সৈকতের ভাঙা জেটির অপসারণ চেয়ে ২ মন্ত্রণালয়ে বেলার চিঠি

প্রকাশিত: ১১:১৩ পূর্বাহ্ণ, অক্টোবর ৩১, ২০২৪

কক্সবাজার প্রতিনিধি:

কক্সবাজারের উখিয়ার ইনানী সমুদ্র সৈকতকে দুইভাগ করে নির্মিত জেটি উচ্ছেদ করতে পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তনবিষয়ক মন্ত্রাণালয়, প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের সচিবসহ আট কর্মকর্তাকে চিঠি দিয়েছে বাংলাদেশ পরিবেশ আইনবিদ সমিতি (বেলা)।

অপর ছয় কর্মকর্তারা হলেন- বাংলাদেশ নৌবাহিনী প্রধান, পরিবেশ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক, কক্সবাজারের জেলা প্রশাসক, নৌবাহিনীর সদর দপ্তরের পরিচালক (অপারেশন শাখা), চট্টগ্রাম নৌ অঞ্চলের কমান্ডার ও নেভাল ইউনিট (ফরওয়ার্ড বেস) কক্সবাজারের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা।
২৯ অক্টোবর রেজিস্ট্রি ডাকযোগে এই চিঠি পাঠান বেলা ও সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী এস হাসানুল বান্না। চিঠিতে বলা হয়, কক্সবাজার থেকে টেকনাফ পর্যন্ত সমুদ্র সৈকতের ১০ হাজার ৪৬৫ হেক্টর এলাকার প্রাণবৈচিত্র্য, নির্মল জলরাশি এবং পরিবেশ ও প্রতিবেশ রক্ষার জন্য সরকার ১৯৯৯ সালে এই এলাকাকে প্রতিবেশ সংকটাপন্ন এলাকা (ইসিএ) ঘোষণা করে। যেখানে সব ধরনের স্থাপনা-অবকাঠামো নির্মাণ নিষিদ্ধ। ২০১৮ সালের ৯ ডিসেম্বর সিভিল রিভিউ পিটিশন রায়ে প্রতিবেশ সংকটাপন্ন এলাকায় (ইসিএ) সব ধরনের স্থাপনা নির্মাণ নিষিদ্ধ করেন আপিল বিভাগ।

চিঠিতে আরও বলা হয়, আদালতের আদেশ ও আইনি বিধান লঙ্ঘন করে ২০২০ সালে সমুদ্রসৈকত দ্বিখণ্ডিত করে ইনানী সৈকতে প্রতিবেশগত সংকটাপন্ন এলাকায় এই জেটি নির্মাণ করা হয়। জেটি নির্মাণ করতে গিয়ে পরিবেশ অধিদপ্তরের অনুমোদনও নেওয়া হয়নি। অস্থায়ীভাবে নির্মিত জেটিটি অপসারণের কথা থাকলেও তা আর অপসারণ করা হয়নি। ২৪ অক্টোবর ঘূর্ণিঝড় দানার আঘাতে জেটিটির মধ্যভাগের একটি অংশ ভেঙে পড়েছে।
বিষয়টি নিশ্চিত করে আইনজীবী এস হাসানুল বান্না বলেন, কক্সবাজার সৈকতের প্রতিবেশগত ও সংকটাপণ্য এলাকায় এভাবে জেটি নির্মাণের কোনো সুযোগ নেই।

এদিকে সম্প্রতি অন্তর্র্বতী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা বরাবর স্মারকলিপি পাঠিয়ে অবৈধ জেটিটি উচ্ছেদ এবং জেটি দিয়ে প্রবাল সমৃদ্ধ দ্বীপ সেন্টমার্টিনে পর্যটকবাহী জাহাজ চলাচল বন্ধের দাবি জানিয়েছে
ইয়ুথ এনভায়রনমেন্ট সোসাইটি (ইয়েস) কক্সবাজার ও বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলন (বাপা)। জেলা প্রশাসকের মাধ্যমে এই স্মারকলিপি পাঠানো হয়।

স্মারকলিপিতে বলা হয়, কক্সবাজার সমুদ্রসৈকত পৃথিবীর দীর্ঘতম অবিচ্ছিন্ন সমুদ্রসৈকত। এটি বাংলাদেশি প্রত্যেক মানুষের গর্বের ঐতিহ্য। অথচ প্রতিবেশ সংকটাপন্ন এই সৈকতকে দ্বিখণ্ডিত করে ২০২১ সালে ইনানী সৈকতে অপরিকল্পিতভাবে একটি স্থায়ী জেটি নির্মাণ করা হয়। গত বছর থেকে এই জেটি ব্যবহার করে সেন্টমার্টিনে পর্যটক পারাপারের জন্য একজন প্রভাবশালী জাহাজ মালিককে সুযোগ দেওয়া হয়।

এনভায়রনমেন্ট সোসাইটি (ইয়েস) কক্সবাজারের ভাইস চেয়ারম্যান ওসমান গণি বলেন, জেটি নির্মাণ করায় সৈকতে পর্যটকের সমাগম বৃদ্ধি এবং যানবাহনের চলাচল শুরু হওয়ায় বালুচরে লাল কাঁকড়ার বিচরণ, বিলুপ্ত প্রজাতি কচ্ছপের ডিম পাড়ার জায়গা এবং ডলফিন ও সাদা ডলফিনের বিচরণ ক্ষেত্র সংকুচিত হয়ে পড়েছে।