সালথায় আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে দুই গ্রুপের সংঘর্ষ

প্রকাশিত: ৪:৫৩ অপরাহ্ণ, মার্চ ১৭, ২০২৫

ফরিদপুর প্রতিনিধি:

ফরিদপুরের সালথা উপজেলার বাগবাড়ি এলাকায় আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে দুই পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। এতে বেশ কয়েকটি বাড়িঘর ভাঙচুরের অভিযোগ পাওয়া গেছে। তবে, এ ঘটনায় এখনো কোনো হতাহতের খবর পাওয়া যায়নি।

সোমবার সন্ধ্যার পর ইফতারের পরপরই এই সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। স্থানীয়দের মতে, এ সংঘর্ষের পেছনে পূর্বের বিরোধ ও রাজনৈতিক দ্বন্দ্ব ভূমিকা রেখেছে।

জানা যায়, সালথার সাবেক উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান ও বিএনপির সাবেক নেতা আছাদ মাতুববরের সমর্থক আফতাব মৃধা এবং ফরিদপুর পৌর জামায়াতের সহকারী সেক্রেটারি জাহাঙ্গীর মোল্লার সমর্থক তুরাপ মাতুবরের মধ্যে কথাকাটাকাটির একপর্যায়ে সংঘর্ষ বাধে।

স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, সংঘর্ষের সূত্রপাত হয় সালথা বাজারে এক দেনা-পাওনা সংক্রান্ত বিরোধ থেকে। ইফতারের আগে ওলামা লীগ নেতা হারুন মাতুব্বর ও বিএনপি সমর্থক আফতাব মৃধার মধ্যে বাকবিতণ্ডা হয়। হারুন মাতুব্বর, যিনি বর্তমানে জামায়াতের সমর্থক হিসেবে পরিচিত, ক্ষমতার প্রভাব খাটিয়ে আফতাব মৃধাকে পুলিশে ধরিয়ে দেওয়ার হুমকি দেন। এ নিয়ে দুজনের মধ্যে তর্কবিতর্ক চলাকালে হারুন মাতুব্বর আফতাব মৃধাকে থাপ্পড় মারেন। পরে স্থানীয়রা এসে পরিস্থিতি সামাল দেন।

ইফতারের পর আফতাব মৃধা বিএনপি সমর্থক মিজানের দোকানের সামনে গেলে সেখানে তুরাপ মাতুবর উপস্থিত ছিলেন। তিনি দোকানের সবাইকে সেখান থেকে চলে যেতে বলেন এবং হুমকি দেন যে, না গেলে পুলিশ দিয়ে গ্রেপ্তার করাবেন। এ নিয়ে দুপক্ষের মধ্যে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে।

এ খবর ছড়িয়ে পড়লে হারুন মাতুব্বর ঢাল-কাতরা নিয়ে আফতাব মৃধাকে ধাওয়া করেন। এতে পরিস্থিতি আরও উত্তপ্ত হয়ে ওঠে। একপর্যায়ে সংঘর্ষ শুরু হলে উভয়পক্ষ একে অপরের ওপর হামলা চালায়। এ সময় জাহাঙ্গীর মোল্লার কয়েকজন সমর্থকের বাড়িঘর ভাঙচুর করা হয় বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।

জামায়াত নেতা জাহাঙ্গীর মোল্লা অভিযোগ করে বলেন, আমাদের পক্ষের কিছু লোককে আছাদ মাতুববরের দলীয় সভায় ডাকা হয়েছিল, কিন্তু তারা সেখানে যায়নি। সেই ক্ষোভ থেকেই তার সমর্থকরা আমাদের উপর হামলা চালিয়েছে এবং ১০টি বাড়িঘর ভাঙচুর করেছে।

অন্যদিকে, বিএনপি নেতা আছাদ মাতুববর বলেন, আসলে জাহাঙ্গীর মোল্লা আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের নিয়ে এলাকায় আধিপত্য বিস্তারের চেষ্টা করছে। আমি সংঘর্ষের পক্ষে নই। ঘটনার সময় আমি ছাত্রদলের ইফতার মাহফিলে ছিলাম। খবর পেয়ে পুলিশকে জানাই।

সালথা থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো. আতাউর রহমান বলেন, সংঘর্ষের খবর পেয়ে পুলিশ দ্রুত ঘটনাস্থলে পৌঁছে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। বর্তমানে এলাকা শান্ত রয়েছে। অভিযোগ পেলে তদন্ত করে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।