সাজ্জাদ হোসেন
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ে (বিএসএমএমইউ) নতুন উপাচার্য হিসেবে নিয়োগ পেয়েছেন অধ্যাপক দীন মো. নূরুল হক। গত ১১ মার্চ তাকে নিয়োগের প্রজ্ঞাপন জারি করে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের স্বাস্থ্যশিক্ষা ও পরিবারকল্যাণ বিভাগ।
২৮ মার্চ বর্তমান উপাচার্য অধ্যাপক শারফুদ্দিন আহমেদের চেয়ারে বসবেন দীন মো. নূরুল হক।
এর আগে গত ৪ মার্চ ‘বিএসএমএমইউয়ের নতুন উপাচার্য হচ্ছেন ডা. দীন মো. নূরুল হক’—এমন শিরোনামে প্রথম সংবাদ প্রকাশ করে এরপর থেকেই বিএসএমএমইউতে ডা. শারফুদ্দিনের বিদায় ঘণ্টা বাজতে শুরু করে। এছাড়া নতুন উপাচার্য নিয়োগের প্রজ্ঞাপন জারির পর বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষও সুন্দর একটি বিদায়ের প্রস্তুতি শুরু করে।তবে বিদায়ের আগ মুহূর্তে এডহকে নিয়োগ পাওয়া কর্মকর্তা-কর্মচারীদের চাকরি স্থায়ী করতে তড়িঘড়ি করে সিন্ডিকেট মিটিং করতে চাওয়ার ঘটনায় বিশ্ববিদ্যালয়ে পরিস্থিতি উত্তপ্ত হয়।
জানা গেছে, শেষ মেয়াদে এসে নিজ অনুসারীদের নিয়ে অনেকটাই কোণঠাসা হয়ে পড়েছেন ‘ডায়নামিক ভিসি’ হিসেবে খ্যাতি পাওয়া শারফুদ্দিন আহমেদ। তবে কী একটি সুন্দর বিদায়ও জুটবে না দেশসেরা মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের এই উপাচার্যের!বিএসএমএমইউর একটি সূত্র জানিয়েছে, নতুন ভিসি অধ্যাপক ডা. দীন মোহাম্মদ নূরুল হকের নাম ঘোষণার পর থেকেই ঘুম হারাম হয় শারফুদ্দিন আহমেদের। তখন থেকেই তাড়াহুড়ো করে আটকে থাকা অসমাপ্ত নিয়োগ কাজ শেষ করতে চান। যা নিয়েই মূলত ক্যাম্পাস উত্তপ্ত হয়।
কেউ কেউ বলছেন, ডা. শারফুদ্দিনের দ্বিতীয় মেয়াদে উপাচার্য হিসেবে থাকার পরিকল্পনা ভেস্তে যাওয়ার পর পরই শুরু হয় এই অস্থিতিশীলতা। বর্তমান ভিসি শারফুদ্দিন আহমেদের মেয়াদকালে যে নিয়োগগুলো হয়েছে, তা অধিকাংশই বিতর্কিত। যেগুলোতে কয়েক কোটি টাকার নিয়োগ বাণিজ্যের অভিযোগ রয়েছে। একই অভিযোগ রয়েছে সীমাহীন স্বজনপ্রীতিরও, যা নিয়ে নিউজ পোস্টসহ বিভিন্ন সংবাদ মাধ্যমে খবর প্রকাশ হয়েছে।
এদিকে বিএসএমএমইউয়ে বিরাজমান এই পরিস্থিতিতে সব ধরনের মিছিল, সভা-সমাবেশ নিষিদ্ধ করা হয়েছে। একইসঙ্গে অনাকাঙ্ক্ষিত পরিস্থিতি সামাল দিতে বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। এছাড়া গত এক সপ্তাহ যাবৎ শারফুদ্দিন আহমেদের রুমের সামনে মোতায়েন করা হয়েছে অতিরিক্ত আনসার সদস্য।
