সেন্ট্রাল হাসপাতালের পর এবার ইবনে সিনায় পায়ের অপারেশন করাতে এসে নারীর মৃত্যু: তদন্ত কমিটি গঠন
নিউজ পোস্ট বিডি নিউজ পোস্ট বিডি
নিউজ পোস্ট বিডি
নিজস্ব প্রতিবেদক:
রাজধানীর গ্রীন রোডের সেন্ট্রাল হাসপাতালে ভুল চিকিৎসা ও কর্তৃপক্ষের প্রতারণায় নবজাতকের মৃত্যুর পর মারা গেলেন মৃত্যুঝুঁকিতে পড়া শিশুটির মা মাহবুবা রহমান আঁখি।এবার রাজধানীর কল্যাণপুরে ইবনে সিনা মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালে পায়ের অপারেশন করাতে এসে পূরবী ঘোষ (৫৮) নামে এক নারীর মৃত্যু হয়েছে। আজ বুধবার (২১ জুন) দুপুরে এ ঘটনা ঘটে।
ঘটনা তদন্তে ৪ সদস্যের একটি কমিটি গঠন করেছে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ।
চিকিৎসায় অবহেলার অভিযোগ করে পূরবীর ছেলে সৌমিত্র ঘোষ ইমন বলেন, ১০ জুন বাসার বাথরুমে পড়ে গিয়ে আমার মায়ের পায়ে একাধিক ফাটল দেখা দেয়। ১৩ জুন কল্যাণপুরে ইবনে সিনা হাসপাতালে মায়ের পায়ে অপারেশন হয়। অপারেশনের একদিন পর থেকে তিনি নিস্তেজ হয়ে পড়ছিলেন। ভালোভাবে চিকিৎসার কোনও ব্যবস্থা নেয়নি হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। এমনকি গতকাল যখন তার অবস্থা খারাপের দিকে যাচ্ছে তখন ডিউটিরত চিকিৎসকরা আমাদের নানাভাবে আশ্বস্ত করার চেষ্টা করছিলেন। বারবার বলার পরও তারা গুরুত্ব দিচ্ছিলেন না। আজ সকালে হাসপাতালে আমার মায়ের মৃত্যু হয়।
ইমন আরও বলেন, মায়ের অপারেশন করেছিলেন ডা. শাহিদুর রহমান। তিনি হাসপাতালের অর্থোপেডিক বিভাগের চিকিৎসক।
অবস্থার অবনতি হলে ডা. শাহিদুর রহমান মাকে রেফার করেন মেডিসিন বিভাগে। সেখানে চিকিৎসকরা অবস্থার অবনতির বিষয়টি বুঝতে পেরে নিউরোসায়েন্স বিভাগে পাঠান। এরপর কোনও চিকিৎসা না দিয়ে নাকে নল লাগিয়ে ফেলে রাখা হয়।
হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের তদন্ত কমিটি
এদিকে, রোগী মৃত্যুর ঘটনা তদন্তে ৪ সদস্যের কমিটি গঠন করেছে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। বুধবার কমিটি গঠনের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন হাসপাতালটির পরিচালক (মেডিক্যাল সার্ভিসেস) ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) মো. পারভেজ কবির।
তিনি বলেন, ইবনে সিনা হাসপাতালের অর্থোপেডিক বিভাগের কনসালটেন্ট ডা. শাহিদুর রহমান খানের অধীনে ভর্তি হয়ে চিকিৎসাধীন রোগীর মৃত্যুর কারণ জানতে চার সদস্যের কমিটি গঠন করা হয়েছে।
কমিটির আহ্বায়ক প্রফেসর ডা. মো. ইদ্রিস আলীর নেতৃত্বে মেডিসিন বিভাগের অধ্যাপক ডাক্তার এ কে এম মাজহারুল ইসলাম, অ্যানেস্থেশিওলজি বিভাগের প্রফেসর ডা. সিরাজুল ইসলাম ও সিনিয়র সহকারী ম্যানেজার (অ্যাডমিন) মুহাম্মদ হাছানকে সদস্য করা হয়েছে। তারা আগামী দুই কর্মদিবসের মধ্যে তদন্ত করে কারও অবহেলার বিষয় থাকলে সেটি খতিয়ে দেখবেন। আমরা চাই না ভবিষ্যতে এমন ঘটনা আবার ঘটুক।
রোগীর মৃত্যুর কারণ সম্পর্কে কোনও তথ্য দিতে না পারলেও পরিচালক পারভেজ কবির বলেন, এই ঘটনায় আমরা দুঃখ প্রকাশ করছি। এখনই মৃত্যুর সঠিক কারণ বলা যাচ্ছে না। তবে ইতোমধ্যে তদন্ত শুরু হয়েছে। এই রোগীর সংশ্লিষ্ট সব ডাক্তার ও নার্সদের তদন্তের মুখোমুখি করা হবে। কারও দায় পেলে পরবর্তীকালে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। তবে রোগীর আগে থেকেই একটি ব্রেনস্ট্রোকসহ বেশ কিছু সমস্যা ছিল।