সিটি নির্বাচন: সিলেটে এগিয়ে আনোয়ারুজ্জামান, রাজশাহীতে লিটন
নিউজ পোস্ট বিডি নিউজ পোস্ট বিডি
নিউজ পোস্ট বিডি
সিটি করপোরেশন নির্বাচনের শেষ ধাপে রাজশাহী ও সিলেট সিটির ভোট গণনা চলছে। বুধবার (২১ জুন) সকাল ৮টা থেকে ভোটগ্রহণ শুরু হয়ে চলে বিকেল ৪টা পর্যন্ত। সবশেষ ঘোষিত বেসরকারি ফলে দুই সিটিতেই আওয়ামী লীগের প্রার্থীরা এগিয়ে আছেন ।
সিলেট সিটি নির্বাচন
সিলেট সিটি নির্বাচনের ১৯০ কেন্দ্রের মধ্যে ১৭৬ কেন্দ্রের ফল বেসরকারিভাবে জানিয়েছে নির্বাচন কমিশন। প্রাপ্ত ফল অনুযায়ী আনোয়ারুজ্জামান চৌধুরী নৌকা প্রতীক নিয়ে এগিয়ে আছেন। তার প্রাপ্ত ভোট ১ লাখ ৯ হাজার ১৯৬। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী নজরুল ইসলাম বাবুল লাঙ্গল প্রতীকে পেয়েছেন ৪৮ হাজার ১৪৪ ভোট।
প্রথমে নির্বাচনে ভোটার উপস্থিতি কম থাকলেও বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে বাড়ে ভোটার উপস্থিতি। শেষ পর্যন্ত উৎসবমুখর ও শান্তিপূর্ণ পরিবেশে ৪৬ শতাংশ ভোট পড়ে বলে জানান প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কাজী হাবিবুল আউয়াল।
এরইমধ্যে নির্বাচন বর্জন করে মাঠ ছেড়েছেন ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের হাফেজ মাওলানা মাহমুদুল হাসান।
দলীয় মনোনয়নে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন আওয়ামী লীগের আনোয়ারুজ্জামান চৌধুরী, জাতীয় পার্টির নজরুল ইসলাম বাবুল ও জাকের পার্টির মো. জহিরুল আলম। এছাড়া স্বতন্ত্র হিসেবে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন মো. আবদুল হানিফ (কুটু), মো. ছালাহ উদ্দিন (রিমন), মো. শাহ্ জামান মিয়া ও মোশতাক আহমেদ রউফ মোস্তফা।
কাউন্সিলর পদে ৩৬০ জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। তাদের মধ্যে ২৭৩ জন সাধারণ ওয়ার্ডে এবং সংরক্ষিত ওয়ার্ডে (নারী কাউন্সিলর) ৮৭ জন নারী প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন।
সিসিক নির্বাচনে মোট ভোটার ৪ লাখ ৮৭ হাজার ৭৫৩ জন। মোট ৪২ ওয়ার্ডে ভোটকেন্দ্র ছিল ১৯০টি। এর মধ্যে স্থায়ী মোট ভোটকক্ষ ১ হাজার ৩৬৭টি এবং অস্থায়ী ছিল ৯৫টি। ১৭৪৭টি সিসি ক্যামেরার মাধ্যমে সিসিক নির্বাচনে ভোটগ্রহণ মনিটরিং করা হয়।
রাজশাহী সিটি নির্বাচন
রাজশাহী সিটি নির্বাচনে শান্তিপূর্ণ পরিবেশে ভোটগ্রহণ শেষে চলছে গণনা। রাজশাহী সিটির ১৫৫ কেন্দ্রের মধ্যে ৯৬ কেন্দ্রের বেসরকারি ফলে ৯৬ হাজার ৬২০ ভোট পেয়েছেন আওয়ামী লীগের প্রার্থী খায়েরুজ্জামান লিটন। অন্যদিকে হাতপাখার মুরশিদ আলম ৮ হাজার ৬১৮ ভোট পেয়েছেন।
