নিজস্ব প্রতিবেদক
ঢাকাসহ সারাদেশে ধান-চাল মজুতবিরোধী অভিযান পরিচালনা করেছে খাদ্য মন্ত্রণালয়। অভিযানে অবৈধভাবে ধান-চাল মজুতের অপরাধে শতাধিক প্রতিষ্ঠানকে ৮ লাখ ৯৩ হাজার ১৫০ টাকা জরিমানা করা হয়েছে।
খাদ্য মন্ত্রণালয় জানায়, ঢাকা বিভাগে টাঙ্গাইল জেলার বিভিন্ন আড়ত/পাইকারি দোকান/হাটবাজার ও চালকলে অভিযান পরিচালনা করা হয়। অভিযানে দু’টি দোকান এবং ৫টি রাইস মিলে চাল ও ধানের অবৈধ মজুত থাকায় এবং লাইসেন্সবিহীন ব্যবসা পরিচালনা করায় ৩৯ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়। এছাড়া কিশোরগঞ্জে একটি চালের দোকানকে ২ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়।
খুলনা বিভাগে কুষ্টিয়া জেলায় বিভিন্ন দপ্তর কর্তৃক যৌথ অভিযান পরিচালনা করা হয়। অভিযানকালে ধান-চালের মজুত বেশি থাকায় তিনটি রাইস মিল প্রতিষ্ঠানকে ৭৫ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়। এছাড়া মাগুরায় অবৈধ মজুত থাকায় দু’টি প্রতিষ্ঠানকে ৬০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়েছে।
একই সময় চুয়াডাঙ্গা জেলার খাদ্য অধিদপ্তর, ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ ও কৃষি বিপণন অধিদপ্তরের যৌথ উদ্যোগে মজুতবিরোধী অভিযান পরিচালনায় তিনজন ব্যবসায়ী প্লাস্টিকের বস্তায় পণ্য বিক্রয় করায় এবং দুজন ব্যবসায়ী মেয়াদোত্তীর্ণ পণ্য বিক্রি করায় ৪০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়। এছাড়া যশোর জেলার সদর, কেশবপুর ও নাভারণ উপজেলায় ২৮টি প্রতিষ্ঠানে অভিযান পরিচালনা করে বিভিন্ন অনিয়ম পাওয়ায় ১৬ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়।
চট্টগ্রাম বিভাগে কুমিল্লার লাকসাম উপজেলার পাঁচজন পাইকারি ও খুচরা ব্যবসায়ীকে লাইসেন্স না থাকায় ২৪ হাজার ১৫০ টাকা জরিমানা আদায় করা হয়। এছাড়া ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আশুগঞ্জ উপজেলায় খাদ্য বিভাগ, উপজেলা প্রশাসন ও পুলিশের সমন্বিত অভিযানে প্লাস্টিকের বস্তা ব্যবহার করায় দুটি মিলকে ২০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়। এছাড়া কক্সবাজারের সদর উপজেলায় দুটি পাইকারি দোকানে খাদ্যশস্য লাইসেন্স না থাকায় সাত হাজার টাকা জরিমানা করা হয়।
সিলেট সদরে আটটি অভিযান পরিচালনা করা হয়। এ সময় লাইসেন্সবিহীন ব্যবসা, মূল্য তালিকা না থাকা ও বেশি দামে চাল বিক্রি করায় ৪০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়।
বিভাগগুলোর মধ্যে সবচেয়ে বেশি জরিমানা হয়েছে রাজশাহী বিভাগকে। রাজশাহী জেলা সদরে ৯টি প্রতিষ্ঠান পরিদর্শনকালে বিভিন্ন অনিয়মের জন্য জরিমানা ও সর্তক করা হয়। একটি প্রতিষ্ঠানে লাইসেন্স না থাকায় ৩ হাজার টাকা ও একটি দোকানে অবৈধ ধানের মজুত পাওয়ায় ১০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়েছে।
বিভাগের সর্বোচ্চ চাল উৎপাদনকারী জেলা নওগাঁয় সাতটি আড়ৎ/হাটবাজার এবং ৬টি রাইস মিল পরিদর্শন করা হয়েছে। পরিদর্শনকালে সাতটি প্রতিষ্ঠানে অবৈধ ধানের মজুত পাওয়ায় ৩ লাখ ৯০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়েছে।
এছাড়া নাটোরে বিভিন্ন উপজেলায় অভিযান পরিচালনা করা হয়। এ সময় মেসার্স আল-আমিন অটো চালকল ও মেসার্স কিশোর কুমার অটো রাইস মিল নামক প্রতিষ্ঠানকে প্লাস্টিকের বস্তা ব্যবহার করায় মোট ১০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়। চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলায় একটি রাইস মিল পরিদর্শন করে ১০ হাজার টাকা জরিমানা ও মজুত করা ধান ৩০ দিনের মধ্যে বাজারজাতকরণের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
এছাড়া সিরাজগঞ্জ জেলায় ৬টি উপজেলায় মজুতবিরোধী অভিযান পরিচালনা করা হয়। এরমধ্যে একটি প্রতিষ্ঠানে ফুড গ্রেইন লাইসেন্স না থাকায় ১০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়।
বিভাগের আরেক জেলা বগুড়ায় ২৭টি রাইস মিল এবং দু’টি হাটবাজার পরিদর্শন করা হয়েছে। এরমধ্যে দুজন মিল মালিককে খাদ্যশস্য লাইসেন্স ও মূল্য-তালিকা না থাকায় ১০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়। এছাড়া বিভাগের জয়পুরহাট ও পাবনা জেলায় অভিযান পরিচালনা করা হয়েছে। পরিদর্শনের সময় কোনো অবৈধ মজুত পাওয়া যায়নি এবং জরিমানা আদায় করা হয়নি।
অন্যদিকে, রংপুরের দিনাজপুর জেলার ১১টি অটো চালকল ও ২৬টি আড়তে অভিযান পরিচালন করা হয়। এসময় লাইসেন্সবিহীন ব্যবসা পরিচালনা করায় একজন আড়তদারকে ১০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়।
ময়মনসিংহ বিভাগে নেত্রকোনা জেলার বিভিন্ন উপজেলায় অভিযান পরিচালনা করা হয়। অভিযানে বিভিন্ন অনিয়মের দায়ে সদর উপজেলায় ১২টি প্রতিষ্ঠানকে তিন হাজার টাকা, মোহনগঞ্জ উপজেলায় একটি প্রতিষ্ঠানকে সাত হাজার টাকা, দুর্গাপুর উপজেলায় একটি প্রতিষ্ঠানকে সাড়ে ৭ হাজার টাকা, আটপাড়া উপজেলায় একটি প্রতিষ্ঠানকে ৫ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়।