সিরাজগঞ্জে প্রার্থীর সঙ্গে গোপন বৈঠক: প্রিসাইডিং-পোলিং অফিসারদের জিজ্ঞাসাবাদ করছে ডিবি
নিউজ পোস্ট বিডি নিউজ পোস্ট বিডি
নিউজ পোস্ট বিডি
জেলা প্রতিনিধি,সিরাজগঞ্জঃ
সিরাজগঞ্জের কালিয়া হরিপুর ইউনিয়নের কাদাই গ্রামের গার্ডেন প্যালেস রিসোর্টে প্রিসাইডিং ও পোলিং অফিসারদের নিয়ে উপজেলা চেয়ারম্যান প্রার্থীর গোপন বৈঠকের ঘটনায় গ্রেপ্তারকৃতদের জিজ্ঞাসাবাদ চলছে। মঙ্গলবার দুপুরে গ্রেপ্তার ছয়জনকে পুলিশ সুপার কার্যালয় এনে জিজ্ঞাসাবাদ করে ডিবি। গোপন বৈঠকের অপরাধে ছয়জনকে সোমবার রাতে গ্রেপ্তার করে ডিবি পুলিশ।
এ বিষয়ে জেলা প্রশাসক মীর মোহাম্মদ মাহবুবুর রহমান বলেন, ঘটনার বিষয়ে সিরাজগঞ্জের পুলিশ সুপার ডিবি পুলিশকে দিয়ে তদন্ত করছেন। তদন্ত রিপোর্ট পাওয়ার পর এ ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।জেলা নির্বাচন অফিসার এবং সদর বেলকুচি ও কাজিপুর উপজেলার দায়িত্বপ্রাপ্ত রিটার্নিং কর্মকর্তা মোহাম্মদ শহিদুল ইসলাম বলেন, নির্বাচন কমিশনও রিপোর্টের ওপর তাকিয়ে রয়েছে। তদন্ত রিপোর্ট পাওয়ার পর প্রতিবেদন নির্বাচন কমিশনে পাঠিয়ে দেওয়া হবে। এর ভিত্তিতেই সিদ্ধান্ত হবে।
পুলিশ সুপার আরিফুর রহমান মন্ডল মঙ্গলবার দুপুরে বলেন, গভীর তদন্ত চলছে। খুব শিগগিরই রিপোর্ট দেওয়া হবে।এদিকে গ্রেপ্তারকৃতদের জামিনের আশায় তাদের স্বজনদের মঙ্গলবার দিনভর থানা ও পুলিশ সুপার কার্যালয়ে ঘুরতে দেখা গেছে। আইনজীবীদের সঙ্গে নিয়ে কেউ কেউ পুলিশ সুপার কার্যালয়ের সামনে পুলিশ ক্যাফেতে দীর্ঘ সময় বসে থাকেন।
এদিকে, সিরাজগঞ্জ সদর উপজেলার চেয়ারম্যান প্রার্থী যুবলীগ আহ্বায়ক রাশেদ ইউসুফ জুয়েল বলেন, ‘রোববার রাতে কাদাই গ্রামে প্যালেস রিসোর্টে প্রতিপক্ষ প্রার্থী রিয়াজ উদ্দিন নির্বাচনের দায়িত্বপ্রাপ্ত কয়েকজন প্রিসাইডিং ও পোলিং অফিসারদের নিয়ে গোপন বৈঠক করেন। নির্বাচনে ইলেকশন ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের উদ্দেশ্যে উৎকোচের বিনিময়ে অবৈধভাবে গোপন ওই সভা করা হয় বলে স্থানীয় একাধিক সূত্রে জানা গেছে। আমি নির্বাচন কমিশন বরাবর অভিযোগ দিয়েছি, রিয়াজ উদ্দিনের প্রার্থিতা বাতিলের জন্য কমিশনকে অনুরোধ জানিয়েছি।’
সদর উপজেলার চেয়ারম্যান প্রার্থী রিয়াজ উদ্দিন বলেন, গোপন বৈঠকের বিষয়ে যে ধরনের অপরাধের কথা বলা হচ্ছে বাস্তবে এর সঙ্গে আমার সম্পৃক্ততা নেই। নির্বাচনের শুরু থেকেই একটি মহল বিশেষ উদ্দেশ্যে আমার বিরুদ্ধে নানা প্রপাগান্ডা ছড়াচ্ছে। এটি তারই অংশ।এ বিষয়ে ডিবির ওসি জুলহাস উদ্দিন জানান, নির্বাচন কমিশনের দায়ের করা মামলার কারণে তারা পুলিশ সুপারের নির্দেশে বিষয়টি তদন্ত করছেন। সাক্ষ্য প্রমাণের ভিত্তিতেই তাদের জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। নিরপরাধ কাউকে হয়রানি করা হচ্ছে না।
প্রসঙ্গত, রোববার রাতে সিরাজগঞ্জে উপজেলা নির্বাচনকে কেন্দ্র করে প্রার্থীর সঙ্গে গোপনে বৈঠক করার অভিযোগে ৬ প্রিসাইডিং ও পোলিং অফিসারকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। গ্রেপ্তাররা হলেন, যমুনা ডিগ্রি কলেজের সহকারী অধ্যাপক সিরাজুল ইসলাম, এসবি রেল কলোনি উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আশরাফুল ইসলাম, পুলিশ লাইন্স স্কুল অ্যান্ড কলেজের প্রভাষক আবু সামা, বাহুকা কলেজের প্রভাষক বাচ্চু কুমার ঘোষ, জনতা ব্যাংক জোনাল অফিসের প্রিন্সিপাল অফিসার ইয়াসির আরাফাত এবং শিয়ালকোল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক ও জেলা শিক্ষক সমিতির সভাপতি অমিনুর ইসলাম। সিরাজগঞ্জের জেলা প্রশাসক মীর মোহাম্মদ মাহবুবুর রহমান সোমবার রাত ১০টার দিকে নিজ কার্যালয়ে প্রেস ব্রিফিংয়ে স্থানীয় গণমাধ্যমকর্মীদের এসব তথ্য জানান। ওই সভায় পুলিশ সুপার মো. আরিফুর রহমান মণ্ডল, সদর-কাজিপুর-বেলকুচি উপজেলার প্রথম স্তরের উপজেলা নির্বাচনের রিটার্নিং অফিসার জেলা নির্বাচন অফিসার মোহাম্মদ শহিদুল ইসলামসহ পদস্থ কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন। জেলা প্রশাসক বলেন, সদর উপজেলার কাঁদাই গ্রামে গার্ডেন প্যালেস রিসোর্টে রোববার রাতে উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বী এক প্রার্থীর সঙ্গে গোপন বৈঠকে মিলিত হওয়ার অপরাধে তাদের গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।