নির্বাচনের প্রথমদিকে ভোটার উপস্থিতি কম থাকলেও বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে বাড়ে ভোটার উপস্থিতি। শেষ পর্যন্ত উৎসবমুখর ও শান্তিপূর্ণ পরিবেশে ৫২ শতাংশ ভোট পড়ে বলে জানান প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কাজী হাবিবুল আউয়াল।
রাজশাহী সিটি নির্বাচনে এবার মেয়র পদে প্রার্থী তিনজন। এদের মধ্যে আওয়ামী লীগ প্রার্থী সাবেক মেয়র এ এইচ এম খায়রুজ্জামান লিটন (নৌকা), জাতীয় পার্টির প্রার্থী সাইফুল ইসলাম স্বপন (লাঙ্গল) ও জাকের পার্টির প্রার্থী লতিফ আনোয়ার (গোলাপ ফুল)। ইসলামী আন্দোলনের প্রার্থী মুরশিদ আলম (হাতপাখা) নির্বাচন বয়কট করেছেন।
খুলনা ও বরিশাল সিটি নির্বাচনে দ্বিতীয় অবস্থানে থাকা ইসলামী আন্দোলন ভোট বর্জন করায় অনেকটা নির্ভার আওয়ামী লীগের মেয়র প্রার্থী খায়রুজ্জামান লিটন।
এদিকে, রাজশাহীর সিটি নির্বাচন বিশ্লেষণ করে দেখা যায়, প্রতিবারই আওয়ামী লীগ এবং বিএনপির মধ্যে তীব্র প্রতিদ্বন্দ্বিতা হয়েছে। সিটির প্রথম নির্বাচিত মেয়র বিএনপি নেতা মিজানুর রহমান মিনু। ১৯৯৪ সালে তিনি মেয়র নির্বাচিত হন। টানা দুবারের জয়ে তিনি ২০০৭ সাল পর্যন্ত দায়িত্ব পালন করেন।
এদিকে, বুধবারের ভোটে আওয়ামী লীগ জিতলে টানা দুবার এবং সব মিলে তিনবার মেয়রের চেয়ারে বসবেন খায়রুজ্জামান লিটন।
২০১৮ সালের নির্বাচনে লিটনের মূল প্রতিদ্বন্দ্বী ছিলেন বিএনপির প্রার্থী বুলবুল। ২০১৮ সালে খায়রুজ্জামান লিটন নৌকা প্রতীকে পান ১ লাখ ৬৫ হাজার ৯৬ ভোট। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী বিএনপির মোসাদ্দেক হেসেন বুলবুল ধানের শীষ প্রতীকে পান ৭৭ হাজার ৭০০ ভোট। ভোট পড়েছিল ৭৮. ৮৬ শতাংশ।
২০১৩ সালে মেয়র পদে প্রার্থী ছিলেন তিনজন। ১৮ দলীয় জোটের সমর্থনে বিএনপির মহানগর যুবদলের আহবায়ক মোসাদ্দেক হেসেন বুলবুল ৪৭ হাজার ভোটের ব্যবধানে হারান আওয়ামী লীগের মহানগর শাখার সাধারণ সম্পাদক খায়রুজ্জামান লিটনকে। ওইবার ভোট পড়েছিল ৭৬.০৯ শতাংশ।
আর ২০০৮ সালে বিএনপির প্রার্থী মোসাদ্দেক হেসেন বুলবুলের ৭৪ হাজার ৫৫০ ভোটের বিপরীতে খায়রুজ্জামান লিটন ৯৮ হাজার ৩৬০ ভোট পেয়ে নির্বাচিত হন। ফলে দেখা যাচ্ছে, প্রতিবারই আওয়ামী লীগ এবং বিএনপি প্রার্থীর মধ্যেই ভোটযুদ্ধ হয়েছে।
এবার ২৯টি ওয়ার্ডে কাউন্সিলর প্রার্থী ১১১ জন। একটি ওয়ার্ডে একজন কাউন্সিলর প্রার্থী বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় বিজয়ী হয়েছেন। এছাড়া সংরক্ষিত নারী কাউন্সিলর পদে রয়েছেন ৪৬ জন প্রার্থী। এখানে ভোটার ৩ লাখ ৫১ হাজার ৯৮২ জন। এছাড়া তৃতীয় লিঙ্গের ভোটার রয়েছেন ছয়জন। তৃতীয় লিঙ্গের একজন সংরক্ষিত কাউন্সিলর প্রার্থীও রয়েছেন।
১৫৫টি কেন্দ্রে ইভিএমে সিটি নির্বাচনের ভোটগ্রহণ চলে। ভোটকক্ষ ছিল ১১৫৩টি। ১৪৬৩টি ক্যামেরার মাধ্যমে রাসিক নির্বাচনে ভোটগ্রহণ মনিটরিং করা হয়।