সুইডেনের ন্যাটোয় যোগদানের ক্ষেত্রে বাধা দূর হচ্ছে, এক ভাষণে এমন পূর্বাভাস দিয়েছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট। নরওয়েতে ন্যাটোর পররাষ্ট্রমন্ত্রীদের সম্মেলনে ইউক্রেনের যোগদানের বিষয়েও আলোচনা হয়েছে।
মলডোভায় ইউরোপীয় দেশগুলোর সম্মেলনে যখন ইউক্রেনের ন্যাটোয় যোগদানের বিষয়টি আলোচিত হচ্ছিল, তখন এই সামরিক জোটের সদস্য দেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রীরা নরওয়ের রাজধানী অসলোয় ইউক্রেন ছাড়াও অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ বিষয় নিয়ে আলোচনা করছিলেন। মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন একই দিনে ন্যাটোর সম্প্রসারণ সম্পর্কে গুরুত্বপূর্ণ ইঙ্গিত দিয়েছেন।
মার্কিন বিমান বাহিনীর অ্যাকাডেমিতে ভাষণ দিতে গিয়ে বাইডেন বলেন, সুইডেন শীঘ্রই ন্যাটোয় যোগ দিতে চলেছে। অর্থাৎ এ বিষয়ে তুরস্কের আপত্তি তুলে নিতে কোনো এক বোঝাপড়ার ইঙ্গিত দিয়েছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট। উল্লেখ্য, গত সোমবার তিনি তুরস্কের সদ্য পুনর্র্নিবাচিত প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়েপ এরদোয়ানের সঙ্গে টেলিফোনে কথা বলে জয়ের জন্য অভিনন্দন জানান। এরদোয়ান আবার এফ-১৫ যুদ্ধবিমান কেনার ইচ্ছা প্রকাশ করেন। অন্যদিকে বাইডেন ন্যাটোয় সুইডেনের যোগদানের প্রশ্নে তুরস্কের আপত্তি তুলে নেওয়ার আর্জি জানান। তবে হোয়াইট হাউস যুদ্ধবিমান বিক্রির শর্তে দুই নেতার কোনো বোঝাপড়ার সম্ভাবনা উড়িয়ে দিয়েছে। আগামী জুলাই মাসে লিথুয়েনিয়ার রাজধানী ভিলনিউসে ন্যাটোর শীর্ষ সম্মেলনে দুই নেতার সাক্ষাৎ হবার কথা।
বৃহস্পতিবার বিমানবাহিনীর নতুন সদস্যদের উদ্দেশ্যে ভাষণে বাইডেন বলেন, রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন সামরিক জোট ন্যাটোর মধ্যে ভাঙন ধরানোর যে চেষ্টা চালিয়েছিলেন, তা ব্যর্থ হয়েছে। বরং এই জোট আরও চাঙা হয়ে উঠেছে। ইউক্রেনের প্রতি আমেরিকার লাগাতার সমর্থন ও সহায়তার অঙ্গীকার করেন তিনি।
অসলোয় ন্যাটো পররাষ্ট্রমন্ত্রীদের সম্মেলনে মহাসচিব ইয়েন্স স্টলটেনবার্গও সুইডেনের সদস্যপদ নিয়ে মন্তব্য করেছেন। তিনি হাঙ্গেরি ও তুরস্কের উদ্দেশ্যে সে বিষয়ে আপত্তি তুলে নেওয়ার ডাক দেন। ন্যাটোর অন্যান্য দেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রীরাও এই দুই দেশের ওপর চাপ সৃষ্টি করেছেন। স্টলটেনবার্গ তুরস্কে গিয়ে যত দ্রুত সম্ভব বাধা দূর করতে চান। তিনি মনে করিয়ে দেন, তুরস্কের সংশয় দূর করতে বৃহস্পতিবার থেকেই সুইডেনে সন্ত্রাসবিরোধী নতুন আইন কার্যকর হয়েছে।
অসলোর সম্মেলনে স্টলটেনবার্গ ইউক্রেনের প্রতি অবিচল সমর্থন জানিয়েছেন। তার মতে, সে দেশ এবার রাশিয়ার বিরুদ্ধে পালটা সামরিক অভিযান চালাতে প্রস্তুত। তিনি ইউক্রেনের দীর্ঘমেয়াদী প্রতিরক্ষা জোরদার করতে ন্যাটোর সহায়তার প্রয়োজন তুলে ধরেন। স্টলটেনবার্গ আবার বলেন, যুদ্ধ শেষ হবার পর ইউক্রেনের নিরাপত্তার গ্যারেন্টি পাওয়া উচিত।