এর আগে গত ১৪ মার্চ (বৃহস্পতিবার) ও ১৬ মার্চ (শনিবার) বিক্ষোভ মিছিল-সমাবেশ করে আওয়ামী লীগপন্থি স্বাধীনতা চিকিৎসক পরিষদ (স্বাচিপ) সংগঠনের শিক্ষকরা। এরপর সর্বশেষ ২৩ মার্চ (শনিবার) সিন্ডিকেট মিটিংয়ের মাধ্যমে অবৈধ নিয়োগের অভিযোগে বিশ্ববিদ্যালয়ে আবারও বিক্ষোভ করেন চিকিৎসকদের একটি পক্ষ।
আমরা একাডেমিক কাউন্সিলের একটি মিটিং করতে চেয়েছিলাম। সেখানে কিছু পরীক্ষার রেজাল্ট প্রকাশের কথা ছিল। এরমধ্যে কিছু চিকিৎসক এসে বলল এই মিটিং করার দরকার নেই। এর মধ্যেই বাইরে শুনি কিছু মানুষ হইহুল্লোর করছে। তারা চাচ্ছে যেহেতু আমার শেষ সময়, আমি যেন কোনো কিছু না করি। আমিও আমার শেষ সময়ে কোনো ধরনের ঝামেলায় জড়াতে চাই না, তাই আমি মিটিংটি স্থগিত করেছি।
উপাচার্য শারফুদ্দিন আহমেদ।
এসময় উপাচার্যের ব্যক্তিগত সহকারী ডা. রাসেল আহমেদ, সুপার স্পেশালাইজড হাসপাতালের অতিরিক্ত পরিচালক ডা. রসূল আমিনসহ কয়েকজনকে মারধর করে বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বের করে দেওয়া হয়।
থমথমে আছে বিএসএমএমইউ, বিভক্ত কর্মকর্তা-কর্মচারীরা
সরেজমিনে বিএসএমএমইউ-তে দেখা গেছে, সমসাময়িক বিষয়গুলো নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের মধ্যে বিভক্তি তৈরি হয়েছে। যার ফল গত প্রায় এক মাস ধরে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রায় সকল কার্যক্রম থমকে আছে। এমনকি এসব ঘটনায় চাপা ক্ষোভ বিরাজ করছে একটি পক্ষের মধ্যে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক চিকিৎসক বলেন, গত প্রায় মাস খানেক ধরে বিশ্ববিদ্যালয় যেন অনেকটাই থমকে আছে। কর্মকর্তা-কর্মচারীরা নিজেদের মতো আসছেন, যাচ্ছেন। যা ইচ্ছে করছেন, যেখানে ইচ্ছা যাচ্ছেন। বিশ্ববিদ্যালয়ের নিয়মিত কাজকর্মে কারোরই কোনো ভ্রুক্ষেপ নেই, কোনো জবাবদিহিতাও নেই। জাতির পিতার নামে একটা বিশ্ববিদ্যালয়ের এমন অবস্থা হবে, কখনও কল্পনাও করতে পারিনি।তিনি বলেন, যতদিন পর্যন্ত শারফুদ্দিনের বিদায় না হবে এবং নতুন উপাচার্য দায়িত্ব না নেবে, ততদিন পর্যন্ত অবস্থার পরিবর্তনের সম্ভাবনা নেই।
নাম না প্রকাশের শর্তে আরও কয়েকজন চিকিৎসক জানান, বিএসএমএমইউ-তে ইট-কাঠের দেয়াল পর্যন্ত জানে, যাদের থেকে টাকা নিয়েছে তাদের নিয়োগ দিয়ে যেতে না পারলে ভিসিকে টাকা ফেরত দিয়ে যেতে হবে। এ জন্য শেষ সময় ভিসি সিন্ডিকেট মিটিং করতে ব্যস্ত হয়ে পড়ছেন। এছাড়া ভিসির মেয়াদকালে তার অনুসারীরা অনেক বেশি সুযোগ-সুবিধা নিয়েছেন। তারা অন্যদের কোণঠাসা করে রেখেছেন বলেও অভিযোগ উঠেছে।
নিয়মের তোয়াক্কা না করে শেষ সময়েও নিয়োগের অভিযোগ
