বিনোদন ডেস্ক:
অবসর কাকে বলে, তা হয়তো জানা নেই দিলশাদ নাহার কনার। সে কারণেই আমরা তাঁকে দেখি, দেশ-বিদেশে এক মঞ্চ থেকে আরেক মঞ্চে ক্রমাগত ছুটে যেতে। মঞ্চের ব্যস্ততা একটু কমলেই দেখি, তিনি মেতে উঠেছেন নতুন গানের আয়োজনে। অ্যালবাম যুগ থেকে শুরু করে অনলাইনে একক গানের প্রকাশনা শুরু পর্যন্ত তাঁর এই রুটিনের এতটুকু রদবদল হয়নি। পাশাপাশি ছিল সিনেমা, নাটক, অ্যালবাম, বিজ্ঞাপনের জিঙ্গেল থেকে শুরু করে রেডিও, টিভি সব মাধ্যমেই তাঁর সরব উপস্থিতি। সে কারণেই কান পাতলেই কোনো না কোনো জায়গা থেকে ভেসে আসে নন্দিত এই শিল্পীর কণ্ঠস্বর। অনুরাগীদের কণ্ঠেও হরহামেশা শুনতে পাওয়া যায় তাঁর গানগুলো। অনিন্দ্য কণ্ঠ আর অনবদ্য পরিবেশনা দিয়ে প্রায় সব শ্রেণির শ্রোতার মনোযোগ কেড়ে নেওয়ার সৌভাগ্য হয়েছে কনার।
সেই সুবাদে সময়ের অন্যতম ভার্সেটাইল কণ্ঠশিল্পী হিসেবে গড়ে উঠেছে পরিচিতি। তাই প্রতিনিয়ত তাঁর কাছে শ্রোতার নতুন গানের প্রত্যাশা করা অবান্তর মনে হয় না। কনারও তাই থেমে থাকার অবকাশ মেলে না। সুরের টানে ছুটতে হয় দিগ্বিদিক। তবু এই ব্যস্ত জীবন ভালো লাগে কনার। তিনি বলেন, ‘কর্মই জীবন’– গুণীজনদের এ কথাটা মনেপ্রাণে বিশ্বাস করি বলেই থেমে থাকতে চাই না। তার চেয়ে বড় কথা হলো, আমার কাছে শ্রোতার যে প্রত্যাশা, তা পূরণ করার একটা দায় অনুভব করি সবসময়। তাই যখন যে মাধ্যমে সুযোগ পাই, মনপ্রাণ উজাড় করে গেয়ে যাই। গানে গানে নতুন কিছু শেখারও চেষ্টা করি। একজন পরিণত শিল্পী হয়ে ওঠার বাসনা থেকেই সংগীতের প্রতিটি মাধ্যমে নিরলস কাজ করে যাচ্ছি।’ কনার এ কথা থেকে এটা তো বোঝা গেল যে, কতটা ব্যস্ত সময় পার করছেন। কিন্তু প্রশ্ন হলো, একের পর এক গান গেয়ে তিনি কি শুধু কাজের সংখ্যাই বাড়িয়ে যাচ্ছেন, নাকি সেখানে থাকছে সময়ের ছাপ?
এ প্রশ্ন মনে উঁকি দিতেই আমরা নজর দিলাম তাঁর সর্বশেষ কাজের তালিকায়। দেখা গেল, সংখ্যা বাড়ানোর তাগিদে সস্তা জনপ্রিয়তার স্রোতে আদৌ গা ভাসাননি এই কণ্ঠশিল্পী; বরং প্রতিটি আয়োজনে নিজেকে নতুনভাবে উপস্থাপন করেছেন। একই সঙ্গে গায়কীতে নিজেকে ভেঙে নতুনভাবে তুলে ধরার চেষ্টাও ছিল তাঁর। নিরীক্ষাধর্মী আয়োজন থেকেই পিছিয়ে আসেননি। এসব দেখে কনার কাছে জানতে চাওয়া হয়েছিল, শিল্পীজীবনের এই ব্যস্ত শিডিউল মেলান কীভাবে? এর উত্তর দিতে গিয়ে কনা হেসে বলেন, এ বিষয়টা আমার কাছেও এক রহস্য।
জানি না কীভাবে যেন সবকিছু ম্যানেজ করে ফেলি। কোথাও বেড়াতে গেলাম, তখনও অনুভব করি মনের মধ্যে সুরের খেলা চলছে। ঘরোয়া আড্ডাতেও ঘুরেফিরে চলে আসে গানের প্রসঙ্গ। আসলে যখন যা কিছুই করতে চাই, তার মধ্যে সংগীতের আবহ খুঁজে নেওয়ার চেষ্টা করি। যা থেকে প্রমাণ হয়, সংগীতের নেশায় আমি পুরোপুরি আসক্ত, সাত সুরের বন্ধন থেকে নিজেকে মুক্ত করা সম্ভব নয়। তাই প্রতিদিনের রুটিনে সিংহভাগ সময় সংগীতের দখলেই থেকে যায়; যার জন্য আলাদা করে শিডিউল তৈরি করতে হয় না। শুধু লিখে রাখা জরুরি কোনো কোথায় রেকর্ডিং, কবে কোথায় শো। আর এভাবেই আমি পাড়ি দিয়ে চলেছি, শিল্পীজীবনের পথ।’