করোনাভাইরাসের সংক্রমণ মোকাবিলায় দেশে দেশে সামাজিক দূরত্বের নিয়মকানুন মেনে চলার ওপর জোর দেওয়া হচ্ছে। সংক্রমণ কমে আসায় কোনো কোনো দেশের কর্তৃপক্ষ এ বিষয়ে বিধিনিষেধ শিথিল করার পরিকল্পনাও করছে। কিন্তু যুক্তরাষ্ট্রের হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের একদল গবেষক বলেছেন, সামাজিক এই দূরত্ব আরও দুই বছর মেনে চলতে হবে। তাঁরা সতর্ক করে বলেছেন, করোনার সংক্রমণের হুমকি ২০২৪ সাল পর্যন্ত অব্যাহত থাকতে পারে।
হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের টি এইচ চ্যান স্কুল অব পাবলিক হেলথের পাঁচ গবেষক গবেষণাটি করেছেন। বিজ্ঞানবিষয়ক সাময়িকী সায়েন্স-এ গত মঙ্গলবার গবেষণা নিবন্ধটি প্রকাশিত হয়েছে।
সার্স করোনাভাইরাস ও মার্স করোনাভাইরাসের সংক্রমণের যেসব তথ্য যুক্তরাষ্ট্রের কাছে রয়েছে, সেগুলোর ওপর ভিত্তি করে নতুন এই মডেল দাঁড় করিয়েছেন বিজ্ঞানীরা। ঋতুচক্রের পরিবর্তন ও রোগ প্রতিরোধক্ষমতার ভিন্নতার পরিপ্রেক্ষিতে বিজ্ঞানীরা নতুন করোনাভাইরাসের সংক্রমণের গতিপ্রকৃতি ধারণা করার চেষ্টা করেছেন। এতে তাঁরা দেখেছেন, বছরের যেকোনো সময়ই করোনাভাইরাসের সংক্রমণ ছড়াতে পারে।
নতুন এই গবেষণায় বিজ্ঞানীরা সতর্ক করে বলেছেন, ২০২৪ সালের শেষ দিকে আবার মহামারি আকারে ছড়াতে পারে করোনার সংক্রমণ। আর বর্তমান বৈশ্বিক মহামারি পুরোপুরি নিয়ন্ত্রণে আনতে ২০২২ সাল পর্যন্ত সামাজিক দূরত্বের নিয়মকানুন মেনে চলতে হবে। তবে নতুন এই গবেষণায় বিজ্ঞানীরা স্পষ্ট করেননি, ২০২২ সাল পর্যন্ত পুরো সময়টাই সামাজিক দূরত্ব মেনে চলতে হবে কি না। তবে তাঁরা বলেছেন, নতুন করোনাভাইরাসের প্রতিষেধক বা চিকিৎসাপদ্ধতি উদ্ভাবনের আগপর্যন্ত সামাজিক দূরত্ব মেনে চলতে হবে।
গবেষণা নিবন্ধে আরও বলা হয়েছে, নতুন করোনাভাইরাসের সংক্রমণের পরিপ্রেক্ষিতে মানুষের মধ্যে যদি স্থায়ীভাবে রোগ প্রতিরোধক্ষমতা গড়ে ওঠে, তাহলেও এটি বিলুপ্ত হতে সময় লাগবে পাঁচ বছর বা তার কিছু বেশি দিন। চীন, দক্ষিণ কোরিয়া ও সিঙ্গাপুরের অভিজ্ঞতার কথা উল্লেখ করে নিবন্ধে আরও বলা হয়, সামাজিক দূরত্ব নিশ্চিতে নেওয়া পদক্ষেপ রোগী ও সন্দেহভাজন রোগীর সংস্পর্শে আসা ব্যক্তিদের শনাক্ত ও কোয়ারেন্টিন করতে সহায়ক হয় এবং তা স্বাস্থ্যব্যবস্থার ওপর চাপ কমায়।
খবর সাউথ চায়না মর্নিং পোস্টের।