১৯৯৯ সালের ২৪ জুন সিন্ডিকেটের ৫ম সভায় ‘সিন্ডিকেটের কার্য-পরিচালনা প্রবিধান’ অনুমোদন পায়। প্রবিধানে বলা হয়, সভার কোরামের জন্য চেয়ারম্যানসহ ন্যূনতম ৯ (নয়) জন সদস্যের উপস্থিতির প্রয়োজন হবে।নিয়মিত সভায় ভাইস-চ্যান্সেলর সভার আলোচ্য সূচি নির্ধারণ করবেন। আলোচ্য সূচিতে অন্তর্ভুক্তির জন্য কোনো সদস্য কোনো প্রস্তাব উপস্থাপন করতে চাইলে তা সভার অন্তত ১৫ দিন পূর্বে বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্টারের নিকট প্রেরণ করতে হবে।
এছাড়াও সভার বিজ্ঞপ্তি সভার নির্ধারিত তারিখের অন্তত ৭ দিন পূর্বে লিখিতভাবে এবং আলোচ্য সূচি ও তৎসম্পর্কিত কাগজপত্র সভার নির্ধারিত তারিখের অন্তত ৫ দিন পূর্বে সদস্যদের নিকট প্রেরণ করতে হবে।বিএসএমএমইউয়ের নিয়ম অনুযায়ী, সাধারণত যে কোনো জনবল নিয়োগের জন্য প্রথমত সিন্ডিকেট মিটিংয়ে উত্থাপন করতে হবে, এরপর সবার সম্মতিতে পাস হলেই নিয়োগ কার্যক্রম সম্পাদন করা যাবে।
ক্যাম্পাসে একজন ভিসি যাবেন, অন্য একজন আসবেন এটাই স্বাভাবিক। কিন্তু নতুন ভিসির নাম ঘোষণার পর থেকেই ক্যাম্পাসে পরিস্থিতি খারাপ হতে শুরু করেছে। এর অনেক কারণ আছে। এতো ব্যাখ্যা আমি দিতে পারবো না। তবে গত দেড় বছরে এই ভিসির (শারফুদ্দিন আহমেদ) আশেপাশে একটা সিন্ডিকেট তৈরি হয়েছে। তারা ক্ষমতার এমন অপব্যবহার করেছে, যাতে করে পুরো ক্যাম্পাসে একটা ক্ষোভ তৈরি হয়েছে।
প্রক্টর অধ্যাপক ডা. মো. হাবিবুর রহমান দুলাল।
বিশ্ববিদ্যালয়ের এসব নিয়ম-কানুন খাতা-পত্রে লিপিবদ্ধ থাকলেও উপাচার্যের শেষ সময়ে এসবের কিছুই মানা হচ্ছে না বলে অভিযোগ একটি পক্ষের।
তাদের দাবি, চিকিৎসক, কর্মকর্তা-কর্মচারীদের তীব্র বিরোধিতার মুখেও উপাচার্য শারফুদ্দিন আহমেদ নিজস্ব লোকদের নিয়ে প্রতিনিয়তই কিছু নিয়োগ কার্যক্রম পরিচালনা করেছেন।এক্ষেত্রে নিয়োগপত্রে পেছনের তারিখ ব্যবহার করার অভিযোগও রয়েছে বিরোধীদের।বিগত দিনের কোনো ভিসি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে সামগ্রিকভাবে বিদায় সংবর্ধনা পাননি। এর কারণ শেষ সময়ে তাদের কর্মকাণ্ড, যা খুবই দুঃখজনক।
এ বিষয়ে স্বাধীনতা চিকিৎসক পরিষদের (স্বাচিপ) বিএসএমএমইউ শাখার সদস্য সচিব অধ্যাপক মো. আরিফুল ইসলাম জোয়ারদার টিটো বলেন, আমাদের প্রতিবাদের পরও শুনেছি প্রতিদিনই গোপনে কিছু নিয়োগ কার্যক্রম পরিচালনা করছেন উপাচার্য। কিন্তু এগুলো তিনি কিভাবে একা একাই নিয়মনীতির তোয়াক্কা না করে করছেন, সেটা আমার বুঝে আসছে না।
পূর্ববর্তী ভিসির ভাগ্যবরণ করছেন শারফুদ্দিন আহমেদ!
