওই হিসাব উল্লেখ করা হয়েছে। তবে দুদক সূত্র জানিয়েছে, আয়কর নথিতে সম্পদের মূল্য কম দেখানো হয়েছে। এই হিসাবের বাইরে তাঁর নামে-বেনামে রয়েছে অঢেল সম্পদ।

সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর কাছের মানুষ হওয়ায় ক্ষমতার অপব্যবহার করে এবং প্রভাব খাটিয়ে বিভিন্ন ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের কাছ থেকে অর্থ হাতিয়ে নিয়েছেন মনির। তাঁর সম্পদ শতকোটি টাকা ছাড়িয়ে যাবে। আওয়ামী লীগ সরকার পতনের পর থেকে মনির হোসেন পলাতক। তাঁর গ্রামের বাড়ি ভোলার চরফ্যাসনে। দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) উপপরিচালক মো. জাহাঙ্গীর আলমের নেতৃত্বে পাঁচ সদস্যের টিম সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খানসহ সংশ্লিষ্টদের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ অনুসন্ধান করছে। এই অনুসন্ধানের আওতায় রয়েছেন মনির।
আয়কর নথিতে মনিরের স্থাবর সম্পদ
আয়কর নথিতে মনির হোসেন ৫ কোটি ৪৪ লাখ ৩৫ হাজার টাকার স্থাবর সম্পদের তথ্য উল্লেখ করেছেন। এর মধ্যে ঢাকার ঝিগাতলার ৭/এ রোডের ৬৪ নম্বর প্লটে .৫৬৪ কাঠা জমি, ২ হাজার ৬৭০ বর্গফুটের ফ্ল্যাট ও দুটি গ্যারেজ কিনেছেন। এই সম্পত্তির মূল্য দেখানো হয়েছে ৯৫ লাখ ২৫ হাজার টাকা। তবে এর প্রকৃত মূল্য দাঁড়াবে ৩ থেকে সাড়ে ৩ কোটি টাকা। ঢাকার অদূরে কেরানীগঞ্জের মধ্যেরচরে ৩৪ লাখ টাকায় পাঁচ কাঠা জমি কিনেছেন। নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জের মাইজগাঁওয়ে পাঁচ কাঠার একটি প্লট কিনেছেন, যার মূল্য ১৩ লাখ ২০ হাজার টাকা। নেত্রকোনার মোহনগঞ্জের দেওখান এলাকায় ৮ লাখ ৪০ হাজার টাকায় ২০ শতাংশ জমি কিনেছেন। মোহনগঞ্জে টেংগাপাড়ায় ১১ লাখ ২০ হাজার টাকায় .০৫ একর জমি কিনেছেন। এ ছাড়া স্থাবর সম্পদের মধ্যে রয়েছে ভোলার চরফ্যাসনের ৫.৫ শতাংশ জমি, যার মূল্য ৭৮ লাখ টাকা। এই জমিতে ২ কোটি ৮৬ লাখ টাকা খরচ করে আটতলা ভবন নির্মাণ করা হয়েছে। ভোলার চরফ্যাসনের চর নাজিমুদ্দিনে ৯৮.৮৮ শতাংশ জমি কিনেছেন, যার মূল্য ৭ লাখ ৫০ হাজার টাকা। চর নাজিমুদ্দিনে ১০ লাখ ৮০ হাজার টাকায় আরও ১৪৮ শতাংশ জমি কিনেছেন।

আয়কর নথিতে অস্থাবর সম্পদ
আয়কর নথিতে মনির হোসেন মোট ৯ কোটি ৭৫ লাখ ৪২ হাজার টাকার অস্থাবর সম্পদের কথা উল্লেখ করেছেন। এর মধ্যে ব্যাংক ও হাতে নগদ ২ কোটি ৪৫ লাখ ৫ হাজার টাকা। শেয়ারহোল্ডিংস ইন লিমিটেড কোম্পানিতে তাঁর ৬ কোটি ৪৮ লাখ ৬২ হাজার টাকার শেয়ার রয়েছে। তিনি এ কোম্পানির পরিচালকও। ২৮ লাখ ৭৩ হাজার টাকার শেয়ার, ডিবেঞ্চার, সেভিংস সার্টিফিকেট, ইউনিট সার্টিফিকেট এবং ডিপিএস ১৮ লাখ ৫১ হাজার ৩৬০ টাকার। রাকিন ডেভেলপমেন্ট কোম্পানি (বিডি) লিমিটেডে ফ্ল্যাট কেনার জন্য ২০ লাখ ২৫ হাজার টাকা অগ্রিম দেওয়া হয়েছে।
বিয়ের সময় উপহার হিসেবে পাওয়া ৬০ ভরি স্বর্ণালংকারের হিসাব দেওয়া হয়েছে। এই সম্পদের কোনো মূল্য উল্লেখ করা হয়নি। আসবাব সাড়ে ৭ লাখ টাকার, ইলেকট্রনিকস সামগ্রী ৬ লাখ ৭৫ হাজার টাকার উল্লেখ করা হয়েছে।