সিজার করতে গিয়ে কিডনি ড্যামেজ, ২ চিকিৎসকের নামে আদালতে মামলা
নিউজ পোস্ট বিডি নিউজ পোস্ট বিডি
নিউজ পোস্ট বিডি
জেলা প্রতিনিধি, রাজবাড়ী
রাজবাড়ীতে ভুল চিকিৎসায় জুবাইদা মীরা (২৩) নামে সিজারিয়ান রোগীর মৃত্যু ঘটনায় ডা. শারমিন আক্তার সুমি ও ডা. সিরাজুম মুনিরা প্রত্যাশা নামে ২ চিকিৎসকের বিরুদ্ধে আদালতে মামলা দায়ের হয়েছে।
মঙ্গলবার (১৯ মার্চ) দুপুরে রাজবাড়ীর ১নং আমলী আদালতে মামলাটি দায়ের করেন রাজবাড়ী সদর উপজেলার ভগিরথপুর গ্রামের নিহত জুবাইদা মীরার বাবা মো. জলিল মোল্লা। নিহত মীরা রাজবাড়ী সদর উপজেলার মূলঘর ইউনিয়নের সাব্বির মোল্লার স্ত্রী।
মামলার আসামি ডা. শারমিন আক্তার সুমি খোকসা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স হাসপাতালের জুনিয়র কনসালটেন্ট (গাইনী) ও ডা. সিরাজুম মুনিরা প্রত্যাশা রাজবাড়ী পুলিশ লাইন্সের পুলিশ হাসপাতালের মেডিকেল অফিসার হিসেবে কর্মরত। তারা দুজনই রাজবাড়ী আদর্শ ক্লিনিকে প্রাইভেটভাবে চিকিৎসা সেবা প্রদান করেন। তারা সম্পর্কে চাচাতো বোন।
বাদীপক্ষের আইনজীবী অ্যাডভোকেট হাবিবুর রহমান বাচ্চু ও অ্যাডভোকেট গোলাম মোস্তফা বলেন, মামলাটি বিচারক তদন্তপূর্বক আগামী ২০ মের মধ্যে প্রতিবেদন দাখিলের জন্য পিবিআইকে নির্দেশ দিয়েছেন।
এ বিষয়ে নিহত জুবাইদা মীরার স্বামী সাব্বির মোল্লা বলেন, গত ৩১ ডিসেম্বর আদর্শ ক্লিনিকে মীরাকে সিজার করেন ডা. সুমি ও তার বোন প্রত্যাশা। সিজারের পর থেকেই মীরা খুবই অসুস্থ হয়ে পড়ে। মীরার শারীরিক অবস্থা খুব খারাপ হয়ে গেলে আদর্শ ক্লিনিকের চিকিৎসক ডা. সুমি তাকে আদর্শ ক্লিনিকে না রেখে কৌশলে ঢাকায় রেফার্ড করে।
পরে মীরাকে ঢাকার পপুলার হাসপাতালে ভর্তি করলে সেখানকার চিকিৎসকরা জানান সিজারিয়ান অপারেশনের সময় মীরার কিডনিতে খোঁচা লেগে কিডনি ড্যামেজ হয়ে যায়। এরপর থেকেই মীরাকে আইসিইউতে রাখতে হয় ও কিডনি ডায়ালসিস করতে হয়। প্রায় ৪০ দিন চিকিৎসাধীন থাকার পর মীরা মারা যায়। চিকিৎসকের ভুলে আমার স্ত্রী মারা গেছে। আমার সন্তান এতিম হয়ছে। আর কোনো সন্তান যেন এভাবে এতিম না হয় এবং ভুল চিকিৎসায় যাতে কেউ মারা না যায় তার জন্য আমরা আদালতে মামলা দায়ের করেছি।
উল্লেখ্য, রাজবাড়ী শহরের সজ্জনকান্দা পাবলিক হেলথ এলাকার আদর্শ ক্লিনিকে গত ৩১ ডিসেম্বর জুবাইদা মীরার সিজার করেন ডা. শারমিন আক্তার সুমি, এ সময় ডাক্তার সুমিকে সাহায্য করে তারই চাচাতো বোন ডা. সিরাজুম মুনিরা প্রত্যাশা।
সিজারকালে চিকিৎসক কর্তৃক রোগী জুবাইদা মীরার কিডনী ড্যামেজ হওয়ার ঘটনা ঘটে। দীর্ঘ ৪০ দিন জীবন মৃত্যুর সন্ধিক্ষণে থাকার পর গত ৯ ফেব্রুয়ারি সকাল সাড়ে ১০টায় রাজধানী ঢাকার ধানমন্ডির পপুলার হসপিটালে আইসিইউতে থাকা অবস্থায় জুবাইদা মীরা শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন। প্রায় ৪০ দিন ঢাকার পপুলার হাসপাতালে চিকিৎসাধীন থাকায় মীরার পরিবারের প্রায় ২০ লাখ টাকার মতো খরচ হয়েছে বলে জানা গেছে।