কথিত আছে, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের পূর্ববর্তী উপাচার্য অধ্যাপক ডা. কনক কান্তি বড়ুয়া তার শেষ সিন্ডিকেট মিটিং করে যেতে পারেননি। এমনকি তীব্র বিরোধিতার মুখে বর্তমান উপাচার্য শারফুদ্দিন আহমেদও পূর্ববর্তী উপাচার্যের মতো শেষ সিন্ডিকেট মিটিং করতে পারছেন না।
বিশ্ববিদ্যালয়ে এমন পরিস্থিতি সৃষ্টির পেছনের কারণ প্রসঙ্গে স্বাচিপ নেতা আরিফুল ইসলাম জোয়ারদার টিটো বলেন, এর আগের ভিসি (কনক কান্তি বড়ুয়া) শেষ সিন্ডিকেট মিটিং করে যেতে পারেননি। তখন এই ভিসিই (শারফুদ্দিন আহমেদ) তার পূর্বের ভিসিকে সিন্ডিকেট মিটিং করতে দেননি। ঐতিহ্যটাই এমন। পরবর্তী ভিসির নাম ঘোষণার পর রার্নিং ভিসি শুধু রুটিন কাজ করে যাবেন। এটাই চলে আসছে দীর্ঘদিন ধরে।তিনি বলেন, বিগত দিনের কোনো ভিসি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে সামগ্রিকভাবে বিদায় সংবর্ধনা পাননি। এর কারণ শেষ সময়ে তাদের কর্মকাণ্ড, যা আমাদের জন্য খুবই দুঃখজনক ও লজ্জাজনক।
বিএসএমএমইউয়ের নেফ্রোলজি বিভাগের সহকারী অধ্যাপক ডা. জাকির হোসেন সুমন বলেন, বর্তমান উপাচার্য নিয়োগ পাওয়ার পর থেকে তিনি কোনো নিয়ম নীতির তোয়াক্কা করেননি। এছাড়া বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন চালাতে গেলে প্রোভিসি, ট্রেজারার, ডীন এসব পদ গুরুত্বের সঙ্গে বিবেচনা করতে হয়। সেটা তিনি করেননি। পছন্দ মতো নিয়োগ দিয়ে শেষ সময়ে তাদের স্থায়ী করার চেষ্টা করেছেন, যা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাসে কালো অধ্যায় হয়ে থাকবে।
শেষ সময়ে এমন অস্থিরতা কারও ক্ষেত্রেই কাম্য নয়
বিশ্ববিদ্যালয়ের সার্বিক পরিস্থিতি নিয়ে কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক মোহাম্মাদ আতিকুর রহমান বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের উত্তপ্ত পরিস্থিতিতে গত কিছুদিন যাবৎ পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। ক্যাম্পাসের বর্তমান পরিবেশের জন্য কে বা কারা দায়ী সেটা বলবো না। শুধু এতটুকুই বরতে পারি, গত কয়েকবছরে নিয়োগ সংক্রান্ত নানা ঝামেলার কারণেই এমনটা হয়েছে।
তিনি বলেন, এখানে আমাদের কারও চেয়ারই স্থায়ী নয়। তাই প্রত্যেকেই সতর্কতার সঙ্গেই কাজ করা উচিৎ। বিশ্ববিদ্যালয় এমন অস্থিরতা কখনই কাম্য নয়। শেষ সময়ে রুটিন কাজই করা উচিত। নেতিবাচক কার্যক্রম হাতে নেওয়া উচিত নয়।এমন পরিস্থিতিতেও বিশ্ববিদ্যালয়ের কার্যক্রম থমকে নেই দাবি করে কোষাধ্যক্ষ আরও বলেন, আমরা অফিস করছি, রোগী দেখছি, শিক্ষা, গবেষণার কাজ সবই চলছে। কোনো কিছুই থেমে নেই। সাময়িক যে সমস্যা তৈরি হয়েছে, সেটিও আশা করছি দুয়েক দিনের মধ্যেই সমাধান হয়ে যাবে।
প্রক্টর অধ্যাপক ডা. মো. হাবিবুর রহমান দুলাল বলেন, ক্যাম্পাসে একজন ভিসি যাবেন, অন্য একজন আসবেন এটাই স্বাভাবিক। কিন্তু নতুন ভিসির নাম ঘোষণার পর থেকেই ক্যাম্পাসে পরিস্থিতি খারাপ হতে শুরু করেছে। এর অনেক কারণ আছে। এতো ব্যাখ্যা আমি দিতে পারবো না। তবে গত দেড় বছরে এই ভিসির (শারফুদ্দিন আহমেদ) আশেপাশে একটা সিন্ডিকেট তৈরি হয়েছে। তারা ক্ষমতার এমন অপব্যবহার করেছে, যাতে করে পুরো ক্যাম্পাসে একটা ক্ষোভ তৈরি হয়েছে।
তিনি বলেন, ভিসিকে কেন্দ্র করে এই সিন্ডিকেট করার জন্য অনেক বিতর্কিত নিয়োগ হয়েছে। এর কারণে ডাক্তার, নার্সসহ অনেকেই বিরক্ত ছিল।বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন সিন্ডিকেট ভাঙতে ব্যর্থ ছিল বলেও স্বীকার করেন বিএসএমএমইউ’র এই প্রক্টর।হাবিবুর রহমান দুলাল বলেন, বিশ্ববিদ্যালয় স্থবির হয়ে গেছে। নতুন ভিসি এসে স্থবিরতা কাটিয়ে উঠবেন বলে আশা করি। আমরা সবাই চাই বিশ্ববিদ্যালয় গতিশীল হোক।
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের অচলাবস্থা ও সার্বিক পরিস্থিতি নিয়ে উপাচার্য শারফুদ্দিন আহমেদের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলে তিনি শেষ সময়ে কিছুই বলতে চান না বলে জানান।তবে এর আগে বিশ্ববিদ্যালয়ে পুলিশ মোতায়ন প্রসঙ্গে তিনি জানিয়েছেন, ক্যাম্পাসে আর যাতে মারামারি না হয় এ জন্য পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। পুলিশ কবে সরানো হবে তা নির্ভর করছে পরিস্থিতির ওপর।
তিনি বলেন, আমরা একাডেমিক কাউন্সিলের একটি মিটিং করতে চেয়েছিলাম। সেখানে কিছু পরীক্ষার রেজাল্ট প্রকাশের কথা ছিল। এরমধ্যে কিছু চিকিৎসক এসে বলল এই মিটিং করার দরকার নেই। এর মধ্যেই বাইরে শুনি কিছু মানুষ হইহুল্লোর করছে। তারা চাচ্ছে যেহেতু আমার শেষ সময়, আমি যেন কোনো কিছু না করি। আমিও আমার শেষ সময়ে কোনো ধরনের ঝামেলায় জড়াতে চাই না, তাই আমি মিটিংটি স্থগিত করেছি।
চাকরি স্থায়ীকরণের লক্ষ্যে গোপনে কোনো ভাইভা নেওয়া হচ্ছিলো কিনা জানতে চাইলে বিদায়ী এই উপাচার্য বলেন, কোনো ধরনের ভাইভা নেওয়া হচ্ছিল না। তবে একটা পরীক্ষা নেওয়া হয়েছে, ফলাফল প্রকাশের কথা ছিল। যেহেতু এটা নিয়ে একটি পক্ষ আন্দোলন করছে এবং আমার সব কার্যক্রম বন্ধ করার দাবি জানিয়েছে, তাই আমিও সবকিছু বন্ধ করে দিয়